মার সরকার নওগাঁঃ
আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদীর প্রয়াণ দিবস। কিছু মানুষের জন্মই হয় শিল্পী হওয়ার জন্য। এত ঠিক সে রকম একজন মানুষ ছিলেন হুমায়ুন ফরীদি। তিনি শিল্পী হয়েই জন্মেছিলেন। একটা সাধারণ জিনিস কীভাবে অসাধারণ করে ফুটিয়ে তুলতে হয় সেটা জানতেন ফরীদি।
হুমায়ুন ফরীদি ভীষণ ভালো কৌতুক বলতেন। যেখানেই যেতেন, সব সময়ই বন্ধু ও কলিগদের মাতিয়ে রাখতেন। কৌতুক ছিল তার জীবনের একটা অন্যতম অংশ। তাই যেকোনো মুহুর্তে যেকোনো বিষয় নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে কৌতুক করতে পারতেন তিনি।মঞ্চ, টেলিভিশন ও সিনেমায় আলোড়ন তোলা এই অভিনেতা অসাধারণ সব চরিত্রে সাবলীল অভিনয়ের মাধ্যমে সব শ্রেণির দর্শকের কাছে অধিক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।বাংলা সিনেমায় খলনায়কের ভূমিকায় তিনি ছিলেন অসাধারণ। একটা সময় ছিল যখন টিভি নাটক মানেই হুমায়ুন ফরীদি। বাংগালী পরিবারের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম টিভি নাটক দেখতে বসে উন্মুখ হয়ে থাকতো কখন হুমায়ুন ফরিদীকে দেখা যাবে।
একটা সময় তো সিনেমাপ্রেমী মানুষ গুলো শুধু হুমায়ুন ফরীদির অভিনয় দেখতেই হলে যেতেন। সেই হুমায়ুন ফরীদি ২০০৩ সাল থেকে সিনেমাতে অভিনয় প্রায়ই ছেড়ে দিয়েছিলেন
অথচ ১৯৮৫ সালের দিকে ফরীদি অনুধাবন করেন তিনি আসলে অভিনয় ছাড়া আর কিছু করতে পারবেন না। অন্য কিছু থেকে রোজগার করে জীবন নির্বাহ করা সম্ভব নয়।
তার একমাত্র অবলম্ব্বন কিংবা পুঁজি হচ্ছে অভিনয়। মঞ্চ নাটক থেকে টিভি নাটকে অভিনয় করতে করতে অনেকটা বড় পর্দার প্রতি দুর্বলতা থেকেই ১৯৯০ সাল থেকে শুরু করেন চলচ্চিত্রে যাত্রা।
ফরীদির ভাষায়, আমার চলচ্চিত্র অভিনয়টাকে যে যাই বলুক না কেন, ওটা না করলে আমি বাঁচতে পারতাম না। তখন ফরীদি চলচ্চিত্রে কাজ না করলে হয়তো যাত্রা দলে ভিড়ে যেতেন- এমন প্রস্তুতিও ছিল তার মধ্যে।২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি আমরা তাকে হারিয়েছি চিরতরে। কিন্তু দুর্দান্ত নানা কর্ম আর তার অসাধারণ সব সৃষ্টিতে তিনি আছেন চির অমলিন হয়ে। তার দাপুটে অভিনয় তাকে বাঁচিয়ে রাখবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে।এভাবেই ১৩ই ফেব্রুয়ারী এলেই ফাগুনের আগমনী সুরে ফরীদির মৃত্যুবার্ষিকী করুণ সুর বেজে উঠে ।নাটক, সিনেমা প্রত্যেক ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন সফলতার শীর্ষে। নায়ক, ভিলেন বা কমেডি যে চরিত্রই করুন না কেন সেটাকে অভিনয় মনে হয়নি, এতটাই সাবলীল ছিল তার পর্দায় উপস্থিতি। বাস্তব জীবনেও সাবলীল ছিলেন তিনি। বাস্তবতার সঙ্গে সহজে মানিয়ে নিতে পারতেন। মানুষের মাঝে ভালো-খারাপ সবই থাকে। ফরীদির মাঝে অনেক ভালো গুণ ছিল, যা অনুকরণীয়। আজ তাঁর প্রয়ান দিবসে জানাই গভীর শ্রদ্ধা।