ঢাকা ০৬:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
পানি নিষ্কাশনে ইউএনও,র প্রাণপণ চেষ্টা অব্যহত তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন আবারও পানিবন্ধী বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ সঃ কে কটুক্তির প্রতিবাদে রূপসা বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে জামায়াত ইসলামীর যুব ইউনিয়ন টিমের সম্মেলন অনুষ্ঠিত নওগাঁয় বিশাল কর্মযজ্ঞে মধ্যেদিয়ে স্বর্ণের মত দেখতে পিতলের গহনা হাতের চুড়ি বলা তৈরী হচ্ছে কালিগঞ্জের দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নে জামায়াতের উদ্যোগে যুব সমাবেশ অনুষ্ঠিত নওগাঁ জেলা পুলিশের আয়োজনে বিশেষ কল্যাণ সভা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে অচাষকৃত শাকের রান্না প্রতিযোগিতা শ্যামনগরে নকশীকাঁথার আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস পালিত সিলেট রেঞ্জ ডিআইজির সুনামগঞ্জ জেলা ডিএসবি ও হিসাব শাখা পরিদর্শন কালিগঞ্জে রায়পুর নিজদেবপুর উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ

পানি নিষ্কাশনে ইউএনও,র প্রাণপণ চেষ্টা অব্যহত তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন আবারও পানিবন্ধী

  • Sound Of Community
  • পোস্ট করা হয়েছে : ০৭:৫৫:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪
  • ১৫ জন পড়েছেন ।

এম এ মান্নান

টানা বৃষ্টিপাত ও পাশ্ববর্তি এলাকার পানি তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের ১৭ টি গ্রামই পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার পর পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও পুনরায় মুষলধারা বৃষ্টিতে আবারও পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে গোটা ইউনিয়ন। এতেকরে প্রতিটি বাড়ি-ঘরের উঠানে পানি প্রবেশ করে পুনরায় পানিবন্ধী হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজারের এর অধিক পরিবার। বিপাকে পড়েছে দিনমজুর ও খাদ্য সংকটে প্রাণীকুল। সবজিসহ সকল ধরনের কৃষি ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে নিরালস  কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন।

তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে,এই ইউনিয়নটি ১৭ টি গ্রাম নিয়ে গঠিত। আর পানিতে প্লাবিত হয়েছে ১৭ টি গ্রামই। কৃষকদের ফসল পানির নিচে থাকায় পচন ধরে নষ্ট হয়ে গেছে।বিশেষ করে টানা বর্ষণের ফলে তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের মধ্যে বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিরাশুনী,লাউতাড়া, পাঁচরোখি,সুভাশুনী, মদনপুর,সুমজদিপুর,দেওয়ানী পাড়া গ্রাম। সকল এলাকার ধানও সবজি পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষের জীবন খুব সংকটময় পরিস্থিতিতে দিনাতিপাত করছে। আগামীতে অবধারিত খাদ্য সংকটে পড়বে তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন সহ তালা উপজেলা। ইতিমধ্য বন্যা দূগর্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ প্রনোদনা বিতরন করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক ও সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব। এছাড়া বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামী পক্ষ থেকে ও ত্রাণ বিতরন করা হয়।

পাঁচরোখি গ্রামে শেখ আব্দুস ছাত্তার, মদনপুর গ্রামের আব্দুল খালেক, সুমজদিপুর গ্রামের সুবাসী দাশ,শিরাশুনী গ্রামের মোমিন শেখ, আসমা বেগম জানান, তাঁরা প্রায় দুই মাস পানিবন্ধী। তাদের বাথরুমে যাওয়া,রান্না করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। একইসাথে চারিদিকে পানি থাকায় মারাত্নক ভাবে বিষধর সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। পাঁচরোখী গ্রামের শেখ আব্দুস ছাত্তার বাড়ি হতে ইতিমধ্য দুটি পদ্মগোখরা সাপ পিটিয়ে মারা হয়েছে। ভদ্র নদীর পুনঃখনন ছাড়া এই অঞ্চলের পানি নিষ্কাশন সম্ভব না। তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন সহ তালা উপজেলা সকল মৎস্য ঘের ভেসে গেছে। ঘেরের ভেড়ির বাঁধের উপর সকল প্রকারের সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। পাশাপাশি আমন ধান, কৃষকদের সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ফলে নষ্ট হয়ে গেছে। এর ফলে মাছ,সবজি,চাউলের বাজার দাম দিন মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাহিরে চলে যাচ্ছে। পানিবন্ধীরা আরও জানান, আমরা ত্রান চাই না আমারা চাই পানি নিষ্কাশনের স্থায়ী ব্যাবস্থা।

এমন পরিস্থিতির মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, এই এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য সাধারণত যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার ভদ্রা নদী দিয়ে পানি সরবরাহ করতো। বর্তমানে ঐ এলাকার নননিয়া সুইস গেট পলিমাটিতে উঁচু হয়ে পানি নিষ্কাশনে বাঁধাগ্রস্ত হওয়ায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে গ্রামঞ্চলের রাস্তা,বাড়ি-ঘর,মৎস্য ঘের প্লাবিত হচ্ছে। খাল ও নদীর তলদেশ বর্তমানে নননিয়া খালের সুইস গেট এর উপর চার পাঁচ ফুট পানি। তিনি আরও বলেন, যদি বৃষ্টিপাত না হয় তাহলেও এই ইউনিয়নে আগামী ৩-৪ মাস পানিবন্ধী থাকবে। ফলে চৈত্র মাসের ইরি ধান চাষ করা সম্ভব হবে না।

ইতিমধ্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রশাসক শেখ মোঃ রাসেল ও উপজেলা সহকারী কমিশনরার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল আমিন তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের পানিবন্ধী এলাকা পরিদর্শন ও ভদ্রা নদী নননিয় খালের সুইচ গেট পরিদর্শন ও নওয়াপাড়া হতে গোপালপুর সুইচ গেট পর্যন্ত পরিদর্শন করেছেন। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের স¦ার্থে গোপালপুর সুইচ গেটে দু,পাশে জমে থাকা পলি অপসারণ করতে ভাসমান স্কেভেটর ও স্কেভেটর দিয়ে পলি অপসারণ কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে। কিন্তু ভদ্রা ও নননিয়া খালে পলি জমে থাকায় ধীর গতিতে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। ফলে তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন সহ কেশবপুর এলাকার কয়েকটি গ্রাম পানিবন্ধী গ্রামের মানুষেরা নিদারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করছে। একই সাথে পশু খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রশাসক শেখ মোঃ রাসেল জানান, তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের পানি নিষ্কাশনের জন্য যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার নননিয়া সুইচ গেট এলাকায় পলি মাটি অপসারণের জন্য তিন-চরাটি স্কেভেটর দিয়ে কাজ চলমান আছে। তবে প্রকৃতপক্ষে এটি যোক্তিক কোন সমাধান নয়। এর স্থায়ী সমাধানের জন্য পানি উন্নয়ন র্বোডকে প্রকল্প গ্রহন করে নননিয়া খাল,ভদ্রা নদী প্রশস্ত করে পুনঃখনন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আশু পানি নামাতে বিকল্প পথ হিসাবে দধিসারা বিল দিয়ে শালতা নদীতে পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

Tag :
রিপোর্টার সম্পর্কে

Sound Of Community

জনপ্রিয় সংবাদ

পানি নিষ্কাশনে ইউএনও,র প্রাণপণ চেষ্টা অব্যহত তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন আবারও পানিবন্ধী

পানি নিষ্কাশনে ইউএনও,র প্রাণপণ চেষ্টা অব্যহত তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন আবারও পানিবন্ধী

পোস্ট করা হয়েছে : ০৭:৫৫:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

এম এ মান্নান

টানা বৃষ্টিপাত ও পাশ্ববর্তি এলাকার পানি তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের ১৭ টি গ্রামই পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার পর পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও পুনরায় মুষলধারা বৃষ্টিতে আবারও পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে গোটা ইউনিয়ন। এতেকরে প্রতিটি বাড়ি-ঘরের উঠানে পানি প্রবেশ করে পুনরায় পানিবন্ধী হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজারের এর অধিক পরিবার। বিপাকে পড়েছে দিনমজুর ও খাদ্য সংকটে প্রাণীকুল। সবজিসহ সকল ধরনের কৃষি ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে নিরালস  কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন।

তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে,এই ইউনিয়নটি ১৭ টি গ্রাম নিয়ে গঠিত। আর পানিতে প্লাবিত হয়েছে ১৭ টি গ্রামই। কৃষকদের ফসল পানির নিচে থাকায় পচন ধরে নষ্ট হয়ে গেছে।বিশেষ করে টানা বর্ষণের ফলে তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের মধ্যে বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিরাশুনী,লাউতাড়া, পাঁচরোখি,সুভাশুনী, মদনপুর,সুমজদিপুর,দেওয়ানী পাড়া গ্রাম। সকল এলাকার ধানও সবজি পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষের জীবন খুব সংকটময় পরিস্থিতিতে দিনাতিপাত করছে। আগামীতে অবধারিত খাদ্য সংকটে পড়বে তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন সহ তালা উপজেলা। ইতিমধ্য বন্যা দূগর্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ প্রনোদনা বিতরন করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক ও সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব। এছাড়া বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামী পক্ষ থেকে ও ত্রাণ বিতরন করা হয়।

পাঁচরোখি গ্রামে শেখ আব্দুস ছাত্তার, মদনপুর গ্রামের আব্দুল খালেক, সুমজদিপুর গ্রামের সুবাসী দাশ,শিরাশুনী গ্রামের মোমিন শেখ, আসমা বেগম জানান, তাঁরা প্রায় দুই মাস পানিবন্ধী। তাদের বাথরুমে যাওয়া,রান্না করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। একইসাথে চারিদিকে পানি থাকায় মারাত্নক ভাবে বিষধর সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। পাঁচরোখী গ্রামের শেখ আব্দুস ছাত্তার বাড়ি হতে ইতিমধ্য দুটি পদ্মগোখরা সাপ পিটিয়ে মারা হয়েছে। ভদ্র নদীর পুনঃখনন ছাড়া এই অঞ্চলের পানি নিষ্কাশন সম্ভব না। তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন সহ তালা উপজেলা সকল মৎস্য ঘের ভেসে গেছে। ঘেরের ভেড়ির বাঁধের উপর সকল প্রকারের সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। পাশাপাশি আমন ধান, কৃষকদের সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ফলে নষ্ট হয়ে গেছে। এর ফলে মাছ,সবজি,চাউলের বাজার দাম দিন মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাহিরে চলে যাচ্ছে। পানিবন্ধীরা আরও জানান, আমরা ত্রান চাই না আমারা চাই পানি নিষ্কাশনের স্থায়ী ব্যাবস্থা।

এমন পরিস্থিতির মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, এই এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য সাধারণত যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার ভদ্রা নদী দিয়ে পানি সরবরাহ করতো। বর্তমানে ঐ এলাকার নননিয়া সুইস গেট পলিমাটিতে উঁচু হয়ে পানি নিষ্কাশনে বাঁধাগ্রস্ত হওয়ায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে গ্রামঞ্চলের রাস্তা,বাড়ি-ঘর,মৎস্য ঘের প্লাবিত হচ্ছে। খাল ও নদীর তলদেশ বর্তমানে নননিয়া খালের সুইস গেট এর উপর চার পাঁচ ফুট পানি। তিনি আরও বলেন, যদি বৃষ্টিপাত না হয় তাহলেও এই ইউনিয়নে আগামী ৩-৪ মাস পানিবন্ধী থাকবে। ফলে চৈত্র মাসের ইরি ধান চাষ করা সম্ভব হবে না।

ইতিমধ্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রশাসক শেখ মোঃ রাসেল ও উপজেলা সহকারী কমিশনরার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল আমিন তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের পানিবন্ধী এলাকা পরিদর্শন ও ভদ্রা নদী নননিয় খালের সুইচ গেট পরিদর্শন ও নওয়াপাড়া হতে গোপালপুর সুইচ গেট পর্যন্ত পরিদর্শন করেছেন। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের স¦ার্থে গোপালপুর সুইচ গেটে দু,পাশে জমে থাকা পলি অপসারণ করতে ভাসমান স্কেভেটর ও স্কেভেটর দিয়ে পলি অপসারণ কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে। কিন্তু ভদ্রা ও নননিয়া খালে পলি জমে থাকায় ধীর গতিতে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। ফলে তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন সহ কেশবপুর এলাকার কয়েকটি গ্রাম পানিবন্ধী গ্রামের মানুষেরা নিদারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করছে। একই সাথে পশু খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রশাসক শেখ মোঃ রাসেল জানান, তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের পানি নিষ্কাশনের জন্য যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার নননিয়া সুইচ গেট এলাকায় পলি মাটি অপসারণের জন্য তিন-চরাটি স্কেভেটর দিয়ে কাজ চলমান আছে। তবে প্রকৃতপক্ষে এটি যোক্তিক কোন সমাধান নয়। এর স্থায়ী সমাধানের জন্য পানি উন্নয়ন র্বোডকে প্রকল্প গ্রহন করে নননিয়া খাল,ভদ্রা নদী প্রশস্ত করে পুনঃখনন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আশু পানি নামাতে বিকল্প পথ হিসাবে দধিসারা বিল দিয়ে শালতা নদীতে পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।