বেডিদের এ কেমন ব্যাডাগিরি !
(মতামত লেখকের নিজস্ব এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়)
ব্যাডাগিরি সব সময় যে পুরুষের মধ্যেই থাকে তা নয়। নারীর আচরণ, কাজকর্মের মধ্যেও কখনো কখনো পিতৃতান্ত্রিক ব্যাডাগিরি থাকে। বরং এটাই এখন চলছে। বাড়িতে শাসন করলেও ব্যাডারা ফেসে যায়। বেডিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেও ব্যাডারা ফেসে যায়। রাস্তায় ক্ষমা চাইলেও ব্যাডারা ফেসে যায়। ব্যাডারা যাবে কোথায়?
মানুষ ভুল করতেই পারে। দিশেহারা প্রবল রৌদ্রে একজন রিক্সাচালক রিক্সা চলাতে গিয়ে ভুল করে একজন পথচারী নারী আইনজীবীর গায়ে রিক্সা লেগে গিয়েছিল। পরক্ষণে রিক্সা চালক নেমে এসে হাত জোর করে অনবরত ক্ষমা চেয়েই যাচ্ছেন। আর নারী আইনজীবী তাকে আঘাত করেই যাচ্ছেন ।
হ্যা। নারীরা পথেঘাটে চলতে গিয়ে প্রায়ই অযাচিত স্পর্শের শিকার হয়, শোনা যায়, আশপাশ থেকে ভেসে আসা বিকৃত টোন। কখনো কখনো রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় সাইকেল, রিক্সা, অটো ইচ্ছে করেই গায়ে লাগিয়ে দিয়ে চলে যায় চালক। কিন্তু সহজাতভাবেই বুঝা যায় না, কোন স্পর্শ ইচ্ছাকৃত, আর কোনটা ভুলবশত করা। তবে বিষয়টা বুঝার প্রয়োজন আছে।
একজন অসহায় গরীব মানুষ যখন ভুল করে বারবার হাতজোড় করে ক্ষমা চাইছেন, তখন তাকে ক্ষমা করতে না পারলেও একের পর এক আঘাত করে আহত করাকে চরম অমানবিক আর নিষ্ঠুর আচরণ বলে মনে হয়েছে। মনে হয়েছে দুর্বলের উপর সবলের উৎপীড়ন। চরম ব্যাডাগিরি। ব্যাডাগিরি নারী কিংবা পুরুষ যার মধ্যেই থাকুক সেটাকে সমর্থন করার কিছু নেই।
মনে রাখা জরুরি, নিপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে গিয়ে আমরা নিজেরাই যেন আরও বড় নিপীড়ক, দানব না হয়ে উঠি।
রবিবার দুপুরে যশোরে প্রকাশ্যে এক রিকশাচালককে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় রিকশাচালকের কলার ধরে চড়থাপ্পর মারছেন একজন আইনজীবী। যশোর আদালতের সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সড়কে এই ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত আইনজীবীর নাম আরতি রানী ঘোষ। তিনি যশোর শহরের আম্বিকা বসু লেনের বাসিন্দা।
আমি লজ্জিত, আমি একজন পুরুষ
আমরাও শাসিত হই। কখন ঘরে,কখনও বাইরে।
–আব্দুর রহিম, সাংবাদিক।
দৈনিক ‘আমাদের অর্থনীতি’