মাসুমবিল্লাহ ২৪ পরগনা ভারত

৮৫ নম্বর বি এস অফ ব্যাটেলিয়ানের উদ্যোগে বরুণ ক্যাম্পে সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত হলো সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সমাজসেবার একটি মহতী অনুষ্ঠান । সকলের ধারণা বিএসএফ মানে শুধু সীমান্ত রক্ষা করা। কিন্তু এই সকল ধারণার ঊর্ধ্বে উঠে বিএসএফ যে সমাজ কল্যাণমূলক কাজকর্ম করে এই অনুষ্ঠান তার প্রমাণ। সীমান্ত সুরক্ষা বলের ৮৫ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাংলাদেশ সীমান্তের বরুণ ক্যাম্পে অনুষ্ঠিত হলো সিভিক অ্যাকশন প্রোগ্রাম-২০২৩। জয়গ্রাম সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির ৫৫ জন প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের এবং নবদিশা একাডেমি স্কুল, দক্ষিণ বারুনহাট অফ পি স্কুল,বারুনহাট জুনিয়র বেসিক ও মধ্য বারুনহাট অফ পি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের হাতে স্কুল ব্যাগ,টি এল এম,খাতা -পেন,ড্রইং কিড, ছাতা ,চেয়ার -টেবিল,কেরাম বোর্ড,মিড ডে মিলের রান্নার সরঞ্জাম,সিলিং ফ্যান ,দেয়াল ঘড়ি ও ট্রাই সাইকেল, সিনট্যাক্স এর ওয়াটার ট্যাঙ্কসহ বাচ্চাদের খেলা সরঞ্জাম, ইত্যাদি তুলে দেন।

এই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য হলো সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসকারী গ্রামের মানুষের সঙ্গে বিএসএফের একটি বোঝাপড়া ও নিবিড় ভালো বাসার সম্পর্ক তৈরি করা। যার মাধ্যমে বিএসএফ এবং সাধারন মানুষের মধ্যে একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ বোঝাপড়া তৈরি হয়,যাতে প্রতিবেশী দেশের মধ্যে আমাদের একটি সুসম্পর্ক তৈরি হয় এবং অবৈধ বা চোরাচালান কাজকারবার বন্ধ হয়।
সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর ৮৫ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কমান্ড্যান্ট কে কে শর্মা বলেন যে, পৃথিবীর বৃহত্তম সীমান্ত সুরক্ষা দল হল বিএসএফ। ভারতবর্ষের প্রতিটি রাজ্য থেকে মানুষ এই দলের মধ্যে আছেন তাদের পরিবার ,সন্তান-সন্ততি সকলকে ত্যাগ করে।প্রতিটি মানুষ আয় করে তার পরিবারের সাথে সুখে শান্তিতে কাটানোর জন্য।অথচ ভাবতে অবাক লাগে যে এরা পরিবারের সমস্ত কিছু উপেক্ষা করে ,এমনকি বিপদ-আপদেও পরিবারের সঙ্গে এরা থাকতে পারে না, তারপরেও এরা দেশমাতৃকার সেবায় এবং ভারতের প্রতিটি মানুষের জীবন সুরক্ষার জন্য জীবন পাত করে ২৪ ঘন্টা কর্তব্য পালন করছে।আপনি কি মনে করেন, এটা কি শুধু আয়ের জন্য একটি সেবা? না দেশ সেবা।ভারতের প্রতিটি নাগরিককে এদের সম্পর্কে সদর্থক মনোভাব নিয়ে ভাবতে হবে,এবং একটি বোঝাপড়ার বাতাবরণ তৈরি করে উভয়ের সম্পর্কের মধ্য দিয়ে দেশকে সুরক্ষা দিতে হবে।তবেই আমাদের দেশ ভারতবর্ষ হবে “সারে জাহা সে আচ্ছা হিন্দুস্তান হ্যায় হামারা”।উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ ব্লকের সভাপতি আমিরুল ইসলাম সাহেব এবং বরুনহাট ও রামেশ্বরপুর অঞ্চলের প্রধান সাহেব আব্দুল কালাম উভয়ে কেন্দ্র সরকারের এই উদ্যোগে বিএসএফের ভূমিকার ভুয়োসী প্রশংসা করেন।অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যান্য তিনটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহ জয়গ্রাম সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির ফাউন্ডার সেক্রেটারি, ৮৫ নম্বর ব্যাটেলিয়নের ডেপুটি কমান্ডেন্ট কে কে শর্মা ,ডেপুটি কমান্ডেন্ট রবীন্দ্র রাম,অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ড্যান্ট সুনীল কুমার সিং, এবং ওই ব্যাটেলিয়ানের ইন্সপেক্টর অশোক কুমার গুপ্তা, মোহাম্মদ জুলফিক্কার রহমান, আনন্দ কুমার স্যারের উদ্যোগের ভুয়োসী প্রশংসা করেন। এই অনুষ্ঠানে বিশেষ আকর্ষণ ছিল ৮৫ নম্বর ব্যাটেলিয়নের ডেপুটি কমান্ডেন্ট কে কে শর্মা স্যারের হাতে প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের দ্বারা তৈরি ও বিভিন্ন ডিজাইন করা মাটির প্রদীপ প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীরা তুলে দেন দীপাবলির অগ্রিম শুভেচ্ছা বার্তা হিসাবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, আমন্ত্রিত তিনটি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী সহ প্রধান শিক্ষক মহাশয় এবং জয়গ্রাম সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির দ্বারা পরিচালিত প্রতিবন্ধী স্কুল “জ্ঞানপদী প্রতিবন্ধী আশ্রম এন্ড স্কুলের” প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া সুলতানা ও প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীসহ, সভাপতি নীরেশ কুমার বৈদ্য,সদর্শ্য ডক্টর রশিদ গাজী ও বিএসএফের শতাধিক বীর জওয়ান ।সমগ্র অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন জয় গ্রাম সোশ্যাল সোসাইটির এক্সিকিউটিভ সদস্য অনুপ কুমার মন্ডল।