অরবিন্দ মৃধা
বাঙালি সনাতনী হিন্দুগণের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা।
অাসুরিক অসুভ শক্তি দমন করে শুভ তথা কল্যাণকর শক্তি ও শান্তি স্থাপনের উদ্দেশ্যে প্রাচীন যুগ থেকেই মানুষের বিশ্বাস ও প্রতিবাদী চেতনার প্রতিফলন রূপে এই পূজার প্রচলন হয়েছে।
শ্রীশ্রী চণ্ডীর বর্ণনা অনুযায়ী মেধস্ মুনি’র পরামর্শে রাজ্য হারা রাজা সুরথ এবং সংসার ত্যাগী বৈশ্য সমাধি নামক বঞ্চিত বনচারী দু’ব্যক্তিকে মহামায়া রূপি দেবী দুর্গার পূজা/আরাধনা করান পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী তাঁরা
মাটির দূর্গা নির্মাণ করে বিধি মাফিক পূজা সম্পন্ন করত: বেতশা নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে
সিদ্ধিলাভ করেন। চণ্ডীগ্রন্থের বর্ণনা মতে এই কাহিনি বিভিন্ন মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছানোর পর থেকেই দেবী দূর্গার পূজা বা আরাধনা আরম্ভ হয়। আমরা জেনেছি রামায়ণ,মহাভারতের যুগে রামচন্দ্র এবং অর্জুন শক্তি সঞ্চারের আশায় দূর্গা পূজা করেছিলেন। এ সব বিশ্বাসের
আলোকে বাঙালি সমাজে কালে কালে দূর্গা পূজার প্রচলন হয়েছে।
শ্রীশ্রী চণ্ডি গ্রন্থে ইল্লেখ আছে,’
” মেধাস্ত কথায়ামাস সুরথায়:সমাধয়ে:
সা কথা কথিতা পশ্চাৎ মার্কণ্ডেয়েন ভাগুরৌ।।”
এই মেধস্ মুনির আশ্রমের অবস্থান বাংলাদেশের চট্রগ্রাম জেলার করালডাঙাস্থ সন্যাসী পাহাড়ে। এখানে আছে শ্রীশ্রী দূর্গামন্দির। পাশেই আছে মার্কণ্ডেয় কুণ্ডু এবং মার্কণ্ডেয় মুনির ধ্যানের আসন। তাই বলা হয়েছে দূর্গা পূজার উৎপত্তি বাংলাদেশে।
বাংলার সংস্কৃতিতে দেবী দূর্গাকে কেন্দ্র করে উপখ্যান শিল্পায়ন, পূজা,পালা,পার্বণ যা কিছু কালে কালে সৃষ্টি হয়েছে সবই বাঙালি জাতির নিজস্ব শিল্প,স্বকীয়তা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী চেতনার প্রতিফলন। এটি বাঙালির একান্তই নিজস্ব সংস্কৃতি।