মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি
কিশোর কবি লতিফুর রহমান
হঠাৎই গ্রাম থেকে বাবার একটি পত্র এলো
বাবা পত্রে লিখেছিল,
খোকা তুই কবে আসবি কবে তোর দেখা পাব?
আমি বাবাকে একখানা পত্র লিখে বললাম,
বাবা, আমার এখন বাসায় ফেরা হবে না।
সবই তো জানো!
বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণটি হয়তো শুনেছ।
এখনই তো শত্রুর মোকাবেলা করার সময়। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করার সময়।
দেশকে স্বাধীন করার সময়।
পত্রলেখা শেষ হলো।
হঠাৎই গর্জে উঠলো মেশিনগান। সহকর্মী তারিক বলল,
হানাদার বাহিনীরা পাশের ক্যাম্পে আক্রমণ চালিয়েছে।
আমি সংক্ষিপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে
পাশের ক্যাম্পের দিকে রওনা হলাম।
ক্যাম্পে পৌঁছানোর পর
চারপাশে কতকগুলো লাশ পড়ে থাকতে দেখলাম।
বাকি সবকিছু একেবারে নিরব, নিস্তব্ধ।
কিছুক্ষণ পর আমাদের ক্যাম্পে ফিরে আসলাম।
কিছুদিন কেটে গেল।
খবর পেলাম,পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা নাকি আবারও পাশের ক্যাম্প আক্রমণের জন্য রওনা দিয়েছে।
পূর্ব প্রস্তুতি থাকাই রাস্তার পাশেই আমরা লুকিয়ে পড়লাম।
ওদের গাড়ি দেখতে পাওয়ার পর পরই আমরা পাল্টা আক্রমণ করলাম।
হানাদার বাহিনীর কয়েকজন আমাদের গুলিতে মারা গেল।
অনেকেই আহত হলো।
আহত হানাদারদের ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে বন্দী করে রাখলাম।
আস্তে আস্তে আমাদের পূর্ব পাকিস্তানের প্রায় সব অঞ্চল মুক্তি পেতে লাগলো।
অবশেষে আমরা পেলাম আমাদের কাঙ্ক্ষিত “স্বাধীনতা”।
যুদ্ধের ছবিগুলো এখনো চোখের সামনে ভেসে ওঠে।
চাইলেও সেই দিনগুলো ভুলে থাকতে পারি না।