ঢাকা ১১:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
কালিগঞ্জে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও অসচ্ছল ব্যক্তিদের চেক বিতরণ দেশ নায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বেই আগামীর বাংলাদেশ গড়তে চাই – এ্যাডঃ সৈয়দ ইফতেখার আলী শ্যামনগরে আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবস্থাপনার উপর ওরিয়েন্টশন আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ নয়নতারা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে দোয়েল মহিলা উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে হরিণের মাংস সহ আটক দুই সাতক্ষীরা সাস্থ্য উন্নয়ন কমিটির বর্ধিত সভায় ২৬ অক্টোবর খুলনা রোড মোড় মানব বন্ধনের সিদ্ধান্ত খুলনা প্রেসক্লাবে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি উপ-পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযান অনুষ্ঠিত 

ফারইস্ট ইন্স্যুরেন্সের গ্রাহকের টাকা সাবেক সিইও’র পকেটে

  • Sound Of Community
  • পোস্ট করা হয়েছে : ০৩:৪৮:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ৯৫ জন পড়েছেন ।

বহুল আলোচিত ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাবেক মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হেমায়েত উল্ল্যাহ কোম্পানির প্রায় ৩৫ কোটি আত্মসাত করার অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলা হলেও হেমায়েত উল্ল্যাহর কাছ থেকে একটি টাকাও আদায় করতে পারেনি কোম্পানিটি। দুদক ও ফারইস্টের মামলায় জেল খাটলেও এখন হেমায়েত উল্লাহ কোথায় আছেন তাও জানে না কোম্পানি।

এর আগে চলতি বছরের মে মাসে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে হেমায়েত উল্ল্যাহর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। মামলার এজহারে বলা হয়, জাল-জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে তিনটি ব্যাংকে ১৫টি হিসাব খোলেন হেমায়েত উল্ল্যাহ। নিজেকে নমিনি দেখিয়ে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির তিনটি ব্যাংক হিসাব থেকে ৩৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা ক্লিয়ারিংয়ের মাধ্যমে ওইসব ব্যাংক হিসাবে জমা করেন। পরবর্তী সময়ে ওই অর্থ হিসাবধারী ছাড়াই বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে উঠিয়ে হেমায়েত উল্ল্যাহ আত্মসাৎ করেন। তাই দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬/৪৬৮ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) শাস্তিযোগ্য অপরাধ বিবেচনায় তার বিরুদ্ধে মামলাটি করেছে দুদক।

মামলা হওয়ার ৩ মাস পার হলেও আত্মসাত করা টাকা ফেরত পায়নি ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। সম্প্রতি দুদকের মামলায় জামিন পেয়ে জেল থেকে বের হয়েছেন বলে জানা যায়। যদিও এ বিষয়ে কিছুই জানে না কোম্পানিটি। হেমায়েত উল্ল্যাহ কোথায় আছেন এবং টাকা ফেরতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কি না জানতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয় কোম্পানিটির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেনের সঙ্গে। তবে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ক্ষুদে বার্তা দেওয়া হলেও তার কোনো উত্তর দেননি তিনি।

সাবেক সিইও হেমায়েত উল্ল্যাহর বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি কোম্পানির কোনো পরিচালক এবং কর্মকর্তা। ফারইস্টের পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামালের কাছে জানতে চাইলে এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফারইস্টের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো টাকা আদায় করা যায়নি। শুনেছি তিনি জেলে ছিলেন। জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়েছেন বলেও শুনেছি। কিন্তু এখন তিনি কোথায় আছেন তা জানা নেই।’

মামলার কী অবস্থা জানতে চাইলে তিনি আজকের দৈনিককে জানায়, ‘মামলা হয়েছে মে মাসে। এখনো চার্জশিট হয়নি। তবে আশা করছি খুব দ্রুত মামলার চার্জশিট হয়ে যাবে। এরপর আমরা টাকা উদ্ধারের পদক্ষেপ নিবো। ইতিমধ্যে তার পরিবারের সাথে টাকা উদ্ধারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কত টাকা দিবেন, কীভাবে দিবেন সে বিষয়ে কোনো মতৈক্যে পৌঁছানো যায়নি। যার ফলে আলোচনা আর আগায়নি।’

এদিকে কোম্পানিটির সাবেক চেয়ারম্যান এম এ খালেকের কাছ থেকে ৩৭৬ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে বলে জানায় সূত্রটি। সে টাকা গ্রাহকদেরকে বিতরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এছাড়া নতুন বোর্ড গ্রাহকদের টাকা ফেরতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেন এই দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।

এর আগে ফারইস্টের ৩৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে হেমায়েত উল্ল্যাহর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দুদকে লিখিত আবেদন করেন ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান এমডি ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আপেল মাহমুদ। অভিযোগ ও অভিযোগের সঙ্গে সংযুক্ত কাগজপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, হেমায়েত উল্ল্যাহ ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোম্পানিতে কর্মরত সাতজনের নামে ব্যাংক হিসাব খোলেন। এ সাতজন হলেন সাবেক এসইভিপি সৈয়দ আব্দুল মতিন, মো. ইব্রাহিম, এসইভিপি মোহাম্মদ আব্দুল হালিম, মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, মো. মাহবুবুল মাওলা, সাবেক ইভিপি এইচ এম নুরুল কবীর তৌহিদী ও জেইভিপি মোস্তফা জামান হামিদী স্বাধীন। হিসাব খোলার ফরম পর্যালোচনায় দেখা যায়, গ্রাহক নিজে ব্যাংক হিসাবগুলো খোলেননি। অভিযুক্ত হেমায়েত উল্ল্যাহ ব্যাংকের ম্যানেজারদের কাছে চিঠি লিখে ওইসব হিসাব খোলার ব্যবস্থা করেন। অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি বাংলাদেশ ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) পরিচালিত তদন্তে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। মামলা তদন্তকালে এ অপরাধের সঙ্গে অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তা আইন অনুযায়ী আমলে নেয়া হবে বলে এজাহারে বলা হয়েছে।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ২০২১ সালের এক তদন্তেও ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে কোম্পানিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম, উদ্যোক্তা পরিচালক এমএ খালেক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হেমায়েত উল্ল্যাহর সংশ্লিষ্টতা উঠে আসে। তারা পরস্পরের যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে কোম্পানিটি থেকে ২ হাজার ১২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করেন বলে তদন্তে উঠে আসে। এর মধ্যে ৮৫৪ কোটি টাকা বেআইনি জমি অধিগ্রহণ, তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে ৬৫৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, কোম্পানিগুলোর মুদারাবা মেয়াদি আমানতের বিপরীতে ব্যাংক ঋণ নিয়ে ৪২১ কোটি টাকা এবং দুটি ভুয়া সামাজিক প্রতিষ্ঠানের নামে ১৯২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তারা। তদন্তে পাওয়া এসব তথ্য সে সময় অর্থ মন্ত্রণালয়, দুদক, বিএফআইইউ ও সিআইডিকে পাঠায় বিএসইসি।

একই সঙ্গে ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর ফারইস্ট ইসলামী লাইফের তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদকে অপসারণ করে এর পরিবর্তে ১০ জন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয় বিএসইসি। অন্যদিকে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) মো. হেমায়েত উল্ল্যাহকে এমডি পদ থেকে অপসারণ করে। পর্ষদ পুনর্গঠনের পাঁচ মাসের মাথায় দ্বিতীয় দফায় আবারো গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কোম্পানিটির পর্ষদে পরিবর্তন আনে বিএসইসি। এ দফায় প্রতিষ্ঠানটিতে ছয়জন স্বতন্ত্র পরিচালক ও চার শেয়ারধারী পরিচালকের নিয়োগ অনুমোদন করা হয়।

Tag :
রিপোর্টার সম্পর্কে

Sound Of Community

জনপ্রিয় সংবাদ

কালিগঞ্জে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও অসচ্ছল ব্যক্তিদের চেক বিতরণ

ফারইস্ট ইন্স্যুরেন্সের গ্রাহকের টাকা সাবেক সিইও’র পকেটে

পোস্ট করা হয়েছে : ০৩:৪৮:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বহুল আলোচিত ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাবেক মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হেমায়েত উল্ল্যাহ কোম্পানির প্রায় ৩৫ কোটি আত্মসাত করার অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলা হলেও হেমায়েত উল্ল্যাহর কাছ থেকে একটি টাকাও আদায় করতে পারেনি কোম্পানিটি। দুদক ও ফারইস্টের মামলায় জেল খাটলেও এখন হেমায়েত উল্লাহ কোথায় আছেন তাও জানে না কোম্পানি।

এর আগে চলতি বছরের মে মাসে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে হেমায়েত উল্ল্যাহর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। মামলার এজহারে বলা হয়, জাল-জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে তিনটি ব্যাংকে ১৫টি হিসাব খোলেন হেমায়েত উল্ল্যাহ। নিজেকে নমিনি দেখিয়ে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির তিনটি ব্যাংক হিসাব থেকে ৩৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা ক্লিয়ারিংয়ের মাধ্যমে ওইসব ব্যাংক হিসাবে জমা করেন। পরবর্তী সময়ে ওই অর্থ হিসাবধারী ছাড়াই বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে উঠিয়ে হেমায়েত উল্ল্যাহ আত্মসাৎ করেন। তাই দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬/৪৬৮ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) শাস্তিযোগ্য অপরাধ বিবেচনায় তার বিরুদ্ধে মামলাটি করেছে দুদক।

মামলা হওয়ার ৩ মাস পার হলেও আত্মসাত করা টাকা ফেরত পায়নি ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। সম্প্রতি দুদকের মামলায় জামিন পেয়ে জেল থেকে বের হয়েছেন বলে জানা যায়। যদিও এ বিষয়ে কিছুই জানে না কোম্পানিটি। হেমায়েত উল্ল্যাহ কোথায় আছেন এবং টাকা ফেরতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কি না জানতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয় কোম্পানিটির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেনের সঙ্গে। তবে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ক্ষুদে বার্তা দেওয়া হলেও তার কোনো উত্তর দেননি তিনি।

সাবেক সিইও হেমায়েত উল্ল্যাহর বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি কোম্পানির কোনো পরিচালক এবং কর্মকর্তা। ফারইস্টের পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামালের কাছে জানতে চাইলে এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফারইস্টের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো টাকা আদায় করা যায়নি। শুনেছি তিনি জেলে ছিলেন। জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়েছেন বলেও শুনেছি। কিন্তু এখন তিনি কোথায় আছেন তা জানা নেই।’

মামলার কী অবস্থা জানতে চাইলে তিনি আজকের দৈনিককে জানায়, ‘মামলা হয়েছে মে মাসে। এখনো চার্জশিট হয়নি। তবে আশা করছি খুব দ্রুত মামলার চার্জশিট হয়ে যাবে। এরপর আমরা টাকা উদ্ধারের পদক্ষেপ নিবো। ইতিমধ্যে তার পরিবারের সাথে টাকা উদ্ধারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কত টাকা দিবেন, কীভাবে দিবেন সে বিষয়ে কোনো মতৈক্যে পৌঁছানো যায়নি। যার ফলে আলোচনা আর আগায়নি।’

এদিকে কোম্পানিটির সাবেক চেয়ারম্যান এম এ খালেকের কাছ থেকে ৩৭৬ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে বলে জানায় সূত্রটি। সে টাকা গ্রাহকদেরকে বিতরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এছাড়া নতুন বোর্ড গ্রাহকদের টাকা ফেরতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেন এই দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।

এর আগে ফারইস্টের ৩৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে হেমায়েত উল্ল্যাহর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দুদকে লিখিত আবেদন করেন ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান এমডি ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আপেল মাহমুদ। অভিযোগ ও অভিযোগের সঙ্গে সংযুক্ত কাগজপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, হেমায়েত উল্ল্যাহ ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোম্পানিতে কর্মরত সাতজনের নামে ব্যাংক হিসাব খোলেন। এ সাতজন হলেন সাবেক এসইভিপি সৈয়দ আব্দুল মতিন, মো. ইব্রাহিম, এসইভিপি মোহাম্মদ আব্দুল হালিম, মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, মো. মাহবুবুল মাওলা, সাবেক ইভিপি এইচ এম নুরুল কবীর তৌহিদী ও জেইভিপি মোস্তফা জামান হামিদী স্বাধীন। হিসাব খোলার ফরম পর্যালোচনায় দেখা যায়, গ্রাহক নিজে ব্যাংক হিসাবগুলো খোলেননি। অভিযুক্ত হেমায়েত উল্ল্যাহ ব্যাংকের ম্যানেজারদের কাছে চিঠি লিখে ওইসব হিসাব খোলার ব্যবস্থা করেন। অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি বাংলাদেশ ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) পরিচালিত তদন্তে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। মামলা তদন্তকালে এ অপরাধের সঙ্গে অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তা আইন অনুযায়ী আমলে নেয়া হবে বলে এজাহারে বলা হয়েছে।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ২০২১ সালের এক তদন্তেও ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে কোম্পানিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম, উদ্যোক্তা পরিচালক এমএ খালেক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হেমায়েত উল্ল্যাহর সংশ্লিষ্টতা উঠে আসে। তারা পরস্পরের যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে কোম্পানিটি থেকে ২ হাজার ১২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করেন বলে তদন্তে উঠে আসে। এর মধ্যে ৮৫৪ কোটি টাকা বেআইনি জমি অধিগ্রহণ, তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে ৬৫৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, কোম্পানিগুলোর মুদারাবা মেয়াদি আমানতের বিপরীতে ব্যাংক ঋণ নিয়ে ৪২১ কোটি টাকা এবং দুটি ভুয়া সামাজিক প্রতিষ্ঠানের নামে ১৯২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তারা। তদন্তে পাওয়া এসব তথ্য সে সময় অর্থ মন্ত্রণালয়, দুদক, বিএফআইইউ ও সিআইডিকে পাঠায় বিএসইসি।

একই সঙ্গে ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর ফারইস্ট ইসলামী লাইফের তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদকে অপসারণ করে এর পরিবর্তে ১০ জন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয় বিএসইসি। অন্যদিকে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) মো. হেমায়েত উল্ল্যাহকে এমডি পদ থেকে অপসারণ করে। পর্ষদ পুনর্গঠনের পাঁচ মাসের মাথায় দ্বিতীয় দফায় আবারো গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কোম্পানিটির পর্ষদে পরিবর্তন আনে বিএসইসি। এ দফায় প্রতিষ্ঠানটিতে ছয়জন স্বতন্ত্র পরিচালক ও চার শেয়ারধারী পরিচালকের নিয়োগ অনুমোদন করা হয়।