ঢাকা ১০:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
চাঁদাবাজির অভিযোগে সুনামগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ইমনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা কালিগঞ্জে হয়রানি, ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে বড়শিমলা কারবালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এইচপিভি টীকাদান কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন ডা: বুলবুল কবীর কালিগঞ্জে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও অসচ্ছল ব্যক্তিদের চেক বিতরণ দেশ নায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বেই আগামীর বাংলাদেশ গড়তে চাই – এ্যাডঃ সৈয়দ ইফতেখার আলী শ্যামনগরে আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবস্থাপনার উপর ওরিয়েন্টশন আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ নয়নতারা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে দোয়েল মহিলা উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে হরিণের মাংস সহ আটক দুই

বিদেশ পাঠানোর নামে মানবপাচারকারীর পাতাঁনো ফাদেঁ পড়ে তিনটি পরিবার আজ নিঃস্ব

  • Sound Of Community
  • পোস্ট করা হয়েছে : ০১:০৩:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ৮৬ জন পড়েছেন ।

স্টাফ রিপোর্টার

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ঝরঝড়িয়া গ্রামে মানবপাচারকারী মো: ইয়াছিন, মনির, হেলিম গংদের খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত হয়েছে তিনটি পরিবার।

সৌদি আরবে পাঠানোর কথা বলে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের মনিপুর হাটির আব্দুল বারি, মোবারক হোসেন কালা, বীর মুক্তিযোদ্ধার আব্দুর রহিমের পরিবারের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ১২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা।

জায়গা জমি বিক্রি ও ধার দেনা করে টাকা দিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে তাদের পরিবার।

জানা যায়, প্রায় ১ বছর ৭ মাস আগে জনপ্রতি প্রায় ৪ লক্ষাধিক করে টাকা নিয়ে মানবপাচারকারী মো: ইয়াছিন, মনির, হেলিম গংরা নানা প্রলোভন ও সুযোগ সুবিধা দেখিয়ে মনিপুর হাটি গ্রামের আব্দুল বারির পুত্র সুহেল মিয়া, মোহন মিয়ার পুত্র তোতা মিয়া ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিমের পুত্র নোয়াব মিয়াকে সৌদি আরবে পাঠান। নানা প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি আরবে পাঠালেও দীর্ঘ ১ বছর ৭ মাস যাবৎ মানবেতর জীবন যাপন করছে তারা। কোন কাজকর্ম না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন প্রবাসে।

বেকার দিনাতিপাত করে অনাহারে অর্ধাহারে প্রবাস জীবন কাটছে তাদের। জমিজামা ও ধারদেনা করে বিদেশ যাওয়ার কারনে পাওনাদারদের দেয়া চাপে দিশেহারা হয়ে রয়েছে অসহায় পরিবারের সদস্যরা। সবকিছু হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে বেকায়দায় রয়েছেন তারা।

যে চুক্তি অনুযায়ী তাদের বিদেশ নেয়া হয়েছিলো তার কিছুই বাস্তবে প্রতিফলিত হয়নি। এ নিয়ে গত ১৩/০৯/২০২৩ ইং তারিখে তিন ইউনিয়নের বিশিষ্ট সালিশি ব্যাক্তিদের নিয়ে এক সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গ্রাম্য সালিশে যে সিদ্ধান্ত দেয়া হয় তা না মেনে চলে যায় ইয়াছিন গংরা। শালিসে সলুকাবাদ ইউপি সদস্য ফারুক বলেন, এলাকার প্রায় এক থেকে দেড়শ লোকদের সে নানা প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি আরবে নেয়। সেখানে তাদের কোন কাজকর্ম ও আকামা না দিয়ে বেকার প্রবাস জীবনে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

আমরা যারা বিচারে ছিলাম তারা সবাই বুঝতে পারি ইয়াছিন গংরা আসলে একটা মানবপাচারকারী চক্র। প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার কামনা করি। শাহানূর মিয়া নামক এক বিচারক বলেন, তাদেরকে যে কাজ দেয়ার কথা বলে ইয়াছিন গংরা বিদেশ নিয়েছে সে চুক্তি অনুযায়ী তারা কাজ দিতে পারে নি। আমাদের সালিশ বোর্ডে সিদ্ধান্ত ছিলো এই লোকগুলোকে যাতে আকামা দেয়া হয় নতুবা তাদের অচিরেই এই কষ্ট থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়।

কিন্তু ইয়াছিন গংরা সালিস মানে নাই। আমরা এর সঠিক বিচার চাই। এদিকে কোন উপায় না পেয়ে ভোক্তভোগীরা বিশ্বম্ভরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সুষ্ঠু বিচারের আশায় প্রশাসনের দারস্থ হয়েছেন তারা।

এ ব্যাপারে ভোক্তভোগী পরিবারের সদস্য সুহেল মিয়ার পিতা আব্দুল বারি বলেন, ইয়াছিন গংরা আমার ছেলেকে যে কাজকর্ম দেয়ার কথা বলে বিদেশ নিয়েছে। বিদেশ যাওয়ার পার আমার ছেলের কোন কাজকর্ম নাই দুই মাস ধরে তার খোঁজ খবর নাই। সে বিদেশে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমার পরিবারটাকে ইয়াছিন গংরা ধ্বংস করে ফেলেছে। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।

এ ব্যাপারে মানবপাচারকারী ইয়াছিনের বাবা মো: আলী নাওয়াজ বলেন, আমার ছেলে যাদের বিদেশ পাঠিয়েছে তারা ঠিকমতো কাজ করছে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। আমার ছেলে দেশে আসার পর তাকে অযথাই হয়রানি করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বিশ্বম্ভরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) শ্যামল বণিক বলেন, প্রমান সহকারে অভিযোগ নিয়ে আসলে তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও তিনি জানান।

Tag :
রিপোর্টার সম্পর্কে

Sound Of Community

জনপ্রিয় সংবাদ

চাঁদাবাজির অভিযোগে সুনামগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ইমনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

বিদেশ পাঠানোর নামে মানবপাচারকারীর পাতাঁনো ফাদেঁ পড়ে তিনটি পরিবার আজ নিঃস্ব

পোস্ট করা হয়েছে : ০১:০৩:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ঝরঝড়িয়া গ্রামে মানবপাচারকারী মো: ইয়াছিন, মনির, হেলিম গংদের খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত হয়েছে তিনটি পরিবার।

সৌদি আরবে পাঠানোর কথা বলে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের মনিপুর হাটির আব্দুল বারি, মোবারক হোসেন কালা, বীর মুক্তিযোদ্ধার আব্দুর রহিমের পরিবারের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ১২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা।

জায়গা জমি বিক্রি ও ধার দেনা করে টাকা দিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে তাদের পরিবার।

জানা যায়, প্রায় ১ বছর ৭ মাস আগে জনপ্রতি প্রায় ৪ লক্ষাধিক করে টাকা নিয়ে মানবপাচারকারী মো: ইয়াছিন, মনির, হেলিম গংরা নানা প্রলোভন ও সুযোগ সুবিধা দেখিয়ে মনিপুর হাটি গ্রামের আব্দুল বারির পুত্র সুহেল মিয়া, মোহন মিয়ার পুত্র তোতা মিয়া ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিমের পুত্র নোয়াব মিয়াকে সৌদি আরবে পাঠান। নানা প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি আরবে পাঠালেও দীর্ঘ ১ বছর ৭ মাস যাবৎ মানবেতর জীবন যাপন করছে তারা। কোন কাজকর্ম না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন প্রবাসে।

বেকার দিনাতিপাত করে অনাহারে অর্ধাহারে প্রবাস জীবন কাটছে তাদের। জমিজামা ও ধারদেনা করে বিদেশ যাওয়ার কারনে পাওনাদারদের দেয়া চাপে দিশেহারা হয়ে রয়েছে অসহায় পরিবারের সদস্যরা। সবকিছু হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে বেকায়দায় রয়েছেন তারা।

যে চুক্তি অনুযায়ী তাদের বিদেশ নেয়া হয়েছিলো তার কিছুই বাস্তবে প্রতিফলিত হয়নি। এ নিয়ে গত ১৩/০৯/২০২৩ ইং তারিখে তিন ইউনিয়নের বিশিষ্ট সালিশি ব্যাক্তিদের নিয়ে এক সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গ্রাম্য সালিশে যে সিদ্ধান্ত দেয়া হয় তা না মেনে চলে যায় ইয়াছিন গংরা। শালিসে সলুকাবাদ ইউপি সদস্য ফারুক বলেন, এলাকার প্রায় এক থেকে দেড়শ লোকদের সে নানা প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি আরবে নেয়। সেখানে তাদের কোন কাজকর্ম ও আকামা না দিয়ে বেকার প্রবাস জীবনে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

আমরা যারা বিচারে ছিলাম তারা সবাই বুঝতে পারি ইয়াছিন গংরা আসলে একটা মানবপাচারকারী চক্র। প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার কামনা করি। শাহানূর মিয়া নামক এক বিচারক বলেন, তাদেরকে যে কাজ দেয়ার কথা বলে ইয়াছিন গংরা বিদেশ নিয়েছে সে চুক্তি অনুযায়ী তারা কাজ দিতে পারে নি। আমাদের সালিশ বোর্ডে সিদ্ধান্ত ছিলো এই লোকগুলোকে যাতে আকামা দেয়া হয় নতুবা তাদের অচিরেই এই কষ্ট থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়।

কিন্তু ইয়াছিন গংরা সালিস মানে নাই। আমরা এর সঠিক বিচার চাই। এদিকে কোন উপায় না পেয়ে ভোক্তভোগীরা বিশ্বম্ভরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সুষ্ঠু বিচারের আশায় প্রশাসনের দারস্থ হয়েছেন তারা।

এ ব্যাপারে ভোক্তভোগী পরিবারের সদস্য সুহেল মিয়ার পিতা আব্দুল বারি বলেন, ইয়াছিন গংরা আমার ছেলেকে যে কাজকর্ম দেয়ার কথা বলে বিদেশ নিয়েছে। বিদেশ যাওয়ার পার আমার ছেলের কোন কাজকর্ম নাই দুই মাস ধরে তার খোঁজ খবর নাই। সে বিদেশে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমার পরিবারটাকে ইয়াছিন গংরা ধ্বংস করে ফেলেছে। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।

এ ব্যাপারে মানবপাচারকারী ইয়াছিনের বাবা মো: আলী নাওয়াজ বলেন, আমার ছেলে যাদের বিদেশ পাঠিয়েছে তারা ঠিকমতো কাজ করছে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। আমার ছেলে দেশে আসার পর তাকে অযথাই হয়রানি করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বিশ্বম্ভরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) শ্যামল বণিক বলেন, প্রমান সহকারে অভিযোগ নিয়ে আসলে তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও তিনি জানান।