ঢাকা ০৭:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
কালিগঞ্জে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও অসচ্ছল ব্যক্তিদের চেক বিতরণ দেশ নায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বেই আগামীর বাংলাদেশ গড়তে চাই – এ্যাডঃ সৈয়দ ইফতেখার আলী শ্যামনগরে আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবস্থাপনার উপর ওরিয়েন্টশন আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ নয়নতারা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে দোয়েল মহিলা উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে হরিণের মাংস সহ আটক দুই সাতক্ষীরা সাস্থ্য উন্নয়ন কমিটির বর্ধিত সভায় ২৬ অক্টোবর খুলনা রোড মোড় মানব বন্ধনের সিদ্ধান্ত খুলনা প্রেসক্লাবে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি উপ-পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযান অনুষ্ঠিত 

প্রত্যাশা একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন- হীরেন পণ্ডিত

  • Sound Of Community
  • পোস্ট করা হয়েছে : ০৪:৫৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুলাই ২০২৩
  • ১০৫ জন পড়েছেন ।

এ দেশের মানুষ শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ নির্বাচন চায়। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে রাজনীতি করার অধিকার সবার আছে।

শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রয়েছে সরকারের পক্ষ থেকেও। অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সবার প্রত্যাশা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিসহ সব শক্তিকে নিয়ে আগামী নির্বাচনে বিজয়ের লক্ষ্যে অভিযাত্রা করবে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে সবাই জানতে পেরেছি।

আমাদের দেশের রাজনীতিতে যতদিন পর্যন্ত সুস্থ ধারা ফিরে না আসবে, ততদিন বিদেশিদের অযথা নাক গলানোর প্রবণতাও দূর হবে না। এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বড় দুর্বলতা যে, আমরা নিজেদের নাক কেটেও পরের যাত্রা ভঙ্গ করতে চাই। রাজনীতিবিদরা নিজেরা নিজেদের শুধরে না নিলে বাইরের লোকেরা কান কথা বলতে পারবে, তাতে ভালো কিছু হবে না। দেশের কল্যাণ হবে না। তাই দেশ, মা, মাতৃভূমি ও স্বাধীনতা সবার ওপরে, এটা যত মনে রাখবেন ততই দেশের জন্য মঙ্গল।

নানা ধরনের অনিশ্চয়তা ও আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আমেজ পাওয়া যাচ্ছে। অনেক হতাশার মধ্যেও জাতির সামনে এক উজ্জ্বল আলোর রেখা দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে বাতাসে নানা গুঞ্জনও ভেসে বেড়াচ্ছে। জনগণ সেসব গুঞ্জনে কান দিতে চান না। হতাশার কোনো কারণ দেশের শান্তিপ্রিয় জনগণ দেখতে চান না, বুঝতে চান না। চলতি বছরের শেষ দিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। সার্থক নির্বাচনের জন্য দরকার সব দলের ও সব মতের লোকের অংশগ্রহণ। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাই মুখ্য, তবে সরকারকে অবশ্যই সহায়ক হতে হবে। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর নতুন মেয়াদে নতুন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য নির্বাচন অপরিহার্য।

কিন্তু সেই নির্বাচন কীভাবে হবে? কারা করবে? নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার নিশ্চয়তা থাকবে কি? না আগামী নির্বাচনও একতরফা হবে? সব দলকে নির্বাচনে আনতে প্রথমে নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সব নাগরিক যেন তাদের ভোট তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে স্বাধীনভাবে দিতে পারে, নির্বাচন কমিশনকে যথাযথভাবে সে দায়িত্ব পালন করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে আগে থেকেই বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনা করে সুষ্ঠু ও সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশের বিষয়টিকে নিশ্চিত করতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার আস্থার সংকট দূর করতে হবে। অন্যান্য দলকেও সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। তবে জনগণ পছন্দসই প্রার্থীকে ভোট দেবে, সেই ক্ষেত্রটি তৈরি করার প্রধান দায়িত্ব্ কিন্তু নির্বাচন কমিশনেরই।

একটি সুষ্ঠু, সুন্দর, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সবাই চায়। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছে। এসডিজি বাস্তবায়নের মাধ্যমে শোষণহীন বৈষম্যমুক্ত, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ কাজ করছে। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সরকার পরিবর্তনের সর্বোত্তম মাধ্যম হচ্ছে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের পছন্দমতো প্রতিনিধি নির্বাচন করে শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে পারে। নির্বাচনে কোনো প্রকার কারচুপি না হলে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হওয়ায় গণতন্ত্রের মৌলিক কাঠামো খুবই দুর্বল। ফলে দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিদ্যমান। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানের জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন একান্ত প্রয়োজন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে। নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন এখন সম্পূর্ণ স্বাধীন, শক্তিশালী ও দায়িত্বশীল। তাই সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায়। কেননা নির্বাচন পরিচালনার সব দায়িত্বই নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত। ভোটার তালিকা প্রণয়ন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা, নির্বাচনি আচরণবিধি প্রণয়ন এবং নির্বাচনি পরিবেশ পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত। সুতরাং শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন ব্যতীত অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।

গণতন্ত্রের পূবর্শত সুষ্ঠু নির্বাচন। একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন জাতিকে একটি সুন্দর সংসদ উপহার দিতে পারে। সব দল অংশ নিলে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না। এ ক্ষেত্রে সরকারি দলের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর বাইরে সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে সর্বজনগ্রাহ্য মতগুলো নিয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে বিতর্কিত না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। দেশ যাতে ভয়াবহ পরিণতির মুখে পড়তে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, রাজনীতিকদের কোনো অবিবেচক সিদ্ধান্ত বা ভুলের কারণে যদি দেশের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা বিপন্ন হয়ে পড়ে, নির্বাচন ভ-ুল হয়ে যায়, তা হলে ইতিহাস কিন্তু ক্ষমা করবে না। গণতন্ত্র একটি রাষ্ট্রের প্রাণশক্তি ও উন্নয়নের পূর্বশর্ত। বর্তমান সরকার সে গণতন্ত্রের প্রাণ বাঁচিয়ে রেখেই দেশের উন্নয়ন ঘটাচ্ছে। আর গণতন্ত্র মানে আত্মমর্যাদা ন্যায়বিচার, সুশাসন, মানবিক উন্নয়ন অর্থাৎ একে অপরের সঙ্গে সৌহার্দ, সম্প্রীতির বন্ধন তৈরি করা। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে অনেকেই শঙ্কা ও আতঙ্কের মধ্যে আছেন। নির্বাচনপূর্ব কোনো সহিংসতা, অস্থিরতা বা রাজনৈতিক টানাপড়েন সৃষ্টি হয় কি না? তবে এহেন কোনো অবাঞ্ছিত পরিস্থিতির উদ্ভব হলে বা কেউ সৃষ্টি করতে চাইলে তাদের পরিণাম হয়তো ভালো হবে না। জনগণই তাদের উচিত জবাব দিয়ে দেবেন।

নির্বাচন সংঘাতমুখী হবে বা না হবে অথবা আদৌ হবে কি না বা হলে তা অংশগ্রহণমূলক হবে বা হবে না ইত্যাদি গুঞ্জন ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। অধিকন্তু নির্বাচন হলেও তা সহিংসতায় রূপ নেবে কি না ইত্যাদি ভাবনা জনগণের মধ্যে। জনগণ শঙ্কামুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। এ চাওয়া জনগণের মৌলিক অধিকার। এ অধিকারের প্রাপ্তি থেকে জনগণ হোঁচট খেতে চায় না। জনগণের একটি বড় অংশ হচ্ছে গরিব, অসহায়, দুঃখী ও সাধারণ মানুষ। আর সাধারণ মানুষকে সুখী করাটাই হচ্ছে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নির্বাচিত সরকারের দায়িত্ব।

নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করে। সেই স্বাধীন নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নিরপেক্ষ নির্বাচন করার লক্ষ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সে আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ইইউ প্রতিনিধি দল এসেছে, নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানো ও প্রস্তুতিমূলক নানা বিষয় তারা পর্যবেক্ষণ করবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও বৈঠক করবে তারা।

নির্বাচনের আগেই যার যার অবস্থান থেকে নির্বাচনকে প্রভাব ও হস্তক্ষেপমুক্ত রাখার প্রতিশ্রুতি বাস্তবে কার্যকর করার ক্ষেত্রে সবাইকেই নির্বাচনি আইন, বিধিমালা মেনে চলতে হবে। নির্বাচনে হস্তক্ষেপ, প্রভাব বিস্তার, কালোটাকা, ধর্মের অপব্যবহার, সাম্প্রদায়িকতার বীজ ছড়ানো ইত্যাদিকে কঠোরভাবে নজরদারিতে রাখতেই হবে।

জনমনে নির্বাচন নিয়ে যে কৌতূহল, তা ধীরে ধীরে দানা বাঁধতে থাকবে, নির্বাচন প্রক্রিয়াও একটি চূড়ান্ত রূপ ধারণ করবে। বড় রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম, গতিবিধি এবং আচার-আচরণ নিয়ে জনগণের নানা কথা ক্রমেই যেন একটা নতুন আবহ সৃষ্টি করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার তাগিদ দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) উন্নয়ন-সহযোগী দেশ ও সংস্থাগুলো তৎপরতা চালাচ্ছে।

ইতিমধ্যে এসব সংস্থার পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষক মিশন পাঠানো এবং বিভিন্ন সহায়তার কথাও বলা হচ্ছে। সময়ের ধারায় এসবের অনেক কিছুই আমরা ক্রমান্বয়ে দেখতে থাকব। সবকিছুর আগে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনে হারজিতের মানসিক প্রস্তুতি ও সদিচ্ছা বড় বেশি প্রয়োজন।

বাংলাদেশের স্বার্থকে সমুন্নত রেখে একটি স্বাধীন অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতি অনুসরণের যে আকাক্সক্ষা ঢাকার রয়েছে, এটি সর্বজনবিদিত যে, সভ্য বিশ্বের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির পরিচর্যায় নির্বাচন একটি অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ। উন্নত-উন্নয়নশীল-অনুন্নত সব দেশে চলমান সরকারের অধীনে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান সাংবিধানিক-নৈতিক প্রণিধানযোগ্য দায়িত্ব ও কর্তব্য।

গণতন্ত্রের রাষ্ট্রব্যবস্থায় ক্ষমতাসীন দল ও শক্তিশালী বিরোধী দলের পারস্পরিক সমঝোতা-সহযোগিতা-সম্প্রীতি ও শিষ্টাচার পরিপূর্ণ আচার-আচরণ গণতন্ত্রকে সত্যিকার অর্থবহ করে তোলে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশ-সেমিনার-সিম্পোজিয়াম আয়োজনে সরকারের ভুলত্রুটিগুলো নৈর্ব্যক্তিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তুলে ধরে ইতিবাচক-গঠনমূলক সমালোচনায় ঋদ্ধ হতে পারে সরকারের দেশ পরিচালনায় অনন্য সাফল্য। চর দখলের মতো ক্ষমতা দখলের কোনো ব্যবস্থাই আধুনিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য নয়।

বাংলাদেশ স্বাধীন-সার্বভৌম। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ওই সব সংস্থা বা ব্যক্তির কথা বলার কোনো এখতিয়ারই নেই। এরপরও তারা যেসব কথাবার্তা বলছে, সেগুলো বাস্তবতাবিবর্জিত ও একেবারেই ভিত্তিহীন। বাংলাদেশ সম্পর্কে যাদের কোনো ধারণা নেই, তারাই হুট করে একেক সময় একেক ধরনের কথা বলছে। এগুলোতে গুরুত্ব দেওয়ার কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। সরকার এগুলো নিয়ে মাথাও ঘামাবে না।

বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। ‘২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে একটি স্মার্ট দেশ, যেখানে থাকবে স্মার্ট মানুষ, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সমাজের পাশাপাশি স্মার্ট-দক্ষ জনশক্তি। এতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণ হবে। দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।’

সময়ের আলো

Tag :
রিপোর্টার সম্পর্কে

Sound Of Community

জনপ্রিয় সংবাদ

কালিগঞ্জে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও অসচ্ছল ব্যক্তিদের চেক বিতরণ

প্রত্যাশা একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন- হীরেন পণ্ডিত

পোস্ট করা হয়েছে : ০৪:৫৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুলাই ২০২৩

এ দেশের মানুষ শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ নির্বাচন চায়। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে রাজনীতি করার অধিকার সবার আছে।

শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রয়েছে সরকারের পক্ষ থেকেও। অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সবার প্রত্যাশা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিসহ সব শক্তিকে নিয়ে আগামী নির্বাচনে বিজয়ের লক্ষ্যে অভিযাত্রা করবে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে সবাই জানতে পেরেছি।

আমাদের দেশের রাজনীতিতে যতদিন পর্যন্ত সুস্থ ধারা ফিরে না আসবে, ততদিন বিদেশিদের অযথা নাক গলানোর প্রবণতাও দূর হবে না। এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বড় দুর্বলতা যে, আমরা নিজেদের নাক কেটেও পরের যাত্রা ভঙ্গ করতে চাই। রাজনীতিবিদরা নিজেরা নিজেদের শুধরে না নিলে বাইরের লোকেরা কান কথা বলতে পারবে, তাতে ভালো কিছু হবে না। দেশের কল্যাণ হবে না। তাই দেশ, মা, মাতৃভূমি ও স্বাধীনতা সবার ওপরে, এটা যত মনে রাখবেন ততই দেশের জন্য মঙ্গল।

নানা ধরনের অনিশ্চয়তা ও আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আমেজ পাওয়া যাচ্ছে। অনেক হতাশার মধ্যেও জাতির সামনে এক উজ্জ্বল আলোর রেখা দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে বাতাসে নানা গুঞ্জনও ভেসে বেড়াচ্ছে। জনগণ সেসব গুঞ্জনে কান দিতে চান না। হতাশার কোনো কারণ দেশের শান্তিপ্রিয় জনগণ দেখতে চান না, বুঝতে চান না। চলতি বছরের শেষ দিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। সার্থক নির্বাচনের জন্য দরকার সব দলের ও সব মতের লোকের অংশগ্রহণ। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাই মুখ্য, তবে সরকারকে অবশ্যই সহায়ক হতে হবে। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর নতুন মেয়াদে নতুন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য নির্বাচন অপরিহার্য।

কিন্তু সেই নির্বাচন কীভাবে হবে? কারা করবে? নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার নিশ্চয়তা থাকবে কি? না আগামী নির্বাচনও একতরফা হবে? সব দলকে নির্বাচনে আনতে প্রথমে নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সব নাগরিক যেন তাদের ভোট তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে স্বাধীনভাবে দিতে পারে, নির্বাচন কমিশনকে যথাযথভাবে সে দায়িত্ব পালন করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে আগে থেকেই বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনা করে সুষ্ঠু ও সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশের বিষয়টিকে নিশ্চিত করতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার আস্থার সংকট দূর করতে হবে। অন্যান্য দলকেও সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। তবে জনগণ পছন্দসই প্রার্থীকে ভোট দেবে, সেই ক্ষেত্রটি তৈরি করার প্রধান দায়িত্ব্ কিন্তু নির্বাচন কমিশনেরই।

একটি সুষ্ঠু, সুন্দর, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সবাই চায়। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছে। এসডিজি বাস্তবায়নের মাধ্যমে শোষণহীন বৈষম্যমুক্ত, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ কাজ করছে। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সরকার পরিবর্তনের সর্বোত্তম মাধ্যম হচ্ছে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের পছন্দমতো প্রতিনিধি নির্বাচন করে শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে পারে। নির্বাচনে কোনো প্রকার কারচুপি না হলে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হওয়ায় গণতন্ত্রের মৌলিক কাঠামো খুবই দুর্বল। ফলে দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিদ্যমান। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানের জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন একান্ত প্রয়োজন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে। নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন এখন সম্পূর্ণ স্বাধীন, শক্তিশালী ও দায়িত্বশীল। তাই সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায়। কেননা নির্বাচন পরিচালনার সব দায়িত্বই নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত। ভোটার তালিকা প্রণয়ন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা, নির্বাচনি আচরণবিধি প্রণয়ন এবং নির্বাচনি পরিবেশ পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত। সুতরাং শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন ব্যতীত অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।

গণতন্ত্রের পূবর্শত সুষ্ঠু নির্বাচন। একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন জাতিকে একটি সুন্দর সংসদ উপহার দিতে পারে। সব দল অংশ নিলে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না। এ ক্ষেত্রে সরকারি দলের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর বাইরে সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে সর্বজনগ্রাহ্য মতগুলো নিয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে বিতর্কিত না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। দেশ যাতে ভয়াবহ পরিণতির মুখে পড়তে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, রাজনীতিকদের কোনো অবিবেচক সিদ্ধান্ত বা ভুলের কারণে যদি দেশের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা বিপন্ন হয়ে পড়ে, নির্বাচন ভ-ুল হয়ে যায়, তা হলে ইতিহাস কিন্তু ক্ষমা করবে না। গণতন্ত্র একটি রাষ্ট্রের প্রাণশক্তি ও উন্নয়নের পূর্বশর্ত। বর্তমান সরকার সে গণতন্ত্রের প্রাণ বাঁচিয়ে রেখেই দেশের উন্নয়ন ঘটাচ্ছে। আর গণতন্ত্র মানে আত্মমর্যাদা ন্যায়বিচার, সুশাসন, মানবিক উন্নয়ন অর্থাৎ একে অপরের সঙ্গে সৌহার্দ, সম্প্রীতির বন্ধন তৈরি করা। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে অনেকেই শঙ্কা ও আতঙ্কের মধ্যে আছেন। নির্বাচনপূর্ব কোনো সহিংসতা, অস্থিরতা বা রাজনৈতিক টানাপড়েন সৃষ্টি হয় কি না? তবে এহেন কোনো অবাঞ্ছিত পরিস্থিতির উদ্ভব হলে বা কেউ সৃষ্টি করতে চাইলে তাদের পরিণাম হয়তো ভালো হবে না। জনগণই তাদের উচিত জবাব দিয়ে দেবেন।

নির্বাচন সংঘাতমুখী হবে বা না হবে অথবা আদৌ হবে কি না বা হলে তা অংশগ্রহণমূলক হবে বা হবে না ইত্যাদি গুঞ্জন ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। অধিকন্তু নির্বাচন হলেও তা সহিংসতায় রূপ নেবে কি না ইত্যাদি ভাবনা জনগণের মধ্যে। জনগণ শঙ্কামুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। এ চাওয়া জনগণের মৌলিক অধিকার। এ অধিকারের প্রাপ্তি থেকে জনগণ হোঁচট খেতে চায় না। জনগণের একটি বড় অংশ হচ্ছে গরিব, অসহায়, দুঃখী ও সাধারণ মানুষ। আর সাধারণ মানুষকে সুখী করাটাই হচ্ছে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নির্বাচিত সরকারের দায়িত্ব।

নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করে। সেই স্বাধীন নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নিরপেক্ষ নির্বাচন করার লক্ষ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সে আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ইইউ প্রতিনিধি দল এসেছে, নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানো ও প্রস্তুতিমূলক নানা বিষয় তারা পর্যবেক্ষণ করবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও বৈঠক করবে তারা।

নির্বাচনের আগেই যার যার অবস্থান থেকে নির্বাচনকে প্রভাব ও হস্তক্ষেপমুক্ত রাখার প্রতিশ্রুতি বাস্তবে কার্যকর করার ক্ষেত্রে সবাইকেই নির্বাচনি আইন, বিধিমালা মেনে চলতে হবে। নির্বাচনে হস্তক্ষেপ, প্রভাব বিস্তার, কালোটাকা, ধর্মের অপব্যবহার, সাম্প্রদায়িকতার বীজ ছড়ানো ইত্যাদিকে কঠোরভাবে নজরদারিতে রাখতেই হবে।

জনমনে নির্বাচন নিয়ে যে কৌতূহল, তা ধীরে ধীরে দানা বাঁধতে থাকবে, নির্বাচন প্রক্রিয়াও একটি চূড়ান্ত রূপ ধারণ করবে। বড় রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম, গতিবিধি এবং আচার-আচরণ নিয়ে জনগণের নানা কথা ক্রমেই যেন একটা নতুন আবহ সৃষ্টি করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার তাগিদ দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) উন্নয়ন-সহযোগী দেশ ও সংস্থাগুলো তৎপরতা চালাচ্ছে।

ইতিমধ্যে এসব সংস্থার পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষক মিশন পাঠানো এবং বিভিন্ন সহায়তার কথাও বলা হচ্ছে। সময়ের ধারায় এসবের অনেক কিছুই আমরা ক্রমান্বয়ে দেখতে থাকব। সবকিছুর আগে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনে হারজিতের মানসিক প্রস্তুতি ও সদিচ্ছা বড় বেশি প্রয়োজন।

বাংলাদেশের স্বার্থকে সমুন্নত রেখে একটি স্বাধীন অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতি অনুসরণের যে আকাক্সক্ষা ঢাকার রয়েছে, এটি সর্বজনবিদিত যে, সভ্য বিশ্বের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির পরিচর্যায় নির্বাচন একটি অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ। উন্নত-উন্নয়নশীল-অনুন্নত সব দেশে চলমান সরকারের অধীনে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান সাংবিধানিক-নৈতিক প্রণিধানযোগ্য দায়িত্ব ও কর্তব্য।

গণতন্ত্রের রাষ্ট্রব্যবস্থায় ক্ষমতাসীন দল ও শক্তিশালী বিরোধী দলের পারস্পরিক সমঝোতা-সহযোগিতা-সম্প্রীতি ও শিষ্টাচার পরিপূর্ণ আচার-আচরণ গণতন্ত্রকে সত্যিকার অর্থবহ করে তোলে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশ-সেমিনার-সিম্পোজিয়াম আয়োজনে সরকারের ভুলত্রুটিগুলো নৈর্ব্যক্তিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তুলে ধরে ইতিবাচক-গঠনমূলক সমালোচনায় ঋদ্ধ হতে পারে সরকারের দেশ পরিচালনায় অনন্য সাফল্য। চর দখলের মতো ক্ষমতা দখলের কোনো ব্যবস্থাই আধুনিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য নয়।

বাংলাদেশ স্বাধীন-সার্বভৌম। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ওই সব সংস্থা বা ব্যক্তির কথা বলার কোনো এখতিয়ারই নেই। এরপরও তারা যেসব কথাবার্তা বলছে, সেগুলো বাস্তবতাবিবর্জিত ও একেবারেই ভিত্তিহীন। বাংলাদেশ সম্পর্কে যাদের কোনো ধারণা নেই, তারাই হুট করে একেক সময় একেক ধরনের কথা বলছে। এগুলোতে গুরুত্ব দেওয়ার কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। সরকার এগুলো নিয়ে মাথাও ঘামাবে না।

বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। ‘২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে একটি স্মার্ট দেশ, যেখানে থাকবে স্মার্ট মানুষ, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সমাজের পাশাপাশি স্মার্ট-দক্ষ জনশক্তি। এতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণ হবে। দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।’

সময়ের আলো