ঢাকা ১২:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
চাঁদাবাজির অভিযোগে সুনামগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ইমনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা কালিগঞ্জে হয়রানি, ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে বড়শিমলা কারবালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এইচপিভি টীকাদান কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন ডা: বুলবুল কবীর কালিগঞ্জে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও অসচ্ছল ব্যক্তিদের চেক বিতরণ দেশ নায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বেই আগামীর বাংলাদেশ গড়তে চাই – এ্যাডঃ সৈয়দ ইফতেখার আলী শ্যামনগরে আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবস্থাপনার উপর ওরিয়েন্টশন আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ নয়নতারা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে দোয়েল মহিলা উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে হরিণের মাংস সহ আটক দুই

লোহাগড়ায় প্রেমিকার বাবার হাতে এসএসসি পরীক্ষার্থী খুন

  • Sound Of Community
  • পোস্ট করা হয়েছে : ১১:০৪:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ মে ২০২৩
  • ৮২ জন পড়েছেন ।

মোঃ আজিজুর বিশ্বাস,স্টাফ রিপোর্টার

ইংরেজি ২য় পত্র পরীক্ষার আগের রাতে (৬ মে রাতে বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে একই গ্রামে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল এসএসসি পরীক্ষার্থী সিরাজ শেখ (১৭)। এসময় প্রেমিকার সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে সিরাজকে ধাওয়া করেন প্রেমিকার বাবা সবুর শেখ। সিরাজ দৌড়ে পালনোর সময় মেহগনি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে পড়ে যান। ওই সময় কোদালের আছাড়ি দিয়ে তার মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করেন প্রেমিকার বাবা সবুর শেখ।

এসএসসি পরীক্ষার্থী সিরাজ শেখ হত্যার রহস্য উন্মোচন শেষে এভাবেই ঘটনার বর্ণনা দেন লোহাগড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নাসির উদ্দীন।

তিনি বলেন, রাতেই সিরাজের নিথর দেহ সবুর ঘাড়ে করে বাড়ির পাশে পুকুরের কচুরিপানার নিচে ঢেকে রাখেন। ঢেকে রাখার পরও সবুরের মনে সন্দেহ হয় বেঁচে আছেন কিনা? সিরাজের নিথর দেহ কচুরিপানার নিচ থেকে আবার বের করে গরু জবাই করার ধারালো ছুরি দিয়ে জবাই করেন সবুর।

এবং তারপরের দিন (৭ মে) গভীর রাতে সবুরের ঘরে থাকা ব্যাটারির অ্যাসিড (দাহ্য) নিয়ে সিরাজের মরদেহ পুকুর থেকে উঠিয়ে বিল আড়াআড়ি (২ কিলোমিটার দূরে) শওকত হোসেন মিরুর আমবাগানে নিয়ে যান। সিরাজ কে আমবাগানে ফেলে ব্যাটারির অ্যাসিড সিরাজের মাথায় ঢেলে মাথার মাংস গলিয়ে দেন সবুর শেখ। অ্যাসিড দিয়ে পোড়ানোর উদ্দেশ্য ছিলো লাশটি যেন কেউ শনাক্ত না করতে পারে।

পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, এসএসসি পরীক্ষার্থী সিরাজ শেখের সঙ্গে একই গ্রামের মাদ্রাসাপড়ুয়া ইয়াসমিনের দুই মাস ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মূলত প্রেমিকার ডাকে সাড়া দিয়ে দেখা করতে ৬ মে রাতে সিরাজ এসেছিল। এসএসসি পরীক্ষার্থীর মরদেহ ১০ মে দুপুরে উদ্ধারের পর তার বাবা শেখ ইকরাম আলী ১২ মে গভীর রাতে চারজনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতদের আসামি করে লোহাগড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

 

ওই মামলার ১৫ ঘণ্টার মধ্যে লোহাগড়া থানা পুলিশসহ জেলা পুলিশের একাধিক টিম তদন্তপূর্বক হত্যার রহস্য উন্মোচন করে। গ্রেপ্তারকৃত চার জন আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে হাজির করলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যার কথা স্বীকার করেন সবুর শেখ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের চরদৌলতপুর গ্রামের মৃত ইস্রাফিল শেখের ছেলে সবুর শেখ (৫২), সবুর শেখের স্ত্রী শাহিনা বেগম (৪৭), ছেলে জাহিদুল শেখ (২০), ও মেয়ে ইয়াসমিন খানম (১৬)।

এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি রক্তমাখা ছুরি, রক্তমাখা একটি কোদালের আছাড়ি জব্দ করে পুলিশ।

উল্লেখ্য, নিখোঁজের ৫ দিন পর গত বুধবার (১০ মে) দুপুরে সিরাজ শেখের ঝলসানো ও অর্ধগলিত মরদেহ তার বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে অব্দা রাস্তার পাশে শওকত হোসেন মিরুর আমবাগান থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত সিরাজ শেখ ইতনা ইউনিয়নের চর দৌলতপুর গ্রামের কৃষক শেখ ইকরাম আলীর ছোট ছেলে। সে চর দৌলতপুর সরস্বতী একাডেমি বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় তিনটি বিষয়ে অংশগ্রহণ করেছিল।

Tag :
রিপোর্টার সম্পর্কে

Sound Of Community

জনপ্রিয় সংবাদ

চাঁদাবাজির অভিযোগে সুনামগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ইমনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

লোহাগড়ায় প্রেমিকার বাবার হাতে এসএসসি পরীক্ষার্থী খুন

পোস্ট করা হয়েছে : ১১:০৪:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ মে ২০২৩

মোঃ আজিজুর বিশ্বাস,স্টাফ রিপোর্টার

ইংরেজি ২য় পত্র পরীক্ষার আগের রাতে (৬ মে রাতে বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে একই গ্রামে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল এসএসসি পরীক্ষার্থী সিরাজ শেখ (১৭)। এসময় প্রেমিকার সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে সিরাজকে ধাওয়া করেন প্রেমিকার বাবা সবুর শেখ। সিরাজ দৌড়ে পালনোর সময় মেহগনি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে পড়ে যান। ওই সময় কোদালের আছাড়ি দিয়ে তার মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করেন প্রেমিকার বাবা সবুর শেখ।

এসএসসি পরীক্ষার্থী সিরাজ শেখ হত্যার রহস্য উন্মোচন শেষে এভাবেই ঘটনার বর্ণনা দেন লোহাগড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নাসির উদ্দীন।

তিনি বলেন, রাতেই সিরাজের নিথর দেহ সবুর ঘাড়ে করে বাড়ির পাশে পুকুরের কচুরিপানার নিচে ঢেকে রাখেন। ঢেকে রাখার পরও সবুরের মনে সন্দেহ হয় বেঁচে আছেন কিনা? সিরাজের নিথর দেহ কচুরিপানার নিচ থেকে আবার বের করে গরু জবাই করার ধারালো ছুরি দিয়ে জবাই করেন সবুর।

এবং তারপরের দিন (৭ মে) গভীর রাতে সবুরের ঘরে থাকা ব্যাটারির অ্যাসিড (দাহ্য) নিয়ে সিরাজের মরদেহ পুকুর থেকে উঠিয়ে বিল আড়াআড়ি (২ কিলোমিটার দূরে) শওকত হোসেন মিরুর আমবাগানে নিয়ে যান। সিরাজ কে আমবাগানে ফেলে ব্যাটারির অ্যাসিড সিরাজের মাথায় ঢেলে মাথার মাংস গলিয়ে দেন সবুর শেখ। অ্যাসিড দিয়ে পোড়ানোর উদ্দেশ্য ছিলো লাশটি যেন কেউ শনাক্ত না করতে পারে।

পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, এসএসসি পরীক্ষার্থী সিরাজ শেখের সঙ্গে একই গ্রামের মাদ্রাসাপড়ুয়া ইয়াসমিনের দুই মাস ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মূলত প্রেমিকার ডাকে সাড়া দিয়ে দেখা করতে ৬ মে রাতে সিরাজ এসেছিল। এসএসসি পরীক্ষার্থীর মরদেহ ১০ মে দুপুরে উদ্ধারের পর তার বাবা শেখ ইকরাম আলী ১২ মে গভীর রাতে চারজনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতদের আসামি করে লোহাগড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

 

ওই মামলার ১৫ ঘণ্টার মধ্যে লোহাগড়া থানা পুলিশসহ জেলা পুলিশের একাধিক টিম তদন্তপূর্বক হত্যার রহস্য উন্মোচন করে। গ্রেপ্তারকৃত চার জন আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে হাজির করলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যার কথা স্বীকার করেন সবুর শেখ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের চরদৌলতপুর গ্রামের মৃত ইস্রাফিল শেখের ছেলে সবুর শেখ (৫২), সবুর শেখের স্ত্রী শাহিনা বেগম (৪৭), ছেলে জাহিদুল শেখ (২০), ও মেয়ে ইয়াসমিন খানম (১৬)।

এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি রক্তমাখা ছুরি, রক্তমাখা একটি কোদালের আছাড়ি জব্দ করে পুলিশ।

উল্লেখ্য, নিখোঁজের ৫ দিন পর গত বুধবার (১০ মে) দুপুরে সিরাজ শেখের ঝলসানো ও অর্ধগলিত মরদেহ তার বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে অব্দা রাস্তার পাশে শওকত হোসেন মিরুর আমবাগান থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত সিরাজ শেখ ইতনা ইউনিয়নের চর দৌলতপুর গ্রামের কৃষক শেখ ইকরাম আলীর ছোট ছেলে। সে চর দৌলতপুর সরস্বতী একাডেমি বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় তিনটি বিষয়ে অংশগ্রহণ করেছিল।