ঢাকা ১২:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
চাঁদাবাজির অভিযোগে সুনামগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ইমনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা কালিগঞ্জে হয়রানি, ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে বড়শিমলা কারবালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এইচপিভি টীকাদান কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন ডা: বুলবুল কবীর কালিগঞ্জে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও অসচ্ছল ব্যক্তিদের চেক বিতরণ দেশ নায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বেই আগামীর বাংলাদেশ গড়তে চাই – এ্যাডঃ সৈয়দ ইফতেখার আলী শ্যামনগরে আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবস্থাপনার উপর ওরিয়েন্টশন আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ নয়নতারা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে দোয়েল মহিলা উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে হরিণের মাংস সহ আটক দুই

গায়ে স্কুল ড্রেস আর পকেটে পাঁচটি টাকা থাকলেই যেখানে দুপুরে ডালভাত খেতে পারে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা

  • Sound Of Community
  • পোস্ট করা হয়েছে : ০৪:২১:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ মে ২০২৩
  • ৮৯ জন পড়েছেন ।

শুধু স্কুলশিক্ষার্থীদের জন্য দুপুরে ভাত খাওয়ার এই ‘প্যাকেজ’ চালু করেছেন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী ইউনিয়নের একজন হোটেল ব্যবসায়ী। গত ৭ বছর ধরে তিনি পাঁচ টাকায় শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবার খাওয়াচ্ছেন।
পাঁচ টাকার প্যাকেজের কথা জিজ্ঞেস করতেই বিপ্লব সরকার নামের সেই হোটেল ব্যবসায়ী বললেন, ‘গ্রামের অধিকাংশ বাচ্চাই বাড়ি থেকে টিফিন নিয়ে আসে না। অনেকেরই বেশী টাকা দিয়ে হোটেল থেকে দুপুরের খাবার কিনে খাওয়ার মতো সামর্থ্যও নেই। তাই তারা স্কুলে এসে টিফিনের সময় আশপাশের দোকান থেকে মুখরোচক সস্তা কিছু একটা হয়তো কিনে খায়। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্যও কিন্তু ক্ষতিকর। অথচ দুপুরে এক প্লেট ভাত খেতে পারলে এই কোমলমতি বাচ্চাদের শরীরটা ভালো থাকে।’ এই চিন্তা থেকেই বিপ্লব সরকার সাত বছর আগে এই প্যাকেজ চালু করেন।
বিপ্লব সরকার বললেন, তিনি বাচ্চাদের কয়েকটি শর্তে খেতে দেন। তাঁর এই প্যাকেজ খেতে হলে অবশ্যই স্কুল ড্রেস পরে আসতে হবে। আর খাবার আগে বা পরে বাইরের দোকানে অন্য কোনো মুখরোচক খাবার খাওয়া যাবে না। বিপ্লব সরকার দেখেছেন বেশির ভাগ বাচ্চাই এক প্লেটের বেশি ভাত খেতে পারে না। তিনি ভাতের সঙ্গে সবজি আর ডাল দিয়ে একটি প্যাকেজ তৈরি করেছেন। খাবার সময় তিনি খেয়াল করেন, কোনো বাচ্চা যেন সবজি নষ্ট না করে।
বিপ্লব বলেন, ‘শরীরের জন্য সবজির বড় প্রয়োজন। আমি তাই সবজি খেতে বাধ্য করি। টমেটোর মৌসুমে টমেটোর সালাদ খেতে বাধ্য করি। টোটাল প্যাকেজটাই ৫ টাকা। তবে পাশাপাশি খেতে বসে কোনো বাচ্চা যদি বেশি টাকা দিয়ে মুরগির মাংস খেতে চায় তাহলে আমি পাশের বাচ্চাটাকেও ছোট এক টুকরা মুরগির মাংস ও একটু ঝোল দিই যেন সে বাচ্চাটার মন খারাপ না হয়।
বিপ্লব সরকার মনের আনন্দে এটা করছেন বলে জানান। সেবার মানসিকতা থেকে করছেন। কারণ, তিনি পরিবারের আর্থিক অনটনের কারনে এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেননি! লেখাপড়া না করে তিনি কী যে ভুল করেছেন এখন তিনি বুঝতে পারেন। এ জন্য যে বাচ্চারা লেখাপড়া শিখছে, তারা যেন শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে পারে, তার জন্য তিনি তাঁর সাধ্যের মধ্যে যতটুকু পারছেন, সহযোগিতা করছেন।
বিপ্লব সরকারের মতো মানুষ এদেশে আছে বলেই দেশটা এখনো এতো সুন্দর। এমন মহানুভবতা কজনই বা দেখাতে পারে।

Tag :
রিপোর্টার সম্পর্কে

Sound Of Community

জনপ্রিয় সংবাদ

চাঁদাবাজির অভিযোগে সুনামগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ইমনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

গায়ে স্কুল ড্রেস আর পকেটে পাঁচটি টাকা থাকলেই যেখানে দুপুরে ডালভাত খেতে পারে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা

পোস্ট করা হয়েছে : ০৪:২১:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ মে ২০২৩

শুধু স্কুলশিক্ষার্থীদের জন্য দুপুরে ভাত খাওয়ার এই ‘প্যাকেজ’ চালু করেছেন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী ইউনিয়নের একজন হোটেল ব্যবসায়ী। গত ৭ বছর ধরে তিনি পাঁচ টাকায় শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবার খাওয়াচ্ছেন।
পাঁচ টাকার প্যাকেজের কথা জিজ্ঞেস করতেই বিপ্লব সরকার নামের সেই হোটেল ব্যবসায়ী বললেন, ‘গ্রামের অধিকাংশ বাচ্চাই বাড়ি থেকে টিফিন নিয়ে আসে না। অনেকেরই বেশী টাকা দিয়ে হোটেল থেকে দুপুরের খাবার কিনে খাওয়ার মতো সামর্থ্যও নেই। তাই তারা স্কুলে এসে টিফিনের সময় আশপাশের দোকান থেকে মুখরোচক সস্তা কিছু একটা হয়তো কিনে খায়। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্যও কিন্তু ক্ষতিকর। অথচ দুপুরে এক প্লেট ভাত খেতে পারলে এই কোমলমতি বাচ্চাদের শরীরটা ভালো থাকে।’ এই চিন্তা থেকেই বিপ্লব সরকার সাত বছর আগে এই প্যাকেজ চালু করেন।
বিপ্লব সরকার বললেন, তিনি বাচ্চাদের কয়েকটি শর্তে খেতে দেন। তাঁর এই প্যাকেজ খেতে হলে অবশ্যই স্কুল ড্রেস পরে আসতে হবে। আর খাবার আগে বা পরে বাইরের দোকানে অন্য কোনো মুখরোচক খাবার খাওয়া যাবে না। বিপ্লব সরকার দেখেছেন বেশির ভাগ বাচ্চাই এক প্লেটের বেশি ভাত খেতে পারে না। তিনি ভাতের সঙ্গে সবজি আর ডাল দিয়ে একটি প্যাকেজ তৈরি করেছেন। খাবার সময় তিনি খেয়াল করেন, কোনো বাচ্চা যেন সবজি নষ্ট না করে।
বিপ্লব বলেন, ‘শরীরের জন্য সবজির বড় প্রয়োজন। আমি তাই সবজি খেতে বাধ্য করি। টমেটোর মৌসুমে টমেটোর সালাদ খেতে বাধ্য করি। টোটাল প্যাকেজটাই ৫ টাকা। তবে পাশাপাশি খেতে বসে কোনো বাচ্চা যদি বেশি টাকা দিয়ে মুরগির মাংস খেতে চায় তাহলে আমি পাশের বাচ্চাটাকেও ছোট এক টুকরা মুরগির মাংস ও একটু ঝোল দিই যেন সে বাচ্চাটার মন খারাপ না হয়।
বিপ্লব সরকার মনের আনন্দে এটা করছেন বলে জানান। সেবার মানসিকতা থেকে করছেন। কারণ, তিনি পরিবারের আর্থিক অনটনের কারনে এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেননি! লেখাপড়া না করে তিনি কী যে ভুল করেছেন এখন তিনি বুঝতে পারেন। এ জন্য যে বাচ্চারা লেখাপড়া শিখছে, তারা যেন শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে পারে, তার জন্য তিনি তাঁর সাধ্যের মধ্যে যতটুকু পারছেন, সহযোগিতা করছেন।
বিপ্লব সরকারের মতো মানুষ এদেশে আছে বলেই দেশটা এখনো এতো সুন্দর। এমন মহানুভবতা কজনই বা দেখাতে পারে।