পন্ডিত রবিশঙ্করের আদি বাড়ি ছিল বাংলাদেশের নড়াইলের কালিয়ায়। ১৯২০ সালের ৭ এপ্রিল তিনি জন্ম নেন ভারতের বেনারসে। বাবা পণ্ডিত শ্যামশঙ্কর চৌধুরী খ্যাত ছিলেন তাঁর পাণ্ডিত্য, আভিজাত্য ও শৌখিনতার জন্য।
পণ্ডিত শ্যামশঙ্কর ছিলেন প্রকৃত অর্থেই পণ্ডিত। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে তাঁর অধিকার ছিল অসাধারণ মানের। অবশ্য রবিশঙ্করকে বেশ আকর্ষণ করতেন তাঁর দাদা উদয় শংকর ।
দাদার স্নেহ ভালোবাসা ও একান্ত সান্নিধ্যে উদয় শংকরের কাছ থেকেই রবিশঙ্কর পেয়েছেন ভারতীয় সংস্কৃতি, শিল্প ও ঐতিহ্যের প্রথম পাঠ। দাদার হাত ধরেই একটা সময় নৃত্যকলায় আগ্রহী হয়ে উঠেন রবিশঙ্কর।
শৈশব কৈশোর কাল থেকেই নৃত্যকলা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ১৯৩০ সালে মাত্র ১০ বছর বয়সে বড় ভাইয়ের নাচের দলের সাথে প্যারিস ভ্রমণ করেন তিনি।
রবিশঙ্কর মাত্র তিন বছরের মাথায়ই নাচের দলের সদস্যপদ লাভ করেন। নাচে পারদর্শী হয়ে বিভিন্ন প্রোগ্রামের মারফতে ভ্রমণ করেন ইউরোপ ও অ্যামেরিকা।
উদয় শংকর যখন অনুভব করে দেখতে পেলেন অনুজ পণ্ডিত রবি শঙ্করের মধ্যে নৃত্যকলার চেয়ে সংগীতের প্রতি প্রবল আগ্রহ ও দ্যুতি রয়েছে। তখনই তিনি সাব্যস্ত করলেন রবি শঙ্করের প্রতিভা উন্মোচনের যথাযথ ব্যবস্থা করা উচিৎ।
একটা সময় তিনি অনুজকে নিয়ে এসে তৎকালীন খ্যাতিমান সঙ্গীতজ্ঞ উস্তাদ আলাউদ্দীন খান এর মাইহারে এনে সংগীত চর্চ ও প্রশিক্ষণের জন্য সঠিক গুরুর হাতে তুলে দিলেন ভাইকে।
আর এভাবেই নিজের অধ্যবসা ও নিরলসভাবে সাধনার মাধ্যমে নৃত্যশিল্পী থেকে রবি শঙ্কর হয়ে উঠেন একজন স্বনামধন্য বিশ্বখ্যাত সেতারবাদক।
ছবি সৌজন্যে: মৌমিতা রায় চৌধুরী