ঢাকা ০৮:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ নয়নতারা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে দোয়েল মহিলা উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে হরিণের মাংস সহ আটক দুই সাতক্ষীরা সাস্থ্য উন্নয়ন কমিটির বর্ধিত সভায় ২৬ অক্টোবর খুলনা রোড মোড় মানব বন্ধনের সিদ্ধান্ত খুলনা প্রেসক্লাবে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি উপ-পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযান অনুষ্ঠিত  কালিগঞ্জে তরুন দলের কমিটি গঠন সভাপতি সুলতান,সম্পাদক আলতাপ পানি নিষ্কাশনে ইউএনও,র প্রাণপণ চেষ্টা অব্যহত তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন আবারও পানিবন্ধী বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ সঃ কে কটুক্তির প্রতিবাদে রূপসা বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

মফস্বল সাংবাদিকতার ও সাংবাদ

  • Sound Of Community
  • পোস্ট করা হয়েছে : ১০:৩১:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল ২০২৩
  • ১০২ জন পড়েছেন ।

আব্দুর রহিম, নিজস্ব প্রতিনিধি:

সমাজ বদলানোর দায় কি শুধু সাংবাদিকদের? কী দরকার সমাজকে বদলাতে যাওয়ার? আমার জীবনের কি মায়া নেই? আমার বাবা-মা’র কি আমাকে ঘিরে কোনো আশা নেই? স্বপ্ন নেই? আমরা যারা মফস্বল সাংবাদিকতা করি তারা কি মানুষ না? অনেকেই ভাবছেন- তাহলে করছেন কেন, ছেড়ে দিন। ঠিক তখনই মনে হয়- পেশা নয়, এ যে এক বড় নেশা! এটাই যে মফস্বল সাংবাদিকের জীবন।
বাংলাদেশে সাংবাদিকতার উজ্জ্বল ইতিহাস কম নয়। সাংবাদিকতার পেশাগত দক্ষতা ও মেধার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য দিকপাল।

যাঁদের অনন্য অবদানের কথা মানুষ আজো শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। যারা তাদের কর্মযজ্ঞের দ্বারা নিজে আলোকিত হয়েছেন, গণমাধ্যমকেও করেছেন সমৃদ্ধ। আজ সাংবাদিকতা তারুণ্যের কাছে শীর্ষ পেশার পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু যে সাংবাদিকতা আজো সংবাদ তথা গণমাধ্যমের প্রাণ শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখছে, তা হলো মফস্বল সাংবাদিকতা। কিন্তু এই গৌরবোজ্জ্বল মফস্বল সাংবাদিকতার মাঝেই যেন ভূত লুকিয়ে আছে, প্রচলিত কথায় যাকে বলে সর্ষের মধ্যেই ভূত লুকিয়ে থাকা।

আমরা অনেকেই হলুদ সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে কথা বলি। বলি সুস্থ্যধারার সাংবাদিকতার উৎকর্ষের কথা। কিন্তু ভেতরের সমস্যাগুলোর উত্তরণ না ঘটা পর্যন্ত, মফস্বল সাংবাদিকতার এ সমস্যার সমাধান অধরাই থেকে যাবে। এ কথা অনেকেই বুঝেও বুঝতে চায় না। এমনি প্রতিষ্ঠান প্রধানরা দেখেও না দেখার ভান করেন। প্রত্যেকটা পেশাতেই একটি নির্দিষ্ট পেশাগত ন্যূনতম যোগ্যতার মাপকাঠি কোন সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান দ্বারা নির্ধারিত থাকে। কিন্তু সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেই এ ধরণের কোন মাপকাঠি এখনো নির্ধারিত হয় নি। প্রেস কাউন্সিল এ ব্যাপারে একটু আওয়াজ তুললেও তা আলোর মুখ দেখেনি। শুধু তাই নয়, সব পেশাতেই কর্মীর জন্য অর্থনৈতিক ও অন্যান্য আকর্ষনীয় সুবিধাদি বরাদ্দই থাকে। সে বিবেচনায় সাংবাদিকতা পেশায় কর্মরত মানুষ, নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হতে এ ধরণের যুগোপযোগী সুবিধাদি প্রত্যাশা করতেই পারে, আর তা প্রত্যাশা করা অমূলকও নয়।

একজন সাংবাদিক কে হতে হবে দক্ষ, প্রজ্ঞা আর মেধা সম্পন্ন মানুষ। কিন্তু মফস্বল সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে অনেক সময়ই এটির সম্মিলন ঘটে না। এর উপযুক্ত কারণও আছে, কারণ প্রত্যেকটি পেশাজীবিই চায়, তার পেশার উৎসতেই পূর্ণ সময় ব্যয়ের মাধ্যমে নিজ ও পরিবারের অর্থনৈতিক চাহিদার স্বমন্বয় ঘটাতে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই মফস্বল সাংবাদিকদের এ প্রত্যাশা পূরণ করা প্রায় অসম্ভব। গুটি কয়েক স্বনামধন্য পত্রিকা ছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিক মতো সাংবাদিকদের খোঁজ-খবর বা বেতনই দেয় না। কিন্তু পত্রিকার পাতা খুললেই যে খবরগুলো আমাদের চোঁখে পড়ে, যে সংবাদগুলো একটা দৈনিকের প্রাণ হয়ে দাড়ায়, সে মফস্বল সাংবাদিকদের খবর কেউ রাখে না। তারা কতটুকু কষ্ট, ঝুঁকি নিয়ে সংবাদগুলো সংগ্রহ করছে, কতটা সময় ব্যয় করে একটা প্রতিবেদন তৈরি করছে, সে খবরই বা আমরা ক-জন রাখি? অনেক ক্ষেত্রেই সংবাদের পেছনে ছুটতে গিয়ে সন্তান-পরিবার-পরিজনকেও ঠিকভাবে সময় দিতে পারেন না। কিছুটা যেন অন্তহীন দৌড়! কখনো সংবাদ প্রকাশের কারণে আইনী জটিলতায় পড়ে আদালতের কাঠগড়ায়, কখনো স্থানীয় প্রভাবশালীর শিকার হয়ে আহত শরীর নিয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করা। এ সবই মফস্বল সাংবাদিকদের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনার সারাংশ। তবুও নেই সাহায্যের হাত বাড়ানোর মানুষ, নেই আইনী লড়াইয়ের সক্ষমতা। কিন্তু অনেকেই এসকল ঝামেলায় না জড়িয়ে উল্টো পথে যাত্রা করেন, যাদের অনেক সাংবাদিককেই স্থানীয়রা সাংবাদিক এর বদলে সাংঘাতিক বলে আখ্যায়িত করে। স্থানীয়দের মতে, সাংবাদিকতা মানে ধান্ধাবাজি করা। আর তাই এসকল মফস্বল সাংবাদিকের ক্ষেত্রে এধরণের ঝামেলা তো ঘটেই না, বরং স্থানীয় প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে সাংবাদিক পরিচয়ের বদৌলতে জুটে জামাই আদর। সবই যেন ভূতের কারসাজি।

লেখক :

আব্দুর রহিম, সদস্য সচিব,
জ্যোতির্ময় কালিগঞ্জ (সামাজিক সংগঠন).

Tag :
রিপোর্টার সম্পর্কে

Sound Of Community

জনপ্রিয় সংবাদ

আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ

মফস্বল সাংবাদিকতার ও সাংবাদ

পোস্ট করা হয়েছে : ১০:৩১:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল ২০২৩

আব্দুর রহিম, নিজস্ব প্রতিনিধি:

সমাজ বদলানোর দায় কি শুধু সাংবাদিকদের? কী দরকার সমাজকে বদলাতে যাওয়ার? আমার জীবনের কি মায়া নেই? আমার বাবা-মা’র কি আমাকে ঘিরে কোনো আশা নেই? স্বপ্ন নেই? আমরা যারা মফস্বল সাংবাদিকতা করি তারা কি মানুষ না? অনেকেই ভাবছেন- তাহলে করছেন কেন, ছেড়ে দিন। ঠিক তখনই মনে হয়- পেশা নয়, এ যে এক বড় নেশা! এটাই যে মফস্বল সাংবাদিকের জীবন।
বাংলাদেশে সাংবাদিকতার উজ্জ্বল ইতিহাস কম নয়। সাংবাদিকতার পেশাগত দক্ষতা ও মেধার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য দিকপাল।

যাঁদের অনন্য অবদানের কথা মানুষ আজো শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। যারা তাদের কর্মযজ্ঞের দ্বারা নিজে আলোকিত হয়েছেন, গণমাধ্যমকেও করেছেন সমৃদ্ধ। আজ সাংবাদিকতা তারুণ্যের কাছে শীর্ষ পেশার পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু যে সাংবাদিকতা আজো সংবাদ তথা গণমাধ্যমের প্রাণ শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখছে, তা হলো মফস্বল সাংবাদিকতা। কিন্তু এই গৌরবোজ্জ্বল মফস্বল সাংবাদিকতার মাঝেই যেন ভূত লুকিয়ে আছে, প্রচলিত কথায় যাকে বলে সর্ষের মধ্যেই ভূত লুকিয়ে থাকা।

আমরা অনেকেই হলুদ সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে কথা বলি। বলি সুস্থ্যধারার সাংবাদিকতার উৎকর্ষের কথা। কিন্তু ভেতরের সমস্যাগুলোর উত্তরণ না ঘটা পর্যন্ত, মফস্বল সাংবাদিকতার এ সমস্যার সমাধান অধরাই থেকে যাবে। এ কথা অনেকেই বুঝেও বুঝতে চায় না। এমনি প্রতিষ্ঠান প্রধানরা দেখেও না দেখার ভান করেন। প্রত্যেকটা পেশাতেই একটি নির্দিষ্ট পেশাগত ন্যূনতম যোগ্যতার মাপকাঠি কোন সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান দ্বারা নির্ধারিত থাকে। কিন্তু সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেই এ ধরণের কোন মাপকাঠি এখনো নির্ধারিত হয় নি। প্রেস কাউন্সিল এ ব্যাপারে একটু আওয়াজ তুললেও তা আলোর মুখ দেখেনি। শুধু তাই নয়, সব পেশাতেই কর্মীর জন্য অর্থনৈতিক ও অন্যান্য আকর্ষনীয় সুবিধাদি বরাদ্দই থাকে। সে বিবেচনায় সাংবাদিকতা পেশায় কর্মরত মানুষ, নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হতে এ ধরণের যুগোপযোগী সুবিধাদি প্রত্যাশা করতেই পারে, আর তা প্রত্যাশা করা অমূলকও নয়।

একজন সাংবাদিক কে হতে হবে দক্ষ, প্রজ্ঞা আর মেধা সম্পন্ন মানুষ। কিন্তু মফস্বল সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে অনেক সময়ই এটির সম্মিলন ঘটে না। এর উপযুক্ত কারণও আছে, কারণ প্রত্যেকটি পেশাজীবিই চায়, তার পেশার উৎসতেই পূর্ণ সময় ব্যয়ের মাধ্যমে নিজ ও পরিবারের অর্থনৈতিক চাহিদার স্বমন্বয় ঘটাতে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই মফস্বল সাংবাদিকদের এ প্রত্যাশা পূরণ করা প্রায় অসম্ভব। গুটি কয়েক স্বনামধন্য পত্রিকা ছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিক মতো সাংবাদিকদের খোঁজ-খবর বা বেতনই দেয় না। কিন্তু পত্রিকার পাতা খুললেই যে খবরগুলো আমাদের চোঁখে পড়ে, যে সংবাদগুলো একটা দৈনিকের প্রাণ হয়ে দাড়ায়, সে মফস্বল সাংবাদিকদের খবর কেউ রাখে না। তারা কতটুকু কষ্ট, ঝুঁকি নিয়ে সংবাদগুলো সংগ্রহ করছে, কতটা সময় ব্যয় করে একটা প্রতিবেদন তৈরি করছে, সে খবরই বা আমরা ক-জন রাখি? অনেক ক্ষেত্রেই সংবাদের পেছনে ছুটতে গিয়ে সন্তান-পরিবার-পরিজনকেও ঠিকভাবে সময় দিতে পারেন না। কিছুটা যেন অন্তহীন দৌড়! কখনো সংবাদ প্রকাশের কারণে আইনী জটিলতায় পড়ে আদালতের কাঠগড়ায়, কখনো স্থানীয় প্রভাবশালীর শিকার হয়ে আহত শরীর নিয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করা। এ সবই মফস্বল সাংবাদিকদের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনার সারাংশ। তবুও নেই সাহায্যের হাত বাড়ানোর মানুষ, নেই আইনী লড়াইয়ের সক্ষমতা। কিন্তু অনেকেই এসকল ঝামেলায় না জড়িয়ে উল্টো পথে যাত্রা করেন, যাদের অনেক সাংবাদিককেই স্থানীয়রা সাংবাদিক এর বদলে সাংঘাতিক বলে আখ্যায়িত করে। স্থানীয়দের মতে, সাংবাদিকতা মানে ধান্ধাবাজি করা। আর তাই এসকল মফস্বল সাংবাদিকের ক্ষেত্রে এধরণের ঝামেলা তো ঘটেই না, বরং স্থানীয় প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে সাংবাদিক পরিচয়ের বদৌলতে জুটে জামাই আদর। সবই যেন ভূতের কারসাজি।

লেখক :

আব্দুর রহিম, সদস্য সচিব,
জ্যোতির্ময় কালিগঞ্জ (সামাজিক সংগঠন).