নিজস্ব প্রতিনিধি:
আশাশুনিতে সড়কের দুই পাশে কয়েক হাজার মরা গাছ মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। গাছের ডাল ভেঙে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সম্প্রতি সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের ছাত্তারের বিল এলাকায় সড়কের দুই পাশে কয়েক হাজার মরা গাছ মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। গাছের ডাল ভেঙে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সম্প্রতি সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের ছাত্তারের বিল এলাকায় ২৪ কিলোমিটার সড়কে এসব গাছ ভেঙে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।এক বছর ধরে গাছগুলো শুকিয়ে মরে গেছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় স্থানীয় বাসিন্দারা গাছ কাটার দাবি জানিয়েছেন। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। সাতক্ষীরার সঙ্গে আশাশুনির সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যম এই সড়ক।
প্রায় ২০ বছর আগে এ সড়কের দুই পাশে কয়েক হাজার রেইন্ট্রি লাগায় সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ ও স্থানীয় লোকজন। কিন্তু বছর খানেক আগে লম্বা লম্বা গাছগুলো শুকিয়ে যেতে থাকে। বর্তমানে গাছগুলো একেবারে শুকিয়ে গেছে। ঝড়-বৃষ্টিতে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে। অনেক সময় সাইকেল, মোটরসাইকেলের চালক ও পথচারীরা ছোটখাট দুর্ঘটনার শিকার হন।
সড়কের পাশের গাছ মরার সুনির্দিষ্ট কারণ জানা যায়নি। সাতক্ষীরা বন বিভাগের কর্মকর্তা জিএম ফারুফ বিল্লাহর ধারণা, মাঠিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বৃদ্ধির পাশাপাশি এক ধরনের পোকার কারণে এসব গাছ দ্রুত মরে শুকিয়ে যাচ্ছে। জিএম ফারুফ বিল্লাহ বলেন, চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের কয়েকজন কর্মকর্তা এসে মরা গাছ দেখে গেছেন। তাঁরা গাছের নমুনা ও পোকা নিয়ে গেছেন। সেখান থেকে প্রতিবেদন পাওয়া গেলে গাছ মরার প্রকৃত কারণ বলা যাবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের ভালুকা চাঁদপুর, সাত্তারের মিল, কোমরপুর, কুল্যার মোড় বাঁকা সড়কের কাদাকাটি, বুধহাটা শোভনালী, গোয়ালডাঙ্গা বড়দল এলাকায় অসংখ্য অর্ধমৃত ও শুকিয়ে যাওয়া রেইন্ট্রি।
কুল্যা এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক হাসান ইকবাল বলেন, গাছগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় বড় ধরনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ যাতায়াত করছে। সামান্য ঝড় কিম্বা বৃষ্টি হলে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে। বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটায় আগেই এসব গাছ কেটে সরিয়ে নেওয়া দরকার।
ভালুকা চাঁদপুর গ্রামের মনির হোসেন বলেন, সাতক্ষীরা-আশাশুনি ব্যস্ততম একটি সড়ক। সড়কের দুই পাশে মরা গাছের কারণে আতঙ্কের মধ্য দিয়ে রাত-দিন যাতায়াত করতে হয়।
আশাশুনির কুল্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর সাকি ফেরদৌস বলেন, সড়কের দুই পাশে কয়েক হাজার রেইন্ট্রি এক বছরের বেশি সময় ধরে শুকিয়ে আছে। বার বার জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। কারণ, গাছগুলো কেটে না নিলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তারপরও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আশাশুনি নাগরিক কমিটির সহ-সভাপতি সাংবাদিক জিএম মুজিবুর রহমান সাউন্ড অফ কমিউনিটি নিউজ কে বলেন, সড়কের দুই পাশের শুকিয়ে যাওয়া লম্বা গাছ অপসারণের জন্য জেলা পরিষদের একাধিকবার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু অপসারণ করা হচ্ছে না। লোকজনকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম প্রতিবেদককে বলেন, আশাশুনি-সাতক্ষীরা সড়কের দুই ধারে মরা গাছগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ জন্য দরপত্র আহ্বান করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সামনে আসন্ন কালবৈশাখী ছাড়া ঝড়ের মৌসুম দ্রুত এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। অতিদ্রুত এই সমস্ত গাছগুলো কাটা হোক এমনটাই দাবি এলাকাবাসীর।