সুভাষ চন্দ্র বসু যে শুধু একজন বিপ্লবীই নন , তিনি ছিলেন একজন অত্যন্ত মহান মানবপ্রেমিক ।
সুভাষ চন্দ্র বসু কে নিয়ে বিশিষ্ট ভাষাতত্ত্ববিদ গবেষক ড:মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সমর গুহ কে, কি বলেছিলেন একটু দেখে নেওয়া যাক ———-”
ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদের প্রথম কূটনৈতিক চাল ছিল ভারতে সাম্প্রদায়িক বিচ্ছিন্নতার বীজ বপন করা। বহু আগেই সেই বীজ বপন করে তাকে এক সর্বনাশা মহীরুহে পরিণত করার চেষ্টা করতে থাকে তারা। এই ভয়ানক চক্রান্ত শুরু হয়ে ছিল ১৮৩৩ মেকলে সাহেবের হাত ধরেই। সুভাষ চন্দ্র সেই বিষবৃক্ষের গোড়া ধরে একটা হেঁচকা টান মারতে চেয়েছিলেন।
বিশিষ্ট ভাষাতত্ত্ববিদ গবেষক ড:মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সমর গুহ কে বলে ছিলেন “আমি নেতাজীর চরিত্র দেখে বিস্মিত হই। ভেতো বাঙালির ঘরে জন্মে তিনি কি করে ডিনামাইটের মতো তেজস্ক্রিয়তা পেলেন তাই শুধু ভাবি।”
শহীদুল্লা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত ভাষার গবেষক ও অধ্যাপক ছিলেন | অনেকেই এক মুসলমানের সংস্কৃত ভাষার অধ্যাপক হওয়াকে মেনে নিতে পারেননি কিন্তু শহীদুল্লাহর অগাধ পান্ডিত্য মুগ্ধ করেছিল পন্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ও রবীন্দ্রনাথকে। সুভাষ চন্দ্র তাঁর সংস্কৃতের অধ্যাপক রূপে নিয়োগ কে পূর্ণচিত্তে স্বাগত জানান। আজীবন শহীদুল্লা ছিলেন নেতাজীর গুনগ্রাহী । নেতাজীর সকল অনুগামী তাঁর প্রিয় পাত্র ছিলো।সমর গুহ কে খুব ভালবাসতেন তিনি । ড: শহীদুল্লা একটি ব্যক্তিগত আলাপ চারণায় বলেছিলেন “দেশ বলতে কেবল দেশের মাটি নয়,দেশের সকল মানুষ ছিল তাঁর প্রেমের পাত্র । সেখানে ধর্ম, ভাষা,বর্ণের কোনো ভেদ ছিল না,তিনি জাতিভেদ কে ঘৃণা করতেন। তাঁর কাছে হিন্দু,মুসলমান,বৌদ্ধ, খ্রিস্টান,বাঙালি,পাঞ্জাবী, হিন্দুস্তানী ,মাদ্রাজী, ব্রাহ্মণ, শুদ্র সকলেই মানুষ” !
বই : হিন্দু মুসলিম প্রসঙ্গে সুভাষ চন্দ্র — লিখছেন সৌমব্রত দাসগুপ্ত