ঢাকা ১২:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
কালিগঞ্জে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও অসচ্ছল ব্যক্তিদের চেক বিতরণ দেশ নায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বেই আগামীর বাংলাদেশ গড়তে চাই – এ্যাডঃ সৈয়দ ইফতেখার আলী শ্যামনগরে আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবস্থাপনার উপর ওরিয়েন্টশন আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ নয়নতারা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে দোয়েল মহিলা উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে হরিণের মাংস সহ আটক দুই সাতক্ষীরা সাস্থ্য উন্নয়ন কমিটির বর্ধিত সভায় ২৬ অক্টোবর খুলনা রোড মোড় মানব বন্ধনের সিদ্ধান্ত খুলনা প্রেসক্লাবে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি উপ-পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযান অনুষ্ঠিত 

বিশ্ব বেতার দিবস ও শান্তির মিছিল

  • Sound Of Community
  • পোস্ট করা হয়েছে : ০৯:৪৯:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ১৮৮ জন পড়েছেন ।

বিশ্ব বেতার দিবস (ইংরেজিতে World Radio Day ওয়ার্ল্ড রেডিও ডে; ফরাসিতে Le jour mondial de la radio ল্য জুর মোঁদিয়াল দ্য লা রাদিও) একটি আন্তর্জাতিক দিবস যা প্রতি বছর ১৩ই ফেব্রুয়ারি পালন করা হয়। এই দিবসের লক্ষ্য জনসাধারণের মাঝে ও সংবাদমাধ্যমে বেতারের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদেরকে বেতারের মাধ্যমে তথ্য যেন সুলভ্যতা নিশ্চিত করা এবং বেতার সম্প্রচারকদের মধ্যবর্তী আন্তর্জাতিক সহায়তা ও পারস্পরিক মতামত ও তথ্য বিনিময় জোরদার করা। ২০১৪ সালে ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনের ৩৬তম অধিবেশনে ১৩ই ফেব্রুয়ারি তারিখে বিশ্ব বেতার দিবস ঘোষণা করা হয়। ২০১১ সালে স্পেনের আকাদেমিয়া এস্পানিওলা দে রাদিও-র একটি প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ইউনেস্কো পরিচালিত একটি বাস্তবায়নযোগ্যতা সমীক্ষার ভিত্তিতে ইউনেস্কোর নির্বাহী পরিষদ সাধারণ সম্মেলনে বিশ্ব বেতার দিবস ঘোষণার ব্যাপারে সুপারিশ করেন। উল্লেখ্য ১৯৪৬ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি তারিখে জাতিসংঘের নিজস্ব বেতারকেন্দ্রটি যাত্রা শুরু করে। তার পর থেকে দেশে দেশে বেতার কেন্দ্রের যাত্রা শুরু।

বাংলাদেশ ঢাকাতে রেডিও সম্প্রচার শুরু হয় ১৬ই ডিসেম্বর, ১৯৩৯ সালে। প্রথম দিকে কেন্দ্রটি পুরনো ঢাকায় নাজিমুদ্দিন রোডে একটি ভাড়া করা বাড়িতে (বর্তমানে যেটি শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ) যাত্রা শুরু করে। প্রথম নামকরণ করা হয় “ঢাকা ধ্বনি বিস্তার কেন্দ্র”। পরবর্তীতে কেন্দ্রটি শাহবাগে স্থানান্তর করা হয়। রেডিওটি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ তারিখে সম্প্রচার কেন্দ্র রেডিও পাকিস্তান স্বাধীনতার ঘোষণা সম্প্রচার করা হয়।যা চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙ্গররত একটি জাপানী জাহাজ থেকে শোনা গিয়েছিল এবং তা পুনসম্প্রচার করা হয়েছিল। যুদ্ধের সময় এটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র নামে পরিচিত ছিল। ভারী গোলা বর্ষণের কারণে বেতারকেন্দ্রটি কয়েকবার স্থানান্তর করা হয়েছিল।শেষে ২৫শে মে তারিখে কলকাতাতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল, যেখান থেকে যুদ্ধের বাকি সময় পর্যন্ত অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হতো। ডিসেম্বর ৬ তারিখে বেতারকেন্দ্রটিকে বাংলাদেশ বেতার নাম দেওয়া হয়। বাংলাদেশ বেতার বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বেতার সংস্থা।  ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এটি রেডিও বাংলাদেশ নামে পরিচিত ছিল।

বেতার এমন একটি গণমাধ্যম পৃথিবীতে যার ব্যাপ্তি অন্য সব গণমাধ্যম অপেক্ষা বেশি। এটি একাধারে যোগাযোগের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার এবং সাশ্রয়ী মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃত। দূরবর্তী জনসম্প্রদায় ও ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের কাছে (নিম্ন সাক্ষরতার হারবিশিষ্ট জনসম্প্রদায়, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, নারী, তরুণ-তরুণী এবং দারিদ্রতার শিকার ব্যক্তি) পৌঁছাতে বেতারের কোনও বিকল্প নেই। একই সাথে এটি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার স্তর নির্বিশেষে জনবিতর্কে মানুষের অংশগ্রহণের একটি মঞ্চ। অধিকন্তু, জরুরি অবস্থাকালীন যোগাযোগ ও বিপর্যয়কালীন ত্রাণকর্মে বেতার একটি শক্তিশালী ও নির্দিষ্ট ভূমিকা রাখে। বর্তমানে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সমধর্মিতা হবার প্রবণতা বেড়ে গেছে, তাই বেতার সেবাগুলিও প্রযুক্তির নতুন নতুন রূপের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট, মুঠোফোন ও ট্যাবলেটে ভিন্ন ভিন্ন রূপে আবির্ভূত হচ্ছে। এত কিছু সত্ত্বেও বলা হচ্ছে যে বিশ্বের প্রায় ১ শত কোটি লোকের কাছে এখনও বেতার সেবা লভ্য নয়।

ড. সুজান ভাইজ, অফিসার-ইন-চার্জ ইউনেস্কো ঢাকা অফিস তিনি বিশ্ব বেতার দিবসে একটি বিশেষ বার্তা দিয়েছেন। তিনি তার বার্তাতে বলেন বেতার বা রেডিও হল এমন একটি মাধ্যম যা শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি মূল স্তম্ভ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। শুধু তথ্য প্রচার নয়, বরং সুষ্ঠ সংলাপ ও আলোচনাকেও বেতার উদ্দীপিত করে। প্রতিবছরের মতো এবারো ১৩ ফেব্রুয়ারি, ‘বেতার ও শান্তি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে ১২তম বিশ্ব বেতার দিবস উদযাপিত হচ্ছে। এই প্রতিপাদ্য আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় বেতার কিভাবে তৃণমূলের জনগোষ্ঠিকে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সম্পৃক্ত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যা সরকার, উন্নয়ন অংশীজন ও স্থানীয় সংগঠনসমূহকে সহায়তা করছে।
অনেক দেশে বেতার এখনও সর্বাধিক ব্যবহৃত যোগাযোগ মাধ্যম। বিশেষত দূর্গম এলাকায়, যেখানে সংযোগের অভাব রয়েছে এমন জনগোষ্ঠির কাছে বেতার সহজেই পৌঁছে যায়। বাংলাদেশে কমিউনিটি রেডিও তথ্য আদান প্রদানের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কাছে সর্বশেষ তথ্য, সমসাময়িক ঘটনাবলীর হালনাগাদ নিয়ে পৌছে যায় কমিউনিটি রেডিও। যেখানে কোন যুদ্ধ সংঘটিত হচ্ছে না এমন প্রেক্ষাপটে শান্তির সাথে সম্পর্কিত বার্তা অপ্রাসঙ্গিক মনে হতে পারে। তবে একতাবদ্ধ হয়ে বাঁচা, সহিংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানো এবং বৈচিত্র্যতাকে সম্মান জানানো- এসবই শান্তি প্রতিষ্ঠা ও বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ আহ্বান,যা রেডিওর মাধ্যমে নিয়মিত সম্প্রচার করা যেতে পারে।


ভুল ও ঘৃণা উদ্রেককারী বক্তব্যের বিরুদ্ধে অবস্থান, জেন্ডার সমতা এবং তথ্যের প্রাপ্তিতে সকলের অধিকার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে আমরা কাজ শুরু করতে পারি। যা সর্বোপরি শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে। ইউনেস্কো বিশ্বব্যাপী কমিউনিটি রেডিও সেক্টরের উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। আসুন, বাংলাদেশে বেতারের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যারা কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের সকলকে নিয়ে দিনটি উদযাপন করি। আসুন সবাই মিলে বিশ্ব বেতার দিবস উদযাপন করি

 

এবছর বিশ্ব বেতার দিবস ২০২৩ এর প্রতিপাদ্য “বেতার ও শান্তি” বেতার মানুষের তথ্য সেবা নিশ্চিৎ করতে যেমন কার্যকারী উপকরণ তেমনি শান্তি প্রতিষ্ঠাতে অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করছে। এটি আরো বেগবান করতে সম্প্রচার বেতারকর্মীদের কাজ করতে হবে। সমাজে নানা অসংগতি আছে যা আমরা নিজ উদ্যোগে সমাধান করতে পারি না দরকার সমষ্টিগত উদ্যোগ। বেতার বহু দুরের মানুষকে একান্ত কাছের করে দিতে পারে। তাই আসুন বিশ্ব বেতার দিবসে আমরা দেশের উন্নয়নে সুন্দর সমাজ গড়তে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিয়ে প্রতিষ্ঠা করি স্বর্গীয় শান্তি।

লেখক :

সেলিম শাহারীয়ার
গণমাধ্যম ও সমাজকর্মী

Tag :
রিপোর্টার সম্পর্কে

Sound Of Community

জনপ্রিয় সংবাদ

কালিগঞ্জে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও অসচ্ছল ব্যক্তিদের চেক বিতরণ

বিশ্ব বেতার দিবস ও শান্তির মিছিল

পোস্ট করা হয়েছে : ০৯:৪৯:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বিশ্ব বেতার দিবস (ইংরেজিতে World Radio Day ওয়ার্ল্ড রেডিও ডে; ফরাসিতে Le jour mondial de la radio ল্য জুর মোঁদিয়াল দ্য লা রাদিও) একটি আন্তর্জাতিক দিবস যা প্রতি বছর ১৩ই ফেব্রুয়ারি পালন করা হয়। এই দিবসের লক্ষ্য জনসাধারণের মাঝে ও সংবাদমাধ্যমে বেতারের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদেরকে বেতারের মাধ্যমে তথ্য যেন সুলভ্যতা নিশ্চিত করা এবং বেতার সম্প্রচারকদের মধ্যবর্তী আন্তর্জাতিক সহায়তা ও পারস্পরিক মতামত ও তথ্য বিনিময় জোরদার করা। ২০১৪ সালে ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনের ৩৬তম অধিবেশনে ১৩ই ফেব্রুয়ারি তারিখে বিশ্ব বেতার দিবস ঘোষণা করা হয়। ২০১১ সালে স্পেনের আকাদেমিয়া এস্পানিওলা দে রাদিও-র একটি প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ইউনেস্কো পরিচালিত একটি বাস্তবায়নযোগ্যতা সমীক্ষার ভিত্তিতে ইউনেস্কোর নির্বাহী পরিষদ সাধারণ সম্মেলনে বিশ্ব বেতার দিবস ঘোষণার ব্যাপারে সুপারিশ করেন। উল্লেখ্য ১৯৪৬ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি তারিখে জাতিসংঘের নিজস্ব বেতারকেন্দ্রটি যাত্রা শুরু করে। তার পর থেকে দেশে দেশে বেতার কেন্দ্রের যাত্রা শুরু।

বাংলাদেশ ঢাকাতে রেডিও সম্প্রচার শুরু হয় ১৬ই ডিসেম্বর, ১৯৩৯ সালে। প্রথম দিকে কেন্দ্রটি পুরনো ঢাকায় নাজিমুদ্দিন রোডে একটি ভাড়া করা বাড়িতে (বর্তমানে যেটি শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ) যাত্রা শুরু করে। প্রথম নামকরণ করা হয় “ঢাকা ধ্বনি বিস্তার কেন্দ্র”। পরবর্তীতে কেন্দ্রটি শাহবাগে স্থানান্তর করা হয়। রেডিওটি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ তারিখে সম্প্রচার কেন্দ্র রেডিও পাকিস্তান স্বাধীনতার ঘোষণা সম্প্রচার করা হয়।যা চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙ্গররত একটি জাপানী জাহাজ থেকে শোনা গিয়েছিল এবং তা পুনসম্প্রচার করা হয়েছিল। যুদ্ধের সময় এটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র নামে পরিচিত ছিল। ভারী গোলা বর্ষণের কারণে বেতারকেন্দ্রটি কয়েকবার স্থানান্তর করা হয়েছিল।শেষে ২৫শে মে তারিখে কলকাতাতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল, যেখান থেকে যুদ্ধের বাকি সময় পর্যন্ত অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হতো। ডিসেম্বর ৬ তারিখে বেতারকেন্দ্রটিকে বাংলাদেশ বেতার নাম দেওয়া হয়। বাংলাদেশ বেতার বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বেতার সংস্থা।  ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এটি রেডিও বাংলাদেশ নামে পরিচিত ছিল।

বেতার এমন একটি গণমাধ্যম পৃথিবীতে যার ব্যাপ্তি অন্য সব গণমাধ্যম অপেক্ষা বেশি। এটি একাধারে যোগাযোগের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার এবং সাশ্রয়ী মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃত। দূরবর্তী জনসম্প্রদায় ও ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের কাছে (নিম্ন সাক্ষরতার হারবিশিষ্ট জনসম্প্রদায়, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, নারী, তরুণ-তরুণী এবং দারিদ্রতার শিকার ব্যক্তি) পৌঁছাতে বেতারের কোনও বিকল্প নেই। একই সাথে এটি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার স্তর নির্বিশেষে জনবিতর্কে মানুষের অংশগ্রহণের একটি মঞ্চ। অধিকন্তু, জরুরি অবস্থাকালীন যোগাযোগ ও বিপর্যয়কালীন ত্রাণকর্মে বেতার একটি শক্তিশালী ও নির্দিষ্ট ভূমিকা রাখে। বর্তমানে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সমধর্মিতা হবার প্রবণতা বেড়ে গেছে, তাই বেতার সেবাগুলিও প্রযুক্তির নতুন নতুন রূপের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট, মুঠোফোন ও ট্যাবলেটে ভিন্ন ভিন্ন রূপে আবির্ভূত হচ্ছে। এত কিছু সত্ত্বেও বলা হচ্ছে যে বিশ্বের প্রায় ১ শত কোটি লোকের কাছে এখনও বেতার সেবা লভ্য নয়।

ড. সুজান ভাইজ, অফিসার-ইন-চার্জ ইউনেস্কো ঢাকা অফিস তিনি বিশ্ব বেতার দিবসে একটি বিশেষ বার্তা দিয়েছেন। তিনি তার বার্তাতে বলেন বেতার বা রেডিও হল এমন একটি মাধ্যম যা শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি মূল স্তম্ভ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। শুধু তথ্য প্রচার নয়, বরং সুষ্ঠ সংলাপ ও আলোচনাকেও বেতার উদ্দীপিত করে। প্রতিবছরের মতো এবারো ১৩ ফেব্রুয়ারি, ‘বেতার ও শান্তি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে ১২তম বিশ্ব বেতার দিবস উদযাপিত হচ্ছে। এই প্রতিপাদ্য আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় বেতার কিভাবে তৃণমূলের জনগোষ্ঠিকে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সম্পৃক্ত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যা সরকার, উন্নয়ন অংশীজন ও স্থানীয় সংগঠনসমূহকে সহায়তা করছে।
অনেক দেশে বেতার এখনও সর্বাধিক ব্যবহৃত যোগাযোগ মাধ্যম। বিশেষত দূর্গম এলাকায়, যেখানে সংযোগের অভাব রয়েছে এমন জনগোষ্ঠির কাছে বেতার সহজেই পৌঁছে যায়। বাংলাদেশে কমিউনিটি রেডিও তথ্য আদান প্রদানের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কাছে সর্বশেষ তথ্য, সমসাময়িক ঘটনাবলীর হালনাগাদ নিয়ে পৌছে যায় কমিউনিটি রেডিও। যেখানে কোন যুদ্ধ সংঘটিত হচ্ছে না এমন প্রেক্ষাপটে শান্তির সাথে সম্পর্কিত বার্তা অপ্রাসঙ্গিক মনে হতে পারে। তবে একতাবদ্ধ হয়ে বাঁচা, সহিংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানো এবং বৈচিত্র্যতাকে সম্মান জানানো- এসবই শান্তি প্রতিষ্ঠা ও বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ আহ্বান,যা রেডিওর মাধ্যমে নিয়মিত সম্প্রচার করা যেতে পারে।


ভুল ও ঘৃণা উদ্রেককারী বক্তব্যের বিরুদ্ধে অবস্থান, জেন্ডার সমতা এবং তথ্যের প্রাপ্তিতে সকলের অধিকার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে আমরা কাজ শুরু করতে পারি। যা সর্বোপরি শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে। ইউনেস্কো বিশ্বব্যাপী কমিউনিটি রেডিও সেক্টরের উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। আসুন, বাংলাদেশে বেতারের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যারা কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের সকলকে নিয়ে দিনটি উদযাপন করি। আসুন সবাই মিলে বিশ্ব বেতার দিবস উদযাপন করি

 

এবছর বিশ্ব বেতার দিবস ২০২৩ এর প্রতিপাদ্য “বেতার ও শান্তি” বেতার মানুষের তথ্য সেবা নিশ্চিৎ করতে যেমন কার্যকারী উপকরণ তেমনি শান্তি প্রতিষ্ঠাতে অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করছে। এটি আরো বেগবান করতে সম্প্রচার বেতারকর্মীদের কাজ করতে হবে। সমাজে নানা অসংগতি আছে যা আমরা নিজ উদ্যোগে সমাধান করতে পারি না দরকার সমষ্টিগত উদ্যোগ। বেতার বহু দুরের মানুষকে একান্ত কাছের করে দিতে পারে। তাই আসুন বিশ্ব বেতার দিবসে আমরা দেশের উন্নয়নে সুন্দর সমাজ গড়তে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিয়ে প্রতিষ্ঠা করি স্বর্গীয় শান্তি।

লেখক :

সেলিম শাহারীয়ার
গণমাধ্যম ও সমাজকর্মী