ঢাকা ১২:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
কালিগঞ্জে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও অসচ্ছল ব্যক্তিদের চেক বিতরণ দেশ নায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বেই আগামীর বাংলাদেশ গড়তে চাই – এ্যাডঃ সৈয়দ ইফতেখার আলী শ্যামনগরে আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবস্থাপনার উপর ওরিয়েন্টশন আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ নয়নতারা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে দোয়েল মহিলা উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে হরিণের মাংস সহ আটক দুই সাতক্ষীরা সাস্থ্য উন্নয়ন কমিটির বর্ধিত সভায় ২৬ অক্টোবর খুলনা রোড মোড় মানব বন্ধনের সিদ্ধান্ত খুলনা প্রেসক্লাবে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি উপ-পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযান অনুষ্ঠিত 

শ্যামনগরে বোরো আবাদে কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে

  • Sound Of Community
  • পোস্ট করা হয়েছে : ১২:০৬:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ৯৬ জন পড়েছেন ।

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি-

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় বোরো আবাদের প্রতি কৃষকের আগ্রহ দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে। বর্তমানে বোরো চাষে কৃষকরা সময় কাটাচ্ছেন। কৃষকের প্রধান ফসল আমন ঘরে উঠানোর সাথে সাথেই শুকনা মৌসুমের ধান বোরো আবাদের প্রতি কৃষকরা ব্যাপকভাবে ঝুঁকে পড়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোদাচ্ছের বিল্যা জানান, চলতি বোরো মৌসুমে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২১৯০ হেক্টর। গত বছর উপজেলায় বোরো চাষ হয়েছিল ২২০০ হেক্টর জমিতে এবং ফলনও ভাল ছিল। লবনাক্ত এলাকা শ্যামনগর উপজেলা হলেও লবন সহিষ্ণু ধান চাষে কৃষকের আগ্রহ বেশী।

উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউপির ধানখালী গ্রামের বোরো চাষি সুপদ বৈদ্য বলেন তিন বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হচ্ছে। গতবছর একই জমিতে বোরো ধানের চাষ করে ভাল ফসল পেয়েছেন। জেলেখালী গ্রামের বোরো চাষি নিরঞ্জন মন্ডল বলেন বোরো ধান চাষ তিনি বেশ কয়েক বছর যাবত করে আসছেন এবং ফলনও পাচ্ছেন ভাল। কিন্ত তিনি বলেন বোরো চাষের প্রধান অন্তরায় মিষ্টি পানির অভাব। যে সকল খাল এলাকায় রয়েছে সে গুলিতে লবন পানি ভরা থাকে, লিজ দেওয়া থাকে। আবার পলি পড়ে ভরাট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কৈখালী গ্রামের বোরো চাষি লুৎফর রহমান বলেন দুই বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে নিজস্ব পুকুরের পানি ও বৃষ্টির পানি ভরসা করে। তিনি বলেন এমন অনেক চাষি আছেন তারা তার মত আকাশ পানে চেয়ে থাকেন নিজস্ব সংরক্ষিত পানি ফুরিয়ে গেলে। এ জন্য তারা খাল গুলিতে মিষ্টি পানি সংরক্ষণের দাবী জানান।

শ্যামনগর ইউপির বোরো চাষি শেখ সিরাজুল ইসলাম বলেন উপজেলায় আমন ফসলের পর বোরো ধান চাষে কৃষকের আগ্রহ দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে। এ ক্ষেত্রে উপজেলার প্রতিটি ইউপির খাল গুলি পুনঃখনন করা, মিষ্টি পানি সংরক্ষণ করা ও বোরো চাষিদের মাঝে লিজ দেওয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার এস এম এনামুল ইসলাম জানান, শ্যামনগর উপজেলায় বোরো ধান চাষে কৃষকের আগ্রহ বেড়ে চলেছে যেভাবে সেক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। তিনি অনুমান করে বলেন ২৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হতে পারে। উপজেলায় এ পর্যন্ত ১৪০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়ে গেছে। উপজেলায় কৃষকরা লবন সহিষ্ণু জাত বিনা-১০, ব্রি-৬৭ ও হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করে থাকেন বলে জানা যায়। উপজেলা কৃষি অফিসার বলেন উপজেলায় ১২০টির অধিক খাল রয়েছে যে গুলি পুনঃখনন করে মিষ্টি পানি সংরক্ষণ করা হলে কৃষকরা শুকনা মৌসুমে বোরো ধান চাষ সহ অন্যান্য ফসল আবাদ করতে পারেন। এখানে মিষ্টি পানির সংকট রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। উপজেলায় লবনাক্তার প্রকোপ থাকলেও লবন সহিষ্ণু ধান চাষ করে কৃষকরা সফল হচ্ছেন বলে তিনি জানান। বর্তমানে জমিতে ৩/৪ পিপিটি পরিমান লবন রয়েছে বলে জানা যায়। উপজেলা কৃষি অফিসার এস এম এনামুল ইসলাম বোরো চাষিদের বেশি বেশি জৈব সার ব্যবহার করার কথা বলেছেন। এবং অতিরিক্ত ইউরিয়া সার ব্যবহার ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন। এবং লবনাক্ততার পরিমাপ মাপার জন্য অফিসে যোগাযোগ করতে বলেছেন।

শ্যামনগর উপজেলা চিংড়ী চাষের প্রবন এলাকা হলেও চিংড়ীতে বেশী লাভবান না হওয়ায় কৃষকরা আমন, বোরো ধান চাষ সহ অন্যান্য ফসল আবাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ছেন। মুন্সিগঞ্জ ,কৈখালী, রমজাননগর, ভূরুলিয়া, নুরনগর,শ্যামনগর সহ অন্যান্য ইউনিয়নে বোরো আবাদের ব্যাপকতা বেড়ে চলেছে। এলাকার সচেতন মহলের মতে জোনিং সিস্টেমে ধান ও চিংড়ী চাষ করা সময়ের দাবী বলে অনেকে মত প্রকাশ করেছেন।

Tag :
রিপোর্টার সম্পর্কে

Sound Of Community

জনপ্রিয় সংবাদ

কালিগঞ্জে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও অসচ্ছল ব্যক্তিদের চেক বিতরণ

শ্যামনগরে বোরো আবাদে কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে

পোস্ট করা হয়েছে : ১২:০৬:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি-

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় বোরো আবাদের প্রতি কৃষকের আগ্রহ দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে। বর্তমানে বোরো চাষে কৃষকরা সময় কাটাচ্ছেন। কৃষকের প্রধান ফসল আমন ঘরে উঠানোর সাথে সাথেই শুকনা মৌসুমের ধান বোরো আবাদের প্রতি কৃষকরা ব্যাপকভাবে ঝুঁকে পড়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোদাচ্ছের বিল্যা জানান, চলতি বোরো মৌসুমে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২১৯০ হেক্টর। গত বছর উপজেলায় বোরো চাষ হয়েছিল ২২০০ হেক্টর জমিতে এবং ফলনও ভাল ছিল। লবনাক্ত এলাকা শ্যামনগর উপজেলা হলেও লবন সহিষ্ণু ধান চাষে কৃষকের আগ্রহ বেশী।

উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউপির ধানখালী গ্রামের বোরো চাষি সুপদ বৈদ্য বলেন তিন বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হচ্ছে। গতবছর একই জমিতে বোরো ধানের চাষ করে ভাল ফসল পেয়েছেন। জেলেখালী গ্রামের বোরো চাষি নিরঞ্জন মন্ডল বলেন বোরো ধান চাষ তিনি বেশ কয়েক বছর যাবত করে আসছেন এবং ফলনও পাচ্ছেন ভাল। কিন্ত তিনি বলেন বোরো চাষের প্রধান অন্তরায় মিষ্টি পানির অভাব। যে সকল খাল এলাকায় রয়েছে সে গুলিতে লবন পানি ভরা থাকে, লিজ দেওয়া থাকে। আবার পলি পড়ে ভরাট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কৈখালী গ্রামের বোরো চাষি লুৎফর রহমান বলেন দুই বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে নিজস্ব পুকুরের পানি ও বৃষ্টির পানি ভরসা করে। তিনি বলেন এমন অনেক চাষি আছেন তারা তার মত আকাশ পানে চেয়ে থাকেন নিজস্ব সংরক্ষিত পানি ফুরিয়ে গেলে। এ জন্য তারা খাল গুলিতে মিষ্টি পানি সংরক্ষণের দাবী জানান।

শ্যামনগর ইউপির বোরো চাষি শেখ সিরাজুল ইসলাম বলেন উপজেলায় আমন ফসলের পর বোরো ধান চাষে কৃষকের আগ্রহ দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে। এ ক্ষেত্রে উপজেলার প্রতিটি ইউপির খাল গুলি পুনঃখনন করা, মিষ্টি পানি সংরক্ষণ করা ও বোরো চাষিদের মাঝে লিজ দেওয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার এস এম এনামুল ইসলাম জানান, শ্যামনগর উপজেলায় বোরো ধান চাষে কৃষকের আগ্রহ বেড়ে চলেছে যেভাবে সেক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। তিনি অনুমান করে বলেন ২৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হতে পারে। উপজেলায় এ পর্যন্ত ১৪০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়ে গেছে। উপজেলায় কৃষকরা লবন সহিষ্ণু জাত বিনা-১০, ব্রি-৬৭ ও হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করে থাকেন বলে জানা যায়। উপজেলা কৃষি অফিসার বলেন উপজেলায় ১২০টির অধিক খাল রয়েছে যে গুলি পুনঃখনন করে মিষ্টি পানি সংরক্ষণ করা হলে কৃষকরা শুকনা মৌসুমে বোরো ধান চাষ সহ অন্যান্য ফসল আবাদ করতে পারেন। এখানে মিষ্টি পানির সংকট রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। উপজেলায় লবনাক্তার প্রকোপ থাকলেও লবন সহিষ্ণু ধান চাষ করে কৃষকরা সফল হচ্ছেন বলে তিনি জানান। বর্তমানে জমিতে ৩/৪ পিপিটি পরিমান লবন রয়েছে বলে জানা যায়। উপজেলা কৃষি অফিসার এস এম এনামুল ইসলাম বোরো চাষিদের বেশি বেশি জৈব সার ব্যবহার করার কথা বলেছেন। এবং অতিরিক্ত ইউরিয়া সার ব্যবহার ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন। এবং লবনাক্ততার পরিমাপ মাপার জন্য অফিসে যোগাযোগ করতে বলেছেন।

শ্যামনগর উপজেলা চিংড়ী চাষের প্রবন এলাকা হলেও চিংড়ীতে বেশী লাভবান না হওয়ায় কৃষকরা আমন, বোরো ধান চাষ সহ অন্যান্য ফসল আবাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ছেন। মুন্সিগঞ্জ ,কৈখালী, রমজাননগর, ভূরুলিয়া, নুরনগর,শ্যামনগর সহ অন্যান্য ইউনিয়নে বোরো আবাদের ব্যাপকতা বেড়ে চলেছে। এলাকার সচেতন মহলের মতে জোনিং সিস্টেমে ধান ও চিংড়ী চাষ করা সময়ের দাবী বলে অনেকে মত প্রকাশ করেছেন।