ঢাকা ১০:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
কালিগঞ্জে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও অসচ্ছল ব্যক্তিদের চেক বিতরণ দেশ নায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বেই আগামীর বাংলাদেশ গড়তে চাই – এ্যাডঃ সৈয়দ ইফতেখার আলী শ্যামনগরে আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবস্থাপনার উপর ওরিয়েন্টশন আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ নয়নতারা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে দোয়েল মহিলা উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে হরিণের মাংস সহ আটক দুই সাতক্ষীরা সাস্থ্য উন্নয়ন কমিটির বর্ধিত সভায় ২৬ অক্টোবর খুলনা রোড মোড় মানব বন্ধনের সিদ্ধান্ত খুলনা প্রেসক্লাবে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি উপ-পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযান অনুষ্ঠিত 

কালিগঞ্জে সিএইচসিপি’র বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

  • Sound Of Community
  • পোস্ট করা হয়েছে : ০২:৫৭:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৩
  • ১০৮ জন পড়েছেন ।

কালিগঞ্জ, সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ

কালিগঞ্জে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) আব্দুর রাজ্জাকের বিরেদ্ধে কর্মফাঁকি, দায়িত্ব অবহেলা সহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের বসন্তপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা সহ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসীর। জানা গেছে, সরকার স্বাস্থ্যসেবা দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে গ্রামীণ মানুষের জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছে। ক্লিনিকে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, প্রজনন স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, টিকাদান কর্মসূচি, পুষ্টি, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরামর্শসহ প্রাথমিক সেবা দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। সরকারি ছুটি ব্যতীত ক্লিনিকগুলো সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকার কথা। অথচ বেশির ভাগই দুপুর ১টার থেকে দেড়টার মধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। অভিযোগ আছে, সিএইচসিপি, স্বাস্থ্য সহকারী, ফিল্ড সহকারী নারী কেউই নির্ধারিত সময়ে ক্লিনিকে আসেন না। তারা সরকারি নিয়মনীতি মেনে সেবা প্রদান করেন না। এমনকি সরকারী ঔষধ ঠিকমত বিতরণ করা হয়না। স্হায়ীরা জানান, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর্মস্থলে যোগদান করার কথা থাকলেও এক্ষেত্রে সিএইচসিপি আব্দুর রাজ্জাক ব্যতিক্রম। টিএইচও এর দপ্তরে কাজ আছে দোহাই দিয়ে ঠিকমতো কর্মস্থলে আসে না। তিনি দায়িত্ব ফাঁকি দিয়ে হঠাৎ একদিন এসেই পুরো সপ্তাহের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন।

এমনকি সরকারের বরাদ্দকৃত ও বিভিন্ন এনজিও থেকে প্রাপ্ত বেশিরভাগ আসবাবপত্র ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদি আত্মসাৎ করেছেন তিনি। তার কারণে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এ কারণে তদন্তপূর্বক সঠিক বিচার চায় এলাকাবাসী। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গর্ভবতী নারী সহ ৫ জন রোগী সিএইচসিপির পরামর্শ নিতে বসে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু উক্ত সময়ের মধ্যে কর্মস্থলে আসেননি তিনি। দীর্ঘ সময় ক্লিনিকে অপেক্ষা শেষে বেশ কিছু রোগী ফিরে গেছেন বলে জানান তারা। তখন সিএইচসিপি আব্দুর রাজ্জাকের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়। পরে দুপুর ১টার দিকে পুনরায় ক্লিনিকে গেলেও আব্দুর রাজ্জাকে দেখা পাওয়া যায়নি। এ সময় ক্লিনিকের এমএইচভি গুলশানারা শিরিন, হোসনে আরা খাতুন, আলমগীর হোসেন জানান, সকালে ৭ জন এমএইচভি পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিএইচসিপি ক্লিনিকে আসেন। কিছু সময় অবস্হান করে সিএইচসিপি চলে যান। কিন্তু দুপুর দেড়টার মধ্যে ৪ জন এমএইচভি বাড়িতে চলে যায়। তবে ঐ সময়ের মধ্যেও কেউ হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে পারিনি বলে অভিযোগ জানান দায়িত্বরত স্বাস্হ্যকর্মীরা। এ সময় সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহানারা বেগম উপস্হিত থেকে সিএইচসিপির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পান।

এ ব্যাপারে বীর মু্ক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম বলেন, ক্লিনিকে সেবা নিতে গিয়ে অনেকের হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে। সিএইচসিপির দেখা মেলা মুশকিল। অভিযোগের বিষয়ে সিএইচসিপি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নিয়মিত কর্মস্থলে যোগদান করি। তবে অধিকাংশ সময় টিএইচও স্যারের দপ্তরে কাজ করতে হয়। প্রায় সময় উনাকে সময় দেওয়ার কারণে ক্লিনিকে কম দেখা যায়। আর ক্লিনিকের হাজিরা বহি আমার কাছে থাকে। ব্যবস্তার জন্য আমাদের আজকের হাজিরা স্বাক্ষর আগামীকাল নিব। নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন ডাঃ জানান, সিএইচসিপি আব্দুর রাজ্জাক কর্মস্থলে না গিয়ে প্রতিনিয়ত হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করে এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। তার নামে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। অনুরূপ মতামত প্রদান করেন ক্লিনিকের কয়েকজন স্বাস্হ্যকর্মীও। স্থানীয় ইউপি সদস্য আরিজুল ইসলাম বলেন, আঃ রাজ্জাকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ আছে। নানা অজুহাত দেখিয়ে কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে নিজের দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে আসছেন তিনি।

বিষয়টি সম্পর্কে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কর্মকর্তা ডাঃ শেখ তৈয়েবুর রহমানের জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকে মূল দায়িত্ব পালন করার কথা সিএইচসিপি কর্মীদের। অন্যের দোহাই দিয়ে কর্মস্থল ফাঁকি দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :
রিপোর্টার সম্পর্কে

Sound Of Community

জনপ্রিয় সংবাদ

কালিগঞ্জে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও অসচ্ছল ব্যক্তিদের চেক বিতরণ

কালিগঞ্জে সিএইচসিপি’র বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

পোস্ট করা হয়েছে : ০২:৫৭:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৩

কালিগঞ্জ, সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ

কালিগঞ্জে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) আব্দুর রাজ্জাকের বিরেদ্ধে কর্মফাঁকি, দায়িত্ব অবহেলা সহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের বসন্তপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা সহ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসীর। জানা গেছে, সরকার স্বাস্থ্যসেবা দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে গ্রামীণ মানুষের জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছে। ক্লিনিকে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, প্রজনন স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, টিকাদান কর্মসূচি, পুষ্টি, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরামর্শসহ প্রাথমিক সেবা দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। সরকারি ছুটি ব্যতীত ক্লিনিকগুলো সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকার কথা। অথচ বেশির ভাগই দুপুর ১টার থেকে দেড়টার মধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। অভিযোগ আছে, সিএইচসিপি, স্বাস্থ্য সহকারী, ফিল্ড সহকারী নারী কেউই নির্ধারিত সময়ে ক্লিনিকে আসেন না। তারা সরকারি নিয়মনীতি মেনে সেবা প্রদান করেন না। এমনকি সরকারী ঔষধ ঠিকমত বিতরণ করা হয়না। স্হায়ীরা জানান, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর্মস্থলে যোগদান করার কথা থাকলেও এক্ষেত্রে সিএইচসিপি আব্দুর রাজ্জাক ব্যতিক্রম। টিএইচও এর দপ্তরে কাজ আছে দোহাই দিয়ে ঠিকমতো কর্মস্থলে আসে না। তিনি দায়িত্ব ফাঁকি দিয়ে হঠাৎ একদিন এসেই পুরো সপ্তাহের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন।

এমনকি সরকারের বরাদ্দকৃত ও বিভিন্ন এনজিও থেকে প্রাপ্ত বেশিরভাগ আসবাবপত্র ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদি আত্মসাৎ করেছেন তিনি। তার কারণে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এ কারণে তদন্তপূর্বক সঠিক বিচার চায় এলাকাবাসী। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গর্ভবতী নারী সহ ৫ জন রোগী সিএইচসিপির পরামর্শ নিতে বসে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু উক্ত সময়ের মধ্যে কর্মস্থলে আসেননি তিনি। দীর্ঘ সময় ক্লিনিকে অপেক্ষা শেষে বেশ কিছু রোগী ফিরে গেছেন বলে জানান তারা। তখন সিএইচসিপি আব্দুর রাজ্জাকের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়। পরে দুপুর ১টার দিকে পুনরায় ক্লিনিকে গেলেও আব্দুর রাজ্জাকে দেখা পাওয়া যায়নি। এ সময় ক্লিনিকের এমএইচভি গুলশানারা শিরিন, হোসনে আরা খাতুন, আলমগীর হোসেন জানান, সকালে ৭ জন এমএইচভি পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিএইচসিপি ক্লিনিকে আসেন। কিছু সময় অবস্হান করে সিএইচসিপি চলে যান। কিন্তু দুপুর দেড়টার মধ্যে ৪ জন এমএইচভি বাড়িতে চলে যায়। তবে ঐ সময়ের মধ্যেও কেউ হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে পারিনি বলে অভিযোগ জানান দায়িত্বরত স্বাস্হ্যকর্মীরা। এ সময় সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহানারা বেগম উপস্হিত থেকে সিএইচসিপির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পান।

এ ব্যাপারে বীর মু্ক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম বলেন, ক্লিনিকে সেবা নিতে গিয়ে অনেকের হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে। সিএইচসিপির দেখা মেলা মুশকিল। অভিযোগের বিষয়ে সিএইচসিপি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নিয়মিত কর্মস্থলে যোগদান করি। তবে অধিকাংশ সময় টিএইচও স্যারের দপ্তরে কাজ করতে হয়। প্রায় সময় উনাকে সময় দেওয়ার কারণে ক্লিনিকে কম দেখা যায়। আর ক্লিনিকের হাজিরা বহি আমার কাছে থাকে। ব্যবস্তার জন্য আমাদের আজকের হাজিরা স্বাক্ষর আগামীকাল নিব। নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন ডাঃ জানান, সিএইচসিপি আব্দুর রাজ্জাক কর্মস্থলে না গিয়ে প্রতিনিয়ত হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করে এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। তার নামে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। অনুরূপ মতামত প্রদান করেন ক্লিনিকের কয়েকজন স্বাস্হ্যকর্মীও। স্থানীয় ইউপি সদস্য আরিজুল ইসলাম বলেন, আঃ রাজ্জাকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ আছে। নানা অজুহাত দেখিয়ে কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে নিজের দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে আসছেন তিনি।

বিষয়টি সম্পর্কে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কর্মকর্তা ডাঃ শেখ তৈয়েবুর রহমানের জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকে মূল দায়িত্ব পালন করার কথা সিএইচসিপি কর্মীদের। অন্যের দোহাই দিয়ে কর্মস্থল ফাঁকি দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।