ঢাকা ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ নয়নতারা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে দোয়েল মহিলা উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে হরিণের মাংস সহ আটক দুই সাতক্ষীরা সাস্থ্য উন্নয়ন কমিটির বর্ধিত সভায় ২৬ অক্টোবর খুলনা রোড মোড় মানব বন্ধনের সিদ্ধান্ত খুলনা প্রেসক্লাবে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি উপ-পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযান অনুষ্ঠিত  কালিগঞ্জে তরুন দলের কমিটি গঠন সভাপতি সুলতান,সম্পাদক আলতাপ পানি নিষ্কাশনে ইউএনও,র প্রাণপণ চেষ্টা অব্যহত তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন আবারও পানিবন্ধী বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ সঃ কে কটুক্তির প্রতিবাদে রূপসা বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

নোয়াখালীতে গরু চুরির আতঙ্কে র্নিঘুম রাত, পাহারায় গৃহস্থ ও খামারিরা

  • Sound Of Community
  • পোস্ট করা হয়েছে : ০৮:৪৯:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৯৪ জন পড়েছেন ।

মোজাম্মেল হক লিটন, নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ

নোয়াখালী সদরে বেড়েছে গরু চুরি। প্রায় প্রতিরাতেই সংঘবদ্ধ চোরের দল কোনো না কোনো এলাকায় গরু চুরি করছে। গরু চোর চক্রের অপতৎপরতায় গৃহস্থ ও খামারিদের মধ্যে চুরির আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অনেক এলাকায় পালাক্রমে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন গ্রামবাসী। আবার কিছু এলাকায় গরু পাহারা দিতে গরুর সঙ্গে গোয়ালঘরে ঘুমাচ্ছেন গৃহস্থরা। গত এক মাসে দিনে ও রাতে সদর উপজেলায় ১৩ থেকে ১৫টি গরু চুরি হয়েছে বলে জানান গৃহস্থ ও খামারিরা। সদর উপজেলার নোয়াখালী ইউনিয়নের পশ্চিম চর উরিয়া গ্রামের বাসিন্দা ঢাকা মালিবাগ সিআইডি বিশেষ শাখার এএসপি মো.কামাল উদ্দিন জানান, আমার মালিকানাধীন খামারে তাঁর কেয়ারটেকার আবদুল মালেক গত ২৫ নভেম্বর তিনটি বড় জাতের গরু রেখে খামারের লোহার দরজায় তালা দিয়ে বাড়ি চলে যান।

ভোর বেলায় বাড়ির লোকজন দেখেন খামারের তালা ভাঙ্গা ও দরজা খোলা এবং ভিতরে গরুগুলো নাই। তিনি বলেন, চোরের দল ওই ওইদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরের দিন ২৬ নভেম্বর ভোর ৬টার মধ্যে যেকোন সময় গরু তিনটি চুরি করে নিয়ে যায়। তিনটি গরুর বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। কামাল উদ্দিন জানান, আমার কেয়ারটেকার আবদুল মালেক ওই ঘটনায় সুধারাম থানায় এজাহার দাখিল করলেও এখন পর্যন্ত গরুগুলো উদ্ধার কিংবা চোররা ধরা পড়েনি। একই গ্রামের মৃত খোরশেদ মিয়ার ছেলে ওলেমানকে আত্মনির্ভরশীল হতে একটি মাঝারি আকারের গরু প্রদান করেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক। স্থানীয়রা জানান, গত ১৫দিন আগে ওলেমান গরুটি দিনের বেলায় মানিক মিয়া জামে মসজিদ সংলগ্ন রাস্তায় বেঁধে রাখেন। দুপুরের দিকে লোকজনের আনাগনা কমে গেলে চোরেরা তারা গরুটি নিয়ে যায়। বহু খোঁজাখুজি করেও এখন পর্যন্ত তার গরুর কোন সন্ধান মেলেনি। নোয়াখালী ইউনিয়নের নোয়াখালী মৌজা গ্রামের বাসিন্দা, মাইজদী পাবলিক কলেজের প্রভাষক এ.এইচ.এম রেদোয়ান ফারুক জানান, শিক্ষকতার পাশাপশি তিনি নিজ বাড়িতে একটি গরুর খামার গড়ে তোলেন। তার খামারে ৬টি গাভী রয়েছে। খামারটি দেখাশোনা করেন তার কেয়ারটেকার আবদুল মালেক। গত ২৬ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে কেয়ারটেকার আবদুল মালেক খামারে গরুগুলো দেখে খামার দরজায় তালা দিয়ে বসত ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর রাতের যেকোন সময় চোরের দল খামারের দরজার তালা ভেঙ্গে ৪টি গাভী নিয়ে যায়। সকালে খবর পেয়ে তিনি গরুগুলো বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে সুধারাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ এখন পর্যন্ত এর কোন সন্ধান দিতে পারেননি। এওজবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান স্বপন জানান, তার ৪টি গরু চুরি হয়ে গেছে। থানায় অভিযোগ করেও গরুগুলো কিংবা চোরের কোন সন্ধান পাননি তিনি। গত ১০ দিন পূর্বে গোয়াল ঘর থেকে গভীর রাতে উপজেলার পূর্ব এওজবালিয়া গ্রামের আবুল কাশেম আমিনের বড় জাতের গরুটি চোরের দল নিয়ে যায়। তিনি বহু খোঁজাখঁজি করেও তার গরুটি পাননি।

এছাড়া বিচ্ছিন্ন আরো কয়েকটি গরু চুরির খবর জানা গেছে। পরপর এসব গরু চুরির ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছেন জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকার গৃহস্থ ও খামারিরা। তারা বলছেন, যেভাবে গরু চুরি হচ্ছে, তাতে গরু পালন বা খামার গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। কারণ ধারদেনা করে গরু পালন করলে ওই গরু চুরি হয়ে গেলে তা আর পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছিনা। ইতিমধ্যে চুরি হওয়া গরু উদ্ধার বা গরু চোর ধরতে পুলিশের কোন তৎপরতা দেখছিনা। তাই আমরা গরু নিয়ে আতঙ্কে রয়েছি। রাত জেগে গরু ঘরে অবস্থান নিয়ে গরুগুলো পাহারা দিতে হচ্ছে। গরু চুরি বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ চান গৃহস্থ ও খামারিরা। সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গরু চুরির কিছু সংবাদ পেয়েছি এবং দু-একটি মামলাও হয়েছে। এসব চুরির ঘটনায় এখনো কোন আটক নাই, বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করতেছি।

Tag :
রিপোর্টার সম্পর্কে

Sound Of Community

জনপ্রিয় সংবাদ

আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ

নোয়াখালীতে গরু চুরির আতঙ্কে র্নিঘুম রাত, পাহারায় গৃহস্থ ও খামারিরা

পোস্ট করা হয়েছে : ০৮:৪৯:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২২

মোজাম্মেল হক লিটন, নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ

নোয়াখালী সদরে বেড়েছে গরু চুরি। প্রায় প্রতিরাতেই সংঘবদ্ধ চোরের দল কোনো না কোনো এলাকায় গরু চুরি করছে। গরু চোর চক্রের অপতৎপরতায় গৃহস্থ ও খামারিদের মধ্যে চুরির আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অনেক এলাকায় পালাক্রমে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন গ্রামবাসী। আবার কিছু এলাকায় গরু পাহারা দিতে গরুর সঙ্গে গোয়ালঘরে ঘুমাচ্ছেন গৃহস্থরা। গত এক মাসে দিনে ও রাতে সদর উপজেলায় ১৩ থেকে ১৫টি গরু চুরি হয়েছে বলে জানান গৃহস্থ ও খামারিরা। সদর উপজেলার নোয়াখালী ইউনিয়নের পশ্চিম চর উরিয়া গ্রামের বাসিন্দা ঢাকা মালিবাগ সিআইডি বিশেষ শাখার এএসপি মো.কামাল উদ্দিন জানান, আমার মালিকানাধীন খামারে তাঁর কেয়ারটেকার আবদুল মালেক গত ২৫ নভেম্বর তিনটি বড় জাতের গরু রেখে খামারের লোহার দরজায় তালা দিয়ে বাড়ি চলে যান।

ভোর বেলায় বাড়ির লোকজন দেখেন খামারের তালা ভাঙ্গা ও দরজা খোলা এবং ভিতরে গরুগুলো নাই। তিনি বলেন, চোরের দল ওই ওইদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরের দিন ২৬ নভেম্বর ভোর ৬টার মধ্যে যেকোন সময় গরু তিনটি চুরি করে নিয়ে যায়। তিনটি গরুর বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। কামাল উদ্দিন জানান, আমার কেয়ারটেকার আবদুল মালেক ওই ঘটনায় সুধারাম থানায় এজাহার দাখিল করলেও এখন পর্যন্ত গরুগুলো উদ্ধার কিংবা চোররা ধরা পড়েনি। একই গ্রামের মৃত খোরশেদ মিয়ার ছেলে ওলেমানকে আত্মনির্ভরশীল হতে একটি মাঝারি আকারের গরু প্রদান করেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক। স্থানীয়রা জানান, গত ১৫দিন আগে ওলেমান গরুটি দিনের বেলায় মানিক মিয়া জামে মসজিদ সংলগ্ন রাস্তায় বেঁধে রাখেন। দুপুরের দিকে লোকজনের আনাগনা কমে গেলে চোরেরা তারা গরুটি নিয়ে যায়। বহু খোঁজাখুজি করেও এখন পর্যন্ত তার গরুর কোন সন্ধান মেলেনি। নোয়াখালী ইউনিয়নের নোয়াখালী মৌজা গ্রামের বাসিন্দা, মাইজদী পাবলিক কলেজের প্রভাষক এ.এইচ.এম রেদোয়ান ফারুক জানান, শিক্ষকতার পাশাপশি তিনি নিজ বাড়িতে একটি গরুর খামার গড়ে তোলেন। তার খামারে ৬টি গাভী রয়েছে। খামারটি দেখাশোনা করেন তার কেয়ারটেকার আবদুল মালেক। গত ২৬ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে কেয়ারটেকার আবদুল মালেক খামারে গরুগুলো দেখে খামার দরজায় তালা দিয়ে বসত ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর রাতের যেকোন সময় চোরের দল খামারের দরজার তালা ভেঙ্গে ৪টি গাভী নিয়ে যায়। সকালে খবর পেয়ে তিনি গরুগুলো বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে সুধারাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ এখন পর্যন্ত এর কোন সন্ধান দিতে পারেননি। এওজবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান স্বপন জানান, তার ৪টি গরু চুরি হয়ে গেছে। থানায় অভিযোগ করেও গরুগুলো কিংবা চোরের কোন সন্ধান পাননি তিনি। গত ১০ দিন পূর্বে গোয়াল ঘর থেকে গভীর রাতে উপজেলার পূর্ব এওজবালিয়া গ্রামের আবুল কাশেম আমিনের বড় জাতের গরুটি চোরের দল নিয়ে যায়। তিনি বহু খোঁজাখঁজি করেও তার গরুটি পাননি।

এছাড়া বিচ্ছিন্ন আরো কয়েকটি গরু চুরির খবর জানা গেছে। পরপর এসব গরু চুরির ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছেন জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকার গৃহস্থ ও খামারিরা। তারা বলছেন, যেভাবে গরু চুরি হচ্ছে, তাতে গরু পালন বা খামার গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। কারণ ধারদেনা করে গরু পালন করলে ওই গরু চুরি হয়ে গেলে তা আর পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছিনা। ইতিমধ্যে চুরি হওয়া গরু উদ্ধার বা গরু চোর ধরতে পুলিশের কোন তৎপরতা দেখছিনা। তাই আমরা গরু নিয়ে আতঙ্কে রয়েছি। রাত জেগে গরু ঘরে অবস্থান নিয়ে গরুগুলো পাহারা দিতে হচ্ছে। গরু চুরি বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ চান গৃহস্থ ও খামারিরা। সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গরু চুরির কিছু সংবাদ পেয়েছি এবং দু-একটি মামলাও হয়েছে। এসব চুরির ঘটনায় এখনো কোন আটক নাই, বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করতেছি।