ঢাকা ১১:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ নয়নতারা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে দোয়েল মহিলা উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে হরিণের মাংস সহ আটক দুই সাতক্ষীরা সাস্থ্য উন্নয়ন কমিটির বর্ধিত সভায় ২৬ অক্টোবর খুলনা রোড মোড় মানব বন্ধনের সিদ্ধান্ত খুলনা প্রেসক্লাবে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি উপ-পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযান অনুষ্ঠিত  কালিগঞ্জে তরুন দলের কমিটি গঠন সভাপতি সুলতান,সম্পাদক আলতাপ পানি নিষ্কাশনে ইউএনও,র প্রাণপণ চেষ্টা অব্যহত তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন আবারও পানিবন্ধী বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ সঃ কে কটুক্তির প্রতিবাদে রূপসা বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও মেঘনা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির কালীগঞ্জের শাখা ব্যবস্থাপক প্রতারক রওশন 

  • Sound Of Community
  • পোস্ট করা হয়েছে : ০৩:২৭:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর ২০২২
  • ১১০ জন পড়েছেন ।

আব্দুর রহিম, কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি :

প্রায় সাড়ে ৩ হাজার গ্রাহকের ভুয়া রশিদ দিয়ে বীমার প্রিমিয়ামের কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে প্রতারক শাখা ব্যবস্থাপক রওশন গাজী। সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ, শ্যামনগর উপজেলার জোনাল অফিসের পরস্পর যোগসাজোগে মেঘনা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির আঞ্চলিক শাখা ব্যবস্থাপক প্রতারক রওশন গাজী বছরের পর বছর মাসিক, বাৎসরিক বীমা কিস্তির টাকা আদায় করে কোম্পানির রশিদে জমা না করে ভুয়া রশিদ দিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগ করেছে।

ভুক্তভোগী হাজার হাজার গ্রাহক বীমার দলিল, বই জমা, রশিদ নিয়ে কালিগঞ্জ শ্যামনগর অফিসে ধর না দিলেও কেউ তার দায়িত্ব নিচ্ছে না বলে ভুক্তভোগীরা সাংবাদিকদের জানান। প্রতারক রওশন গাজী কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের আব্দুল বারী গাজীর পুত্র। রওশন গাজী ১০/১৫ বছর আগে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কালিগঞ্জ আঞ্চলিক শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ শুরু করে। কৃষ্ণনগর তার নিজের ইউনিয়ন হওয়ায় অত্র ইউনিয়নের নিজ গ্রাম কালিকাপুর সহ রঘুনাথপুর, বালিয়াডাঙ্গা , শোতা, নেঙ্গী, মানপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় গ্রামের সহজ সরল অসহায় দিনমজুর ও ব্যবসায়ীদের ১০/১৫ বছরে দ্বিগুণ টাকার ফাঁদে ফেলে মেঘনা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির পলিসি খুলি দিয়ে মাসিক, বাৎসরিক কিস্তি আদায় করতে থাকে।

এইভাবে গোটা ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৩হাজার নারী পুরুষকে বীমা করাতে বাধ্য করে। এইভাবে বীমা খোলার হিড়িক পড়া দেখে ২০১৫ সালে ক্ষুদ্র বীমার মাসিক কিস্তির প্রকল্প নিয়ে শ্যামনগর উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করে বলে জানা যায়। বীমার পলিসি খোলার হিড়িক দেখে প্রতারনার ফাঁদে ফেলে সরল বিশ্বাসে গ্রাহকদের কোম্পানির আদলে জমাকৃত টাকার ভুয়া রশিদ ছাপিয়ে দিতে থাকে। এতে করে অনেকের বীমার মেয়াদ ১০/১২ বছর উত্তীর্ণ হলে টাকা ফেরত চাইলে টাকা দেওয়ার নাম করে গ্রাহকের নিকট হতে বীমা দলিল, জমা রশিদ, বই সহ যাবতীয় কাগজপত্র অফিসে দেওয়ার নাম করে জমা নিয়ে নেয়। যাতে করে গ্রাহকের নিকট দাবীকৃত বীমার টাকার কোন কাগজপত্র না থাকে। এইভাবে প্রতারক রওশন গ্রাহকের নিকট হতে দলিল, বই, রশিদ জমা নিয়ে একদিকে যেমন পথে বসিয়েছে অন্যদিকে বীমার জমাকৃত টাকা ফেরত পেতে নানান হয়রানি শিকার হতে হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৫নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার সময় কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে গেলে ভুক্তভোগী গ্রাহক উম্মে হাবিবা সাংবাদিকদের জানান তার ৭২ হাজার টাকার ১২ বছরে ৬০ হাজার টাকা করে জমা করে মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও টাকা পাওয়ার কোন ব্যবস্থা নাই। ১০ বছর মেয়াদে বছরে ৬ হাজার টাকা করে ৬ কিস্তি টাকা জমা নিয়ে রওশন কে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমার কোন রশিদ দেয় নাই। কালিকাপুরের আব্দুর রশিদ জানান তার ১২ বছর মেয়াদ   বীমা পূর্ণ হয়েছে তার ৮ লক্ষ টাকা দিবে বলে কাগজপত্র নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। এইভাবে গ্রাহক আবুল কাশেমের ১ লক্ষ টাকা, হাবিল শেখের ৫০ হাজার টাকা, আরজিনা খাতুনের ৭২ হাজার টাকা, আকবর শেখের ৫০ হাজার টাকা, সাইফুলের ৫০ হাজার টাকা, তাহমিনা খাতুনের ৬০ হাজার টাকা,  মশিউর রহমানের ৪২ হাজার টাকা নাসিরের ৮০ হাজার টাকা, এইভাবে গ্রাহক আঞ্জুন আরা, রেশমা খাতুন, সুফিয়া খাতুন, জাকিয়া সুলতানা, পাপিয়া নাসরিন, শাবানা খাতুন, আশুরা বেগম, পাপড়িসহ এইভাবে হাজার হাজার গ্রাহকের টাকা জমা না দিয়ে উধাও হয়ে গেছে। তারা আরো বলেন আমরা টাকার জন্য কালীগঞ্জ, শ্যামনগর অফিসে গেলে সেখানকার কর্মকর্তারা  বলছে এটা ভুয়া রশিদ, ভুয়া কাগজ। এর দায়-দায়িত্ব আমরা নিতে পারবো না।

এই দিকে ১০/১২/১৫ বছর মেয়াদোত্তীর্ণ এবং জমাকৃত বিমার টাকা ফেরত না পেয়ে অনেকে মানবতার জীবন যাপন করছে। বিষয়টি নিয়ে প্রতারক রওশন এর কালিকাপুরের বাড়িতে গেলে তার বাবা আব্দুল বারী জানান সে অনেক আগে বউ নিয়ে বাড়ি থেকে চলে গেছে। আমরা তার খোঁজ জানিনা। তার শ্বশুরবাড়ি কাশিবাড়ী গ্রামে খুজে পাইনি। ঘটনার সত্যতা জানার জন্য গত দুইদিন ধরে কালীগঞ্জ থানা রোডে অবস্থিত মেঘনা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির কালিগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ে গেলে শাখা ব্যবস্থাপক দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামের মনিরুজ্জামান বাবলুর পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে বিভিন্ন অজুহাতে অফিসে আসা এড়িয়ে চলছেন। বিষয়টি এলাকাবাসী জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

Tag :
রিপোর্টার সম্পর্কে

Sound Of Community

জনপ্রিয় সংবাদ

আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ

গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও মেঘনা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির কালীগঞ্জের শাখা ব্যবস্থাপক প্রতারক রওশন 

পোস্ট করা হয়েছে : ০৩:২৭:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর ২০২২

আব্দুর রহিম, কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি :

প্রায় সাড়ে ৩ হাজার গ্রাহকের ভুয়া রশিদ দিয়ে বীমার প্রিমিয়ামের কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে প্রতারক শাখা ব্যবস্থাপক রওশন গাজী। সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ, শ্যামনগর উপজেলার জোনাল অফিসের পরস্পর যোগসাজোগে মেঘনা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির আঞ্চলিক শাখা ব্যবস্থাপক প্রতারক রওশন গাজী বছরের পর বছর মাসিক, বাৎসরিক বীমা কিস্তির টাকা আদায় করে কোম্পানির রশিদে জমা না করে ভুয়া রশিদ দিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগ করেছে।

ভুক্তভোগী হাজার হাজার গ্রাহক বীমার দলিল, বই জমা, রশিদ নিয়ে কালিগঞ্জ শ্যামনগর অফিসে ধর না দিলেও কেউ তার দায়িত্ব নিচ্ছে না বলে ভুক্তভোগীরা সাংবাদিকদের জানান। প্রতারক রওশন গাজী কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের আব্দুল বারী গাজীর পুত্র। রওশন গাজী ১০/১৫ বছর আগে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কালিগঞ্জ আঞ্চলিক শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ শুরু করে। কৃষ্ণনগর তার নিজের ইউনিয়ন হওয়ায় অত্র ইউনিয়নের নিজ গ্রাম কালিকাপুর সহ রঘুনাথপুর, বালিয়াডাঙ্গা , শোতা, নেঙ্গী, মানপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় গ্রামের সহজ সরল অসহায় দিনমজুর ও ব্যবসায়ীদের ১০/১৫ বছরে দ্বিগুণ টাকার ফাঁদে ফেলে মেঘনা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির পলিসি খুলি দিয়ে মাসিক, বাৎসরিক কিস্তি আদায় করতে থাকে।

এইভাবে গোটা ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৩হাজার নারী পুরুষকে বীমা করাতে বাধ্য করে। এইভাবে বীমা খোলার হিড়িক পড়া দেখে ২০১৫ সালে ক্ষুদ্র বীমার মাসিক কিস্তির প্রকল্প নিয়ে শ্যামনগর উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করে বলে জানা যায়। বীমার পলিসি খোলার হিড়িক দেখে প্রতারনার ফাঁদে ফেলে সরল বিশ্বাসে গ্রাহকদের কোম্পানির আদলে জমাকৃত টাকার ভুয়া রশিদ ছাপিয়ে দিতে থাকে। এতে করে অনেকের বীমার মেয়াদ ১০/১২ বছর উত্তীর্ণ হলে টাকা ফেরত চাইলে টাকা দেওয়ার নাম করে গ্রাহকের নিকট হতে বীমা দলিল, জমা রশিদ, বই সহ যাবতীয় কাগজপত্র অফিসে দেওয়ার নাম করে জমা নিয়ে নেয়। যাতে করে গ্রাহকের নিকট দাবীকৃত বীমার টাকার কোন কাগজপত্র না থাকে। এইভাবে প্রতারক রওশন গ্রাহকের নিকট হতে দলিল, বই, রশিদ জমা নিয়ে একদিকে যেমন পথে বসিয়েছে অন্যদিকে বীমার জমাকৃত টাকা ফেরত পেতে নানান হয়রানি শিকার হতে হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৫নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার সময় কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে গেলে ভুক্তভোগী গ্রাহক উম্মে হাবিবা সাংবাদিকদের জানান তার ৭২ হাজার টাকার ১২ বছরে ৬০ হাজার টাকা করে জমা করে মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও টাকা পাওয়ার কোন ব্যবস্থা নাই। ১০ বছর মেয়াদে বছরে ৬ হাজার টাকা করে ৬ কিস্তি টাকা জমা নিয়ে রওশন কে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমার কোন রশিদ দেয় নাই। কালিকাপুরের আব্দুর রশিদ জানান তার ১২ বছর মেয়াদ   বীমা পূর্ণ হয়েছে তার ৮ লক্ষ টাকা দিবে বলে কাগজপত্র নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। এইভাবে গ্রাহক আবুল কাশেমের ১ লক্ষ টাকা, হাবিল শেখের ৫০ হাজার টাকা, আরজিনা খাতুনের ৭২ হাজার টাকা, আকবর শেখের ৫০ হাজার টাকা, সাইফুলের ৫০ হাজার টাকা, তাহমিনা খাতুনের ৬০ হাজার টাকা,  মশিউর রহমানের ৪২ হাজার টাকা নাসিরের ৮০ হাজার টাকা, এইভাবে গ্রাহক আঞ্জুন আরা, রেশমা খাতুন, সুফিয়া খাতুন, জাকিয়া সুলতানা, পাপিয়া নাসরিন, শাবানা খাতুন, আশুরা বেগম, পাপড়িসহ এইভাবে হাজার হাজার গ্রাহকের টাকা জমা না দিয়ে উধাও হয়ে গেছে। তারা আরো বলেন আমরা টাকার জন্য কালীগঞ্জ, শ্যামনগর অফিসে গেলে সেখানকার কর্মকর্তারা  বলছে এটা ভুয়া রশিদ, ভুয়া কাগজ। এর দায়-দায়িত্ব আমরা নিতে পারবো না।

এই দিকে ১০/১২/১৫ বছর মেয়াদোত্তীর্ণ এবং জমাকৃত বিমার টাকা ফেরত না পেয়ে অনেকে মানবতার জীবন যাপন করছে। বিষয়টি নিয়ে প্রতারক রওশন এর কালিকাপুরের বাড়িতে গেলে তার বাবা আব্দুল বারী জানান সে অনেক আগে বউ নিয়ে বাড়ি থেকে চলে গেছে। আমরা তার খোঁজ জানিনা। তার শ্বশুরবাড়ি কাশিবাড়ী গ্রামে খুজে পাইনি। ঘটনার সত্যতা জানার জন্য গত দুইদিন ধরে কালীগঞ্জ থানা রোডে অবস্থিত মেঘনা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির কালিগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ে গেলে শাখা ব্যবস্থাপক দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামের মনিরুজ্জামান বাবলুর পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে বিভিন্ন অজুহাতে অফিসে আসা এড়িয়ে চলছেন। বিষয়টি এলাকাবাসী জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।