ঢাকা ১১:২৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ নয়নতারা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে দোয়েল মহিলা উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে হরিণের মাংস সহ আটক দুই সাতক্ষীরা সাস্থ্য উন্নয়ন কমিটির বর্ধিত সভায় ২৬ অক্টোবর খুলনা রোড মোড় মানব বন্ধনের সিদ্ধান্ত খুলনা প্রেসক্লাবে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি উপ-পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযান অনুষ্ঠিত  কালিগঞ্জে তরুন দলের কমিটি গঠন সভাপতি সুলতান,সম্পাদক আলতাপ পানি নিষ্কাশনে ইউএনও,র প্রাণপণ চেষ্টা অব্যহত তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন আবারও পানিবন্ধী বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ সঃ কে কটুক্তির প্রতিবাদে রূপসা বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

সাতক্ষীরার হাবিবুর রহমান হাতে লিখেছেন সবচেয়ে বড় কোরআন

  • Sound Of Community
  • পোস্ট করা হয়েছে : ০৩:০৬:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ নভেম্বর ২০২২
  • ১৩৮ জন পড়েছেন ।

সাতক্ষীরা যুবক হাবিবুর রহমান ৩৩৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ২৬৪ সেন্টিমিটার বড় কোরআন হাতে লিখেছেন। মাদ্রাসার শিক্ষার্থী না হয়েও নিজ হাতে লেখা আরবি ভাষাতে কোরআন শরীফ লিখেছেন। যেটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হাতে লেখা কোরআনে কারিম বলে দাবি করেছেন তিনি।

দীর্ঘ ৬ বছর ৮মাস ২৩ দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে ১৪২ পাতায় লিখেছেন ৬ হাজার ৬৬৬ টি আয়াত। সূরা বা পারা কলামের যেখানে শেষ হয়েছে সেই কলামের বাকি অংশে লেখা হয়েছে আল্লাহর নাম। মার্জিন ও পেইজ ডিজাইনের জন্য মধুর এ নামটি এসেছে তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার বার। ৩০ পারার ঝকঝকে হরফে লেখা ১১৪ টি সূরা’র এই কোরআন দেখে বোঝার উপায় নেই এটি ছাপা, না হাতে লেখা। দিন-রাত পরিশ্রম করে পুরো কোরআন হাতে লিখে দীর্ঘ দিনের ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপ দিলেন মোঃ হাবিবুর রহমান।

হাবিবুর রহমানের বাড়ি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পলাশপোল এলাকায়। তার বাবা মোঃ আজিজুর রহমান। হাবিবুর ২০০৩ সালে সাতক্ষীরা পিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন, ২০০৫ সালে এইচএসসি ও পরবর্তীতে এলএলবি সম্পন্ন করেন। জীবনে কখনও মাদ্রাসায় না যেয়েও ইউটিউব দেখে আয়ত্ব করেছেন আরবিসহ কয়েকটি ভাষা। মানবতার জন্য কিছু করার ইচ্ছা থেকেই তিনি পুরো কোরআন হাতে লিখেছেন।

কেন তার এই প্রচেষ্টা? এমন প্রশ্নের জবাবে মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, ২০১৩ সালের দিকে তিনি সাতক্ষীরা শহর সমাজসেবা অফিসে কম্পিউটার ইনস্ট্রাকটর হিসেবে কাজ করতেন। সে সময় সমাজের অসহায় অবহেলিত গরীব মানুষের দূরবস্থা দেখে তাদের পাশে থেকে চিকিৎসা সেবার জন্য কিছু একটা করার আগ্রহ জাগে। তখন থেকে তিনি চিন্তা করেন এমন কিছু করবে যেটি বিশ্ব রেকর্ড করবে। সেই চিন্তা থেকেই তার মাথায় আসে বিশ্বের সব চেয়ে বড় কোরআন তিনি হাতে লিখবেন।

তিনি বলেন, জীবনে কখনও মাদ্রাসায় যাননি তিনি, ইউটিউব দেখে আয়ত্ব করেছেন আরবিসহ কয়েকটি ভাষা। মহান আল্লাহর বাণীকে ভালোবেসে সেই বিদেশী ভাষাতেই নিজের হাতে লিখেছেন মহাগ্রন্থ আল কোরআন। শুধু লেখা নয় তিনি নিজ সাধনায় মুখস্ত করেছেন কোরআনের দুইটি পারাও। এবার মানবতার জন্য কিছু করতে চান তিনি।

তিন হাজার চারশ আটটি আর্ট পেপারের সমন্বয়ে মোট ১৪২ টি পাতায় লেখা এ কোরআন শরীফের ওজন হয়েছে ৪০৫ কেজি। আকারে ৩৩৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ২৬৪ সেন্টিমিটার। লাল, নীল, সবুজ ও কালো রঙের চারটি কলাম শোভা বাড়িয়েছে ঐশি বাণীর। সূরা বা পারা কলামের যেখানে শেষ হয়েছে সেই কলামের বাকি অংশে লেখা হয়েছে আল্লাহর নাম। মার্জিন ও পেইজ ডিজাইনের জন্য মধুর এ নামটি এসেছে তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার বার।

হাবিবুরের মা ফিরোজা পারভীন জানান, ২০১৬ সালের পহেলা জানুয়ারীতে আমার ছেলে এই পবিত্র কোরআন হাতে লেখা শুরু করে এবং এ বছরের ২৩ শে সেপ্টেম্বর সম্পন্ন করে। অতিরিক্ত পরিশ্রম করে সারা রাত জেগে সে এই কোরআন শরীফটি নিজের হাতে লিখেছে। এমন অনেক দিন গেছে সারা রাত জেগে লিখে তার পরে ফজরের নামাজ আদায় করে ঘুমাতে গেছে। সন্তানের এমন ভাল কাজের বিনিময়ে মহান রাব্বুল আলামিন যেন তার সন্তানের জীবনে আরও ভাল কিছু করেন এমনটায় দোয়া করেন তিনি।

এদিকে, আরবি ভাষায় অভিজ্ঞ আলেমরাও তার কোরআন পড়ে নির্ভুল বলেছেন। প্রশংসা করেছেন তার এমন উদ্যোগের।

সাতক্ষীরা আশাশুনি খরিয়াটি জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আজিজুর রহমান বলেন, মহাগ্রহন্থ কোরআনুল কারিম বৃহতাকারে তিনি লিখছেন। আমি বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন আয়াত তেলাওয়াত করেছি এবং দেখেছি এগুলো অতি সুন্দর এবং নির্ভুলভাবে লেখা হয়েছে। তাতে করে আমি মনে করি, গোটা কোরআন লেখাটা নির্ভূলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

Tag :
রিপোর্টার সম্পর্কে

Sound Of Community

জনপ্রিয় সংবাদ

আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ

সাতক্ষীরার হাবিবুর রহমান হাতে লিখেছেন সবচেয়ে বড় কোরআন

পোস্ট করা হয়েছে : ০৩:০৬:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ নভেম্বর ২০২২

সাতক্ষীরা যুবক হাবিবুর রহমান ৩৩৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ২৬৪ সেন্টিমিটার বড় কোরআন হাতে লিখেছেন। মাদ্রাসার শিক্ষার্থী না হয়েও নিজ হাতে লেখা আরবি ভাষাতে কোরআন শরীফ লিখেছেন। যেটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হাতে লেখা কোরআনে কারিম বলে দাবি করেছেন তিনি।

দীর্ঘ ৬ বছর ৮মাস ২৩ দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে ১৪২ পাতায় লিখেছেন ৬ হাজার ৬৬৬ টি আয়াত। সূরা বা পারা কলামের যেখানে শেষ হয়েছে সেই কলামের বাকি অংশে লেখা হয়েছে আল্লাহর নাম। মার্জিন ও পেইজ ডিজাইনের জন্য মধুর এ নামটি এসেছে তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার বার। ৩০ পারার ঝকঝকে হরফে লেখা ১১৪ টি সূরা’র এই কোরআন দেখে বোঝার উপায় নেই এটি ছাপা, না হাতে লেখা। দিন-রাত পরিশ্রম করে পুরো কোরআন হাতে লিখে দীর্ঘ দিনের ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপ দিলেন মোঃ হাবিবুর রহমান।

হাবিবুর রহমানের বাড়ি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পলাশপোল এলাকায়। তার বাবা মোঃ আজিজুর রহমান। হাবিবুর ২০০৩ সালে সাতক্ষীরা পিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন, ২০০৫ সালে এইচএসসি ও পরবর্তীতে এলএলবি সম্পন্ন করেন। জীবনে কখনও মাদ্রাসায় না যেয়েও ইউটিউব দেখে আয়ত্ব করেছেন আরবিসহ কয়েকটি ভাষা। মানবতার জন্য কিছু করার ইচ্ছা থেকেই তিনি পুরো কোরআন হাতে লিখেছেন।

কেন তার এই প্রচেষ্টা? এমন প্রশ্নের জবাবে মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, ২০১৩ সালের দিকে তিনি সাতক্ষীরা শহর সমাজসেবা অফিসে কম্পিউটার ইনস্ট্রাকটর হিসেবে কাজ করতেন। সে সময় সমাজের অসহায় অবহেলিত গরীব মানুষের দূরবস্থা দেখে তাদের পাশে থেকে চিকিৎসা সেবার জন্য কিছু একটা করার আগ্রহ জাগে। তখন থেকে তিনি চিন্তা করেন এমন কিছু করবে যেটি বিশ্ব রেকর্ড করবে। সেই চিন্তা থেকেই তার মাথায় আসে বিশ্বের সব চেয়ে বড় কোরআন তিনি হাতে লিখবেন।

তিনি বলেন, জীবনে কখনও মাদ্রাসায় যাননি তিনি, ইউটিউব দেখে আয়ত্ব করেছেন আরবিসহ কয়েকটি ভাষা। মহান আল্লাহর বাণীকে ভালোবেসে সেই বিদেশী ভাষাতেই নিজের হাতে লিখেছেন মহাগ্রন্থ আল কোরআন। শুধু লেখা নয় তিনি নিজ সাধনায় মুখস্ত করেছেন কোরআনের দুইটি পারাও। এবার মানবতার জন্য কিছু করতে চান তিনি।

তিন হাজার চারশ আটটি আর্ট পেপারের সমন্বয়ে মোট ১৪২ টি পাতায় লেখা এ কোরআন শরীফের ওজন হয়েছে ৪০৫ কেজি। আকারে ৩৩৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ২৬৪ সেন্টিমিটার। লাল, নীল, সবুজ ও কালো রঙের চারটি কলাম শোভা বাড়িয়েছে ঐশি বাণীর। সূরা বা পারা কলামের যেখানে শেষ হয়েছে সেই কলামের বাকি অংশে লেখা হয়েছে আল্লাহর নাম। মার্জিন ও পেইজ ডিজাইনের জন্য মধুর এ নামটি এসেছে তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার বার।

হাবিবুরের মা ফিরোজা পারভীন জানান, ২০১৬ সালের পহেলা জানুয়ারীতে আমার ছেলে এই পবিত্র কোরআন হাতে লেখা শুরু করে এবং এ বছরের ২৩ শে সেপ্টেম্বর সম্পন্ন করে। অতিরিক্ত পরিশ্রম করে সারা রাত জেগে সে এই কোরআন শরীফটি নিজের হাতে লিখেছে। এমন অনেক দিন গেছে সারা রাত জেগে লিখে তার পরে ফজরের নামাজ আদায় করে ঘুমাতে গেছে। সন্তানের এমন ভাল কাজের বিনিময়ে মহান রাব্বুল আলামিন যেন তার সন্তানের জীবনে আরও ভাল কিছু করেন এমনটায় দোয়া করেন তিনি।

এদিকে, আরবি ভাষায় অভিজ্ঞ আলেমরাও তার কোরআন পড়ে নির্ভুল বলেছেন। প্রশংসা করেছেন তার এমন উদ্যোগের।

সাতক্ষীরা আশাশুনি খরিয়াটি জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আজিজুর রহমান বলেন, মহাগ্রহন্থ কোরআনুল কারিম বৃহতাকারে তিনি লিখছেন। আমি বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন আয়াত তেলাওয়াত করেছি এবং দেখেছি এগুলো অতি সুন্দর এবং নির্ভুলভাবে লেখা হয়েছে। তাতে করে আমি মনে করি, গোটা কোরআন লেখাটা নির্ভূলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।