মোঃ রাসেল সরকার:
কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলার মানিকারচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাকির হোসেন প্রতারণার মাধ্যমে একই গাড়ি ৩০ থেকে ৪০ জনের কাছে বিক্রি করার প্রমাণ পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। সম্প্রতি ৪ দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে ওই চেয়ারম্যানের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ২০টি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ।
তিনি জানান, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মুগদা থানায় জাকির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি প্রতারণার মামলা করেন এক ভুক্তভোগী।
মামলাটি গোয়েন্দা তেজগাঁও জোনাল টিম ছায়াতদন্ত শুরু করে। তদন্তে জানা যায় যে, আসামি জাকির হোসেন বন্দর থেকে স্বল্প দামে গাড়ি এনে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে টাকা নিতেন।
বিক্রি করা গাড়ি আবার চুক্তির মাধ্যমে নিজেই রেন্ট-এ কারের মাধ্যমে মাসিক ভাড়ার চুক্তিতে নিতেন। একই গাড়ি এভাবে একাধিক ব্যক্তির কাছে ভুয়া কাগজপত্র করে বিক্রি করতেন তিনি। একই রেজিস্ট্রেশন নম্বরের গাড়ি একাধিক জাল দলিলের মাধ্যমে বিক্রি করতেন চেয়ারম্যান জাকির।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, প্রতারক জাকির প্রতারণার মাধ্যমে ৬০ থেকে ৭০টি গাড়ি দেখিয়ে ৬০০ থেকে ৭০০ জনের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। যাদের মধ্যে ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা এমনকি সংসদ সদস্যও রয়েছেন। প্রকৃত পক্ষে তার মোট গাড়ির সংখ্যা ৬৭টি। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ এখন পর্যন্ত প্রতারণার মাধ্যমে বিক্রি করা ২০টি গাড়ি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার করেছে। আরও ৪০টি গাড়ির প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। উদ্ধারের জন্য অভিযান চলমান আছে। একটি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখিয়ে ৩৭ জনকে স্ট্যাম্প করে বিক্রি করেছেন জাকির।
আসামি জাকিরকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, ৫ থেকে ৬ জন সহযোগীর প্রত্যক্ষ সহায়তায় তিনি প্রতারণা করতেন। তিনি আনুমানিক হাজার কোটি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। মুন্সীগঞ্জের একটি গ্রামের লোকেদের কাছে ১২২টি গাড়ি বিক্রির কথা বলে প্রতারণা করেছেন। জাকির হোসেনের প্রতিষ্ঠান আর কে মোটর্স এবং তার আত্মীয়-স্বজনের নামে ২৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য পাওয়া গেছে।
জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১২টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। তার প্রতারণরা বিষয়ে আরও তদন্ত করা হচ্ছে। প্রয়োজনে তাকে আবারও রিমান্ডে আনা হবে বলে জানান হারুন অর রশীদ।