স্বামীর ওপর প্রতিশোধ নিতে নবজাতক সন্তানকে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে গেছেন এক মা। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে হাসপাতালে শিশুটিকে তার নানি, দাদি ও বাবা দেখাশোনা করছেন। শিশুটির মায়ের দাবি, বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শাশুড়ি তাকে অনেক নির্যাতন করেছে। যে কারণে প্রতিশোধ নিতে তিনি নবজাতক সন্তানকে হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যান। তবে তার স্বামী সুমনের দাবি, কোনো নির্যাতন করা হয়নি। অন্য একজনের সঙ্গে তার স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। সুমনের দাবি প্রেমিকের কাছে যেতেই তার স্ত্রী এমন কাজ করেছে। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন সুমন।
সুমন পেশায় একজন বাসচালক। গত সোমবার সকালে হাসপাতালে স্ত্রী ইমুকে ভর্তি করান। পরদিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাদের ছেলে সন্তান জন্ম হয়। এরপর বুধবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের বিছানায় সন্তান রেখেই পালিয়ে যান ইমু। সুমন জানান, দুই বছর আগে পারিবারিকভাবে তিনি ইমুকে বিয়ে করেন। দেড় বছর ধরে তিনি ঢাকায় যাত্রীবাহী বাস চালান। বিয়ের পর থেকে তুচ্ছ ঘটনায় স্ত্রীর সঙ্গে প্রায়ই বিরোধ হতো। সুমনের অভিযোগ, স্ত্রীর পরকীয়া নিয়ে একাধিকবার পারিবারিক ও সামাজিকভাবে বৈঠক করেও তাকে ফেরাতে পারেননি।
সুমন বলেন, থানায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে নানানভাবে হয়রানি করেছে। পরে সন্তানের কথা চিন্তা করে আমার স্ত্রীকে ঢাকায় নিয়ে যাই। কয়েকদিন আগে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে আসি। তার শারিরীক অবস্থা ভালো না থাকায় চিকিৎসাও করাই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবজাতকের মা ইমু বলেন, সুমনের দ্বিতীয় স্ত্রী আমি। বিয়ের পর থেকে সুমন ও শাশুড়ির কাছে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। তাই প্রতিশোধ নিতেই হাসপাতালে বাচ্চা রেখে পালিয়ে এসেছি।
পরকীয়া প্রেমিকের বিষয়ে তিনি বলেন, ওই ছেলের সঙ্গে এক বছর আগেই সম্পর্ক শেষ। আমি কারও সঙ্গে যাইনি। রায়পুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, শিশুটি তার নানি, দাদি, ফুফু ও বাবার কাছে হাসপাতালে রয়েছে। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।
ওসি আরও বলেন, শিশুটি যেন তার মায়ের কাছে ফিরে যেতে পারে, সে ব্যবস্থা করছি। এ ব্যাপারে শিশুটির বাবা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।