ঢাকা ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ নয়নতারা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে দোয়েল মহিলা উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে হরিণের মাংস সহ আটক দুই সাতক্ষীরা সাস্থ্য উন্নয়ন কমিটির বর্ধিত সভায় ২৬ অক্টোবর খুলনা রোড মোড় মানব বন্ধনের সিদ্ধান্ত খুলনা প্রেসক্লাবে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি উপ-পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযান অনুষ্ঠিত  কালিগঞ্জে তরুন দলের কমিটি গঠন সভাপতি সুলতান,সম্পাদক আলতাপ পানি নিষ্কাশনে ইউএনও,র প্রাণপণ চেষ্টা অব্যহত তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন আবারও পানিবন্ধী বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ সঃ কে কটুক্তির প্রতিবাদে রূপসা বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

শিশু বয়স নিয়ে যত কথা: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত

  • Sound Of Community
  • পোস্ট করা হয়েছে : ০৬:১৯:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ১৮৪ জন পড়েছেন ।

“এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান” কবি সুকান্তের এই উক্তির মাধ্যমে বোঝা যায় পৃথিবীতে শিশুর অস্তিত্ব কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি, আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। কিন্তু সেই ভবিষ্যৎ সূর্যের আলোয় দীপ্তিমান হবে নাকি অমাবস্যার কালো ছায়ায় নিমজ্জিত হবে তা নির্ভর করে এই শিশুরা কিভাবে, কোন পরিবেশে এবং কি কি অধিকার ভোগের মাধ্যমে বেড়ে উঠছে। অর্থাৎ একটি শিশু যদি সামগ্রিকভাবে তার মৌলিক সুযোগ সুবিধা এবং অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় তাহলে একটি সমাজ, রাষ্ট্র ও জাতি গঠনে তা কখনোই ভূমিকা রাখতে পারে না ।

সাধারণত শিশু বলতে জীবন বিকাশের একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে অবস্থানরত মানব সন্তানদেকে বুঝান হয়। বিশ্বে বিভিন্ন দেশ তাদের সামগ্রিক রীতিনীতি বিবেচনা করে বয়সের মাপকাঠিতে শিশুকে সংজ্ঞায়িত করে থাকে।কিন্তু শিশু বলতে আমরা কোন বয়সের মানুষকে বুঝবো? ৪, ৮, ১২, ১৬ নাকি ১৮? এক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিভিন্ন আইনে শিশুর বয়স বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। চলুন একনজরে দেখে নেয় যাক, জাতিসংঘের শিশু সনদ সহ বাংলাদেশের আইনে বিদ্যমান শিশুদের বয়স: —

আমরা জানি, বাংলাদেশ জাতিসংঘের একটি সদস্য রাষ্ট্র এবং ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ শিশু অধিকার সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ সমূহের মধ্যে অন্যতম। জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ ১৯৮৯ শিশুকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে “কোন শিশুর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আইন অনুসারে তাকে সাবালোক বা সাবালিকা হিসেবে গণ্য না করা পর্যন্ত ১৮ বছরের কম বয়সী সকল বালক বালিকা শিশু হিসেবে পরিগণিত হবে”। সহজ ভাষায় বলা যায়, “শূন্য থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত সকল বয়সের মানুষই শিশু”।

এখন দেখা যাক বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য আইন অনুযায়ী শিশু:

বাংলাদেশের জাতীয় শিশু নীতি—২০১১— অনুযায়ী, ‘শিশু বলতে ১৮ বছরের কম বয়সী বাংলাদেশের সকল ব্যক্তিকে বুঝাবে। নারী ও শিশু নির্যাতন ও দমন আইন—২০০০—এ প্রদত্ত সংজ্ঞা অনুযায়ী ‘শিশু অর্থ অনধিক ১৬ বছর বয়সের কোনো ব্যক্তি’। অন্যদিকে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন—২০১২ অনুযায়ী ‘শিশু’ অর্থ ১৮ বছর বয়স পূর্ণ করেনি, এমন কোনো ব্যক্তি’। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুসারে ১৪ বছরের কম বয়সীরা শিশু বলে বিবেচিত হবে। বাংলাদেশ শিশু আইন ১৯৭৪ অনুসারে ১৬বছরের কম বয়সী প্রত্যেকেই শিশু।

চলতি আইনগুলো যথাযথ সংস্কারের মাধ্যমে শিশুর জন্য একটি সর্বজনীন বয়স নির্ধারণ করা সময়ের দাবি ছিল। এরই ফলশ্রুতিতে

শিশু আইন ২০১৩ এ বলা হয়েছে, ‘বিদ্যমান অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, অনূর্ধ্ব ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত সকল ব্যক্তি শিশু হিসেবে গণ্য হইবে’।

একটি দেশের শিশুরা পরিচিত হোক একটি সংজ্ঞা দ্বারাই। শিশুরা তাদের ন্যায্য অধিকার লাভ করুক, শিশুর তাদের স্বপ্ন আর সম্ভাবনার বিকাশ ঘটুক। পরিশেষ কবি সুকান্তের ভাষায় বলতে চাই, “এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার” ।

লেখক: —

শেখ শোয়েব আহম্মেদ

শিক্ষার্থী (সমাজকর্ম বিভাগ)

Tag :
রিপোর্টার সম্পর্কে

Sound Of Community

জনপ্রিয় সংবাদ

আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ

শিশু বয়স নিয়ে যত কথা: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত

পোস্ট করা হয়েছে : ০৬:১৯:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

“এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান” কবি সুকান্তের এই উক্তির মাধ্যমে বোঝা যায় পৃথিবীতে শিশুর অস্তিত্ব কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি, আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। কিন্তু সেই ভবিষ্যৎ সূর্যের আলোয় দীপ্তিমান হবে নাকি অমাবস্যার কালো ছায়ায় নিমজ্জিত হবে তা নির্ভর করে এই শিশুরা কিভাবে, কোন পরিবেশে এবং কি কি অধিকার ভোগের মাধ্যমে বেড়ে উঠছে। অর্থাৎ একটি শিশু যদি সামগ্রিকভাবে তার মৌলিক সুযোগ সুবিধা এবং অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় তাহলে একটি সমাজ, রাষ্ট্র ও জাতি গঠনে তা কখনোই ভূমিকা রাখতে পারে না ।

সাধারণত শিশু বলতে জীবন বিকাশের একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে অবস্থানরত মানব সন্তানদেকে বুঝান হয়। বিশ্বে বিভিন্ন দেশ তাদের সামগ্রিক রীতিনীতি বিবেচনা করে বয়সের মাপকাঠিতে শিশুকে সংজ্ঞায়িত করে থাকে।কিন্তু শিশু বলতে আমরা কোন বয়সের মানুষকে বুঝবো? ৪, ৮, ১২, ১৬ নাকি ১৮? এক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিভিন্ন আইনে শিশুর বয়স বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। চলুন একনজরে দেখে নেয় যাক, জাতিসংঘের শিশু সনদ সহ বাংলাদেশের আইনে বিদ্যমান শিশুদের বয়স: —

আমরা জানি, বাংলাদেশ জাতিসংঘের একটি সদস্য রাষ্ট্র এবং ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ শিশু অধিকার সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ সমূহের মধ্যে অন্যতম। জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ ১৯৮৯ শিশুকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে “কোন শিশুর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আইন অনুসারে তাকে সাবালোক বা সাবালিকা হিসেবে গণ্য না করা পর্যন্ত ১৮ বছরের কম বয়সী সকল বালক বালিকা শিশু হিসেবে পরিগণিত হবে”। সহজ ভাষায় বলা যায়, “শূন্য থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত সকল বয়সের মানুষই শিশু”।

এখন দেখা যাক বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য আইন অনুযায়ী শিশু:

বাংলাদেশের জাতীয় শিশু নীতি—২০১১— অনুযায়ী, ‘শিশু বলতে ১৮ বছরের কম বয়সী বাংলাদেশের সকল ব্যক্তিকে বুঝাবে। নারী ও শিশু নির্যাতন ও দমন আইন—২০০০—এ প্রদত্ত সংজ্ঞা অনুযায়ী ‘শিশু অর্থ অনধিক ১৬ বছর বয়সের কোনো ব্যক্তি’। অন্যদিকে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন—২০১২ অনুযায়ী ‘শিশু’ অর্থ ১৮ বছর বয়স পূর্ণ করেনি, এমন কোনো ব্যক্তি’। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুসারে ১৪ বছরের কম বয়সীরা শিশু বলে বিবেচিত হবে। বাংলাদেশ শিশু আইন ১৯৭৪ অনুসারে ১৬বছরের কম বয়সী প্রত্যেকেই শিশু।

চলতি আইনগুলো যথাযথ সংস্কারের মাধ্যমে শিশুর জন্য একটি সর্বজনীন বয়স নির্ধারণ করা সময়ের দাবি ছিল। এরই ফলশ্রুতিতে

শিশু আইন ২০১৩ এ বলা হয়েছে, ‘বিদ্যমান অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, অনূর্ধ্ব ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত সকল ব্যক্তি শিশু হিসেবে গণ্য হইবে’।

একটি দেশের শিশুরা পরিচিত হোক একটি সংজ্ঞা দ্বারাই। শিশুরা তাদের ন্যায্য অধিকার লাভ করুক, শিশুর তাদের স্বপ্ন আর সম্ভাবনার বিকাশ ঘটুক। পরিশেষ কবি সুকান্তের ভাষায় বলতে চাই, “এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার” ।

লেখক: —

শেখ শোয়েব আহম্মেদ

শিক্ষার্থী (সমাজকর্ম বিভাগ)