ঢাকা ০৩:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
চাঁদাবাজির অভিযোগে সুনামগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ইমনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা কালিগঞ্জে হয়রানি, ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে বড়শিমলা কারবালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এইচপিভি টীকাদান কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন ডা: বুলবুল কবীর কালিগঞ্জে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও অসচ্ছল ব্যক্তিদের চেক বিতরণ দেশ নায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বেই আগামীর বাংলাদেশ গড়তে চাই – এ্যাডঃ সৈয়দ ইফতেখার আলী শ্যামনগরে আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবস্থাপনার উপর ওরিয়েন্টশন আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ নয়নতারা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে দোয়েল মহিলা উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে হরিণের মাংস সহ আটক দুই

কেউ কাউকে কখনো নামাজ পড়তে দেখেনি, সাতক্ষীরা তালায় অবস্থিত রহস্যময় মসজিদ ঘিরে এলাকাবাসীর নানান কৌতুহল

  • Sound Of Community
  • পোস্ট করা হয়েছে : ০৮:৪৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ১৫৩ জন পড়েছেন ।

এম এ মান্নান :

দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চল সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সীমান্তবর্তী খেশরা ইউনিয়নের অন্তর্গত শাহাজাতপুর গ্রাম। এই গ্রামটি একটি সময়ে জঙ্গল ছিল। এখানে কোন জনবসতি ছিল না। পরবর্তীতে হাপুশাহ্ ও টাপুশাহ্ নামের দুইজন দরবেশের আগমন ঘটে এই উপকূলে।

স্থানীয় প্রবীণ লোকদের ধারণা মতে, এক রাতের মধ্যে এই জঙ্গলে একটি প্রার্থনা স্থলের আবির্ভাব ঘটে। সে সময় হাপুশাহ্ ও টাপুশাহ্ এই প্রার্থনা স্থলে আল্লাহর গুণগান করতে শুরু করে। ধীরে ধীরে পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজনের যাতায়াত শুরু হয় সেখানে। হাপুশা ও টাপুশার নেতৃত্বে এই অঞ্চলে জনবসতি শুরু হয়।

পরবর্তীতে তাদের নাম অনুসারেই এই জনপদের নাম হয় শাহজাদপুর। শাহা থেকেই শাহজাদপুরের আবির্ভাব হয়।

বিদ্যমান স্তম্ভটি চুন-সুরকি ও ছোট ছোট ইটের দ্বারা তৈরি। একটি গম্বুজ, চারটি স্তম্ভ একটি দরজা ও দুইটি জালানার সমন্বয় তৈরি এই প্রার্থনা স্থলটি।

স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, তাদের বাপ দাদাদের মুখে গল্প শুনেছেন এখানে একসময় প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ( সাঃ)এর আদরের দুই নাতি ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইনের জীবনী সংশ্লিষ্ট নানা আলোচনা অনুষ্টিত হতো এখানে। তবে বর্তমানে বর্তমান প্রজন্ম বা এর আগের প্রজন্ম বা তার আগের পুরো জন্ম অর্থাৎ বিগত ৩ শত থেকে ৪ শত বছরের মধ্যে এই স্তম্ভটি ঠিক এভাবেই রয়েছে।

স্থানীয় মুজিবুর রহমান মোড়ল জানান, বাপ দাদা ও তার দাদা বংশ ক্রমে তারা গল্প শুনে এসেছেন এই স্তম্ভটি মাটির নিচ থেকেই আস্তে আস্তে উঠে একটি আকার ধারণ করে। মুখোগল্পে শুনেছি এখানে একটি সময়ে নামাজ কালাম করতো তবে আমরা চোখে কখনো দেখিনি। যে লোকটি এই প্রার্থনা স্থলটি তত্ত্ববেদন করত তিনি মারা গেছেন সেই সময়ে তার কবর এই পাশে রয়েছে কবরটি ১২ থেকে ১৪ হাত লম্বা।

বজলুর রহমান মোড়ল জানান, দাদাদের মুখে গল্প শুনেছি কোন এক সময়ে এখানে খুব জাঁকজমকপূর্ণভাবে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ(সাঃ) এর নাতি ইমাম হাসান ও ইমাম হোসাইনের নানান ধরনের অনুষ্ঠান এখানে পালিত হতো। পার্শ্ববর্তী কবরস্থানে একটি কবর রয়েছে যেটি এই স্তম্ভের ইটের সাথে মিলে যায় তাই ধারণা করা হয় সেই সময়ে যে দরবেশেরা এটির দেখভাল করত তাদের কবর এটি।

স্থানীয়রা জানান,এ অঞ্চলটি সুন্দরবন এলাকা ও উপকূলীয় অঞ্চল হওয়ায় সামগ্রিকভাবে এই অঞ্চলটি একটি দ্বীপ ছিল। সেই সময়ে হাপুশাহ ও টাপুশাহ নামের দুইজন দরবেশ এসে এখানে থাকতে শুরু করে। দাদাদের মুখে গল্প শুনেছি এই দুই ব্যক্তির নামের সংমিশ্রণে এই গ্রামটির নাম হয় শাহজাদপুর গ্রাম। এই এইভাবে গল্প আকারেই আমরা শুনে এসেছি আমার বাবারাও এভাবে গল্প করে শুনিয়েছে দাদারাও তার বাবাদের কাছ থেকে এই একি গল্প শুনে এসেছে কেউ কখনো এখানে কাউকে প্রার্থনা করতে দেখেনি। যথাযথ সংস্কারের অভাবে এই স্থানটি ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এই স্থানটির যথাযথ পরিচর্যা করলে পরবর্তী প্রজন্মের কাছেও এই গল্পটি জমা হয়ে থাকবে।

স্থানীয় সাইদুর রহমান আকাশ নামের এক ব্যক্তি জানান, এই স্থললের কোন ইট যদি কেউ বাড়িতে নিয়ে যায় সে অসুস্থ হয়ে পড়ে তাকে স্বপ্নে দেখানো হতো যে স্থান থেকে ইট এনেছে সে ইট গুলো ফিরিয়ে দিয়ে আসতে, যত সময় সে ফিরিয়ে না দিয়ে আসতো তার এই অসুস্থতা ভাব থেকে যেত। তাই ভয়ে ছোট বাচ্চারা থেকে শুরু করে সকল বয়সের মানুষ এখানকার কোন জিনিস স্পর্শ করে না রাতের বেলা এখানে মানুষ আসতে ভয় পায়।

স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা কওসার আলী সরদার জানান, শুনেছি এটি মসজিদ তবে কখনও নামাজ কালাম পড়তে দেখা যায়নি তবে এই স্থানটিতে কোন প্রকার অত্যাচার করা হলে তারা সেটা শাস্তি পেয়ে যায়।

খেশরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ওবাইদুর রহমান মিঠু জানান, লোকমুখে গল্প শুনেছি এই মসজিদটি মাটির নিচ থেকে আস্তে আস্তে উঠেছিল তাছাড়া সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য বলার মত নাই।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় প্রধান আফরোজা খান মিতা জানান, স্থানটির নাম শুনেছি তবে এখনো সেখানে পরিদর্শন করা হয়নি। নামটি তালিকায় রাখলাম পরবর্তীতে কখনো সুযোগ আসলে আস্তে আস্তে কাজ করা হবে এমন স্থান বাংলাদেশে অনেক রয়েছে আমরা চাইলেও একযোগে কাজ করতে পারিনা সুযোগ সুবিধা আসলে সকল স্থানে অল্প অল্প করে কাজ করে এগোতে থাকি।

Tag :
রিপোর্টার সম্পর্কে

Sound Of Community

জনপ্রিয় সংবাদ

চাঁদাবাজির অভিযোগে সুনামগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ইমনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

কেউ কাউকে কখনো নামাজ পড়তে দেখেনি, সাতক্ষীরা তালায় অবস্থিত রহস্যময় মসজিদ ঘিরে এলাকাবাসীর নানান কৌতুহল

পোস্ট করা হয়েছে : ০৮:৪৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

এম এ মান্নান :

দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চল সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সীমান্তবর্তী খেশরা ইউনিয়নের অন্তর্গত শাহাজাতপুর গ্রাম। এই গ্রামটি একটি সময়ে জঙ্গল ছিল। এখানে কোন জনবসতি ছিল না। পরবর্তীতে হাপুশাহ্ ও টাপুশাহ্ নামের দুইজন দরবেশের আগমন ঘটে এই উপকূলে।

স্থানীয় প্রবীণ লোকদের ধারণা মতে, এক রাতের মধ্যে এই জঙ্গলে একটি প্রার্থনা স্থলের আবির্ভাব ঘটে। সে সময় হাপুশাহ্ ও টাপুশাহ্ এই প্রার্থনা স্থলে আল্লাহর গুণগান করতে শুরু করে। ধীরে ধীরে পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজনের যাতায়াত শুরু হয় সেখানে। হাপুশা ও টাপুশার নেতৃত্বে এই অঞ্চলে জনবসতি শুরু হয়।

পরবর্তীতে তাদের নাম অনুসারেই এই জনপদের নাম হয় শাহজাদপুর। শাহা থেকেই শাহজাদপুরের আবির্ভাব হয়।

বিদ্যমান স্তম্ভটি চুন-সুরকি ও ছোট ছোট ইটের দ্বারা তৈরি। একটি গম্বুজ, চারটি স্তম্ভ একটি দরজা ও দুইটি জালানার সমন্বয় তৈরি এই প্রার্থনা স্থলটি।

স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, তাদের বাপ দাদাদের মুখে গল্প শুনেছেন এখানে একসময় প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ( সাঃ)এর আদরের দুই নাতি ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইনের জীবনী সংশ্লিষ্ট নানা আলোচনা অনুষ্টিত হতো এখানে। তবে বর্তমানে বর্তমান প্রজন্ম বা এর আগের প্রজন্ম বা তার আগের পুরো জন্ম অর্থাৎ বিগত ৩ শত থেকে ৪ শত বছরের মধ্যে এই স্তম্ভটি ঠিক এভাবেই রয়েছে।

স্থানীয় মুজিবুর রহমান মোড়ল জানান, বাপ দাদা ও তার দাদা বংশ ক্রমে তারা গল্প শুনে এসেছেন এই স্তম্ভটি মাটির নিচ থেকেই আস্তে আস্তে উঠে একটি আকার ধারণ করে। মুখোগল্পে শুনেছি এখানে একটি সময়ে নামাজ কালাম করতো তবে আমরা চোখে কখনো দেখিনি। যে লোকটি এই প্রার্থনা স্থলটি তত্ত্ববেদন করত তিনি মারা গেছেন সেই সময়ে তার কবর এই পাশে রয়েছে কবরটি ১২ থেকে ১৪ হাত লম্বা।

বজলুর রহমান মোড়ল জানান, দাদাদের মুখে গল্প শুনেছি কোন এক সময়ে এখানে খুব জাঁকজমকপূর্ণভাবে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ(সাঃ) এর নাতি ইমাম হাসান ও ইমাম হোসাইনের নানান ধরনের অনুষ্ঠান এখানে পালিত হতো। পার্শ্ববর্তী কবরস্থানে একটি কবর রয়েছে যেটি এই স্তম্ভের ইটের সাথে মিলে যায় তাই ধারণা করা হয় সেই সময়ে যে দরবেশেরা এটির দেখভাল করত তাদের কবর এটি।

স্থানীয়রা জানান,এ অঞ্চলটি সুন্দরবন এলাকা ও উপকূলীয় অঞ্চল হওয়ায় সামগ্রিকভাবে এই অঞ্চলটি একটি দ্বীপ ছিল। সেই সময়ে হাপুশাহ ও টাপুশাহ নামের দুইজন দরবেশ এসে এখানে থাকতে শুরু করে। দাদাদের মুখে গল্প শুনেছি এই দুই ব্যক্তির নামের সংমিশ্রণে এই গ্রামটির নাম হয় শাহজাদপুর গ্রাম। এই এইভাবে গল্প আকারেই আমরা শুনে এসেছি আমার বাবারাও এভাবে গল্প করে শুনিয়েছে দাদারাও তার বাবাদের কাছ থেকে এই একি গল্প শুনে এসেছে কেউ কখনো এখানে কাউকে প্রার্থনা করতে দেখেনি। যথাযথ সংস্কারের অভাবে এই স্থানটি ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এই স্থানটির যথাযথ পরিচর্যা করলে পরবর্তী প্রজন্মের কাছেও এই গল্পটি জমা হয়ে থাকবে।

স্থানীয় সাইদুর রহমান আকাশ নামের এক ব্যক্তি জানান, এই স্থললের কোন ইট যদি কেউ বাড়িতে নিয়ে যায় সে অসুস্থ হয়ে পড়ে তাকে স্বপ্নে দেখানো হতো যে স্থান থেকে ইট এনেছে সে ইট গুলো ফিরিয়ে দিয়ে আসতে, যত সময় সে ফিরিয়ে না দিয়ে আসতো তার এই অসুস্থতা ভাব থেকে যেত। তাই ভয়ে ছোট বাচ্চারা থেকে শুরু করে সকল বয়সের মানুষ এখানকার কোন জিনিস স্পর্শ করে না রাতের বেলা এখানে মানুষ আসতে ভয় পায়।

স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা কওসার আলী সরদার জানান, শুনেছি এটি মসজিদ তবে কখনও নামাজ কালাম পড়তে দেখা যায়নি তবে এই স্থানটিতে কোন প্রকার অত্যাচার করা হলে তারা সেটা শাস্তি পেয়ে যায়।

খেশরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ওবাইদুর রহমান মিঠু জানান, লোকমুখে গল্প শুনেছি এই মসজিদটি মাটির নিচ থেকে আস্তে আস্তে উঠেছিল তাছাড়া সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য বলার মত নাই।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় প্রধান আফরোজা খান মিতা জানান, স্থানটির নাম শুনেছি তবে এখনো সেখানে পরিদর্শন করা হয়নি। নামটি তালিকায় রাখলাম পরবর্তীতে কখনো সুযোগ আসলে আস্তে আস্তে কাজ করা হবে এমন স্থান বাংলাদেশে অনেক রয়েছে আমরা চাইলেও একযোগে কাজ করতে পারিনা সুযোগ সুবিধা আসলে সকল স্থানে অল্প অল্প করে কাজ করে এগোতে থাকি।