প্রথমবারের মতো দেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২’ মঙ্গলবার (১৪ জুন) মধ্যরাত থেকে শুরু হয়েছে। আজ বুধবার (১৫ জুন) সকাল ৮টা থেকে প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি যাওয়া শুরু করেছে গণনাকারীরা।
এবার সারাদেশে একযোগে তিন লাখ ৬৫ হাজার ৬৯৭ জন গণনাকারী এ শুমারি পরিচালনা করছেন। ট্যাবের (কম্পিউটার) সাহায্যে আগামী সাত দিন তারা তথ্য সংগ্রহ করবেন। এতে প্রত্যেক ব্যক্তিকে ৩৫টি তথ্য দিতে হবে। এই জনশুমারি ও গৃহগণনা শেষ হবে ২১ জুন।
আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী খানা প্রধানের (তথ্যপ্রদানকারি) তথ্য গোপন রাখা হবে। কাজেই ভয়ের কিছু নেই। কেউ যেন বাদ না পড়ে সেজন্য সবার সহযোগিতা দরকার। কারণ প্রতি ১০ বছর পর পর এই শুমারি করা হয়। তাতে প্রায় দুই কোটি মানুষ বেশি বলে গণ্য হয়। কাজেই এবারও দুই কোটি মতো মানুষ শুমারিতে যোগ হতে পারে। গণনা শেষে খুব তাড়াতাড়ি চূড়ান্ত রিপোর্ট করা হবে।
এবারই প্রথম ডিজিটাল পদ্ধতিতে জনশুমারি কার্যক্রম পরিচালিত হতে যাচ্ছে। একটি ওয়েবভিত্তিক ইনটিগ্রেটেড সেনসাস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইসিএমএস) প্রস্তুতসহ জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেমে (জিআইএস) গণনা এলাকার বিভিন্ন পর্যায়ের কন্ট্রোল ম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে।
এবারের শুমারিতে ব্যক্তি মডিউল হিসেবে থাকবে সদস্যদের ক্রমিক নম্বর, খানার সদস্যদের নাম, বয়স, লিঙ্গ, খানা প্রধানের সঙ্গে সম্পর্ক, বৈবাহিক অবস্থা, ধর্ম, প্রতিবন্ধী হলে তার ধরণ, পড়তে লিখতে পারেন কি, বর্তমানে শিক্ষার্থী কি? সর্বোচ্চ শ্রেণি পাস, পাসের ক্ষেত্র, কাজের মর্যাদা, কর্মরত হলে কাজের ধরণ, কর্মরত হলে কাজের ক্ষেত্র, বর্তমানে কোনো প্রশিক্ষণে নিয়োজিত আছেন কি? নিজস্ব ব্যবহারের মোবাইল ফোন আছে কি? মাসে একবার ইন্টারনেট ব্যবহার করেছেন কি? এসব তথ্যও নেওয়া হবে। ব্যাংক/বিমা/ডাকঘর/সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট আছে কি? মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ, রকেট ও নগদ অ্যাকাউন্ট আছে কি? ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কোড যদি হয়ে থাকে, জাতীয়তা কি? বাংলাদেশি হলে নিজ জেলা, বিদেশি হলে দেশের নাম লিখতে হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় প্রথম আদমশুমারি ও গৃহগণনা পরিচালিত হয় ১৯৭৪ সালে। এরই পর ১৯৮১, ১৯৯১, ২০০১ এবং ২০১১ সালে যথাক্রমে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ এবং পঞ্চম আদমশুমারি ও গৃহগণনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম শুমারিতে সাত কোটি ১৫ লাখ মানুষ ছিল, যা সর্বশেষ ২০১১ সালের শুমারিতে ১৪ কোটি ৯৮ লাখ।
তথ্য: এএইচএম বজলুর রহমান, সিও, বিএনএনআরসি