ঢাকা ০২:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ নয়নতারা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে দোয়েল মহিলা উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে হরিণের মাংস সহ আটক দুই সাতক্ষীরা সাস্থ্য উন্নয়ন কমিটির বর্ধিত সভায় ২৬ অক্টোবর খুলনা রোড মোড় মানব বন্ধনের সিদ্ধান্ত খুলনা প্রেসক্লাবে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি উপ-পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযান অনুষ্ঠিত  কালিগঞ্জে তরুন দলের কমিটি গঠন সভাপতি সুলতান,সম্পাদক আলতাপ পানি নিষ্কাশনে ইউএনও,র প্রাণপণ চেষ্টা অব্যহত তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন আবারও পানিবন্ধী বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ সঃ কে কটুক্তির প্রতিবাদে রূপসা বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

দরিদ্র মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার পর মারা যান নিউজিল্যান্ডের অধিবাসী ৭৪ বছর বয়স্ক ডাক্তার এড্রিক বেকার

  • Sound Of Community
  • পোস্ট করা হয়েছে : ০৯:৫৮:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২২
  • ৩৬১ জন পড়েছেন ।

৩২ বছর টাঙ্গাইল জেলার মধুপুরগড়ে অবস্থিত কালিয়াকৈরে গ্রামের দরিদ্র মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার পর মারা যান নিউজিল্যান্ডের অধিবাসী ৭৪ বছর বয়স্ক ডাক্তার এড্রিক বেকার। গ্রামের সবার কাছেই যিনি ডাক্তার ভাই হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

দূরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হলে অনেকেই চেয়েছিলেন- উনাকে ঢাকাতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা দিতে। তিনি ঢাকা যাননি। তাঁর তৈরি করা মধুপুরের ওই হাসপাতালেই তিনি ২০১৫ সালে মারা যান এবং হাসপাতালের পাশেই তাকে সমাহিত করা হয়।

মৃত্যুর পূর্বে তিনি চেয়েছিলেন- এই দেশের কোনো মানবতবাদী ডাক্তার যেন গ্রামে এসে তাঁর প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালের হাল ধরে। ডা: বেকার তার শেষ ইচ্ছা পোষণ করে গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, প্রতি বছর বাংলাদেশে কয়েক হাজার ছেলেমেয়ে ডাক্তার হয়ে বের হচ্ছে। এদের মধ্য থেকে অন্তত একজন ডাক্তার চলে আসবেন আমাদের এই গরিবের হাসপাতালে। নিজেকে নিয়োজিত করবেন গ্রামের অসহায় দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সেবায়।

কিন্তু হানিফ সংকেতের ইত্যাদিতে প্রচারিত প্রতিবেদন অনুসারে – ডাঃ বেকারের মৃত্যুর ৪ বছর হয়ে গেলেও এ দেশের একজন ডাক্তারও তাঁর সেই আহ্বানে সাড়া দেয়নি।

দেশের কেউ সাড়া না দিলেও তাঁর আহ্বানে সূদর আমেরিকা থেকে ছুটে এসেছেন- আরেক মানবতাবাদী ডাক্তার দম্পতি জেসিন এবং মেরিন্ডি। যে দেশে যাওয়ার জন্য দুনিয়ার সবাই পাগল। শুধু নিজেরা যে এসেছেন তা না। নিজেদের সন্তানদেরও সাথে করে নিয়ে এসেছেন। ভর্তি করে দিয়েছেন গ্রামেরই স্কুলে। গ্রামের শিশুদের সাথে খেলছে। ডাক্তার জেসিন কী সুন্দর করে লুঙ্গি পরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

অথচ আমরা সুযোগ পেলেই গ্রাম থেকে শহরে ছুটি। শহর থেকে বিদেশ পাড়ি দেই। শিশু জন্মের পর থেকেই চিন্তা থাকে কত দ্রুত সন্তানকে আধুনিক মিডিয়াম ইংরেজি স্কুলে বাচ্চাকে পড়াবো। লুঙ্গি পরাতো আমাদের রুচির সাথে আজ বড়ই বেমানান। লুঙ্গি পরতে পারিনা বলতে পারলে- আমাদের আভিজাত্যের পারদ শুধু একটুকু না অনেকটুকুই বাড়ে।

সেই জায়গায় ডাঃ এড্রিক বেকারের মতো ডাঃ জেসন এবং মেরিণ্ডা দম্পত্তি আমাদের এক বিশাল লজ্জায় ফেলে দিলেন।

তারা বলেন, ‘প্রথমে ভাষা শিখতে শুরু করি। ভাত আর পাঙ্গাশ মাছ খাওয়া রপ্ত করেছি। বাঙালি পোশাক পরতে আমরা দুজনেই ভালোবাসি। ডাক্তার ভাই যে পদ্ধতিতে হাসপাতাল চালাতেন, আমরা সে পদ্ধতিই অনুসরণ করছি। এখানে সবাই আন্তরিক।’

এই দম্পতিরও ইচ্ছে বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সেবা করতে চান জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত, মরতে চান এই দেশের মাটিতেই….

অথচ, আমাদের দেশে প্রতিবছর হাজার হাজার ডাক্তার তৈরি হচ্ছে যারা সরকারি/বেসরকারি বড় বড় হাসপাতাল রেখে উপজেলা/ইউনিয়ন পর্যায়ের হাসপাতালেই যায় না! ট্রান্সফার হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসলেও তিন মাসের বেশি থাকেন না, তবদির করে ফিরে যান ঢাকার বড় কোন হাসপাতালে।

আর হৃদয়বান এই দম্পতি সম্পদ আর সুখের মোহ ত্যাগ করে আমেরিকা ছেড়ে স্থায়ীভাবে চলে এসেছেন টাঙ্গাইলের মধুপুরে। এখন গ্রামের মানুষের কাছে জেসিন হয়ে উঠেছেন নতুন ডাক্তার ভাই।

Tag :
রিপোর্টার সম্পর্কে

Sound Of Community

জনপ্রিয় সংবাদ

আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ

দরিদ্র মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার পর মারা যান নিউজিল্যান্ডের অধিবাসী ৭৪ বছর বয়স্ক ডাক্তার এড্রিক বেকার

পোস্ট করা হয়েছে : ০৯:৫৮:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২২

৩২ বছর টাঙ্গাইল জেলার মধুপুরগড়ে অবস্থিত কালিয়াকৈরে গ্রামের দরিদ্র মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার পর মারা যান নিউজিল্যান্ডের অধিবাসী ৭৪ বছর বয়স্ক ডাক্তার এড্রিক বেকার। গ্রামের সবার কাছেই যিনি ডাক্তার ভাই হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

দূরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হলে অনেকেই চেয়েছিলেন- উনাকে ঢাকাতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা দিতে। তিনি ঢাকা যাননি। তাঁর তৈরি করা মধুপুরের ওই হাসপাতালেই তিনি ২০১৫ সালে মারা যান এবং হাসপাতালের পাশেই তাকে সমাহিত করা হয়।

মৃত্যুর পূর্বে তিনি চেয়েছিলেন- এই দেশের কোনো মানবতবাদী ডাক্তার যেন গ্রামে এসে তাঁর প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালের হাল ধরে। ডা: বেকার তার শেষ ইচ্ছা পোষণ করে গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, প্রতি বছর বাংলাদেশে কয়েক হাজার ছেলেমেয়ে ডাক্তার হয়ে বের হচ্ছে। এদের মধ্য থেকে অন্তত একজন ডাক্তার চলে আসবেন আমাদের এই গরিবের হাসপাতালে। নিজেকে নিয়োজিত করবেন গ্রামের অসহায় দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সেবায়।

কিন্তু হানিফ সংকেতের ইত্যাদিতে প্রচারিত প্রতিবেদন অনুসারে – ডাঃ বেকারের মৃত্যুর ৪ বছর হয়ে গেলেও এ দেশের একজন ডাক্তারও তাঁর সেই আহ্বানে সাড়া দেয়নি।

দেশের কেউ সাড়া না দিলেও তাঁর আহ্বানে সূদর আমেরিকা থেকে ছুটে এসেছেন- আরেক মানবতাবাদী ডাক্তার দম্পতি জেসিন এবং মেরিন্ডি। যে দেশে যাওয়ার জন্য দুনিয়ার সবাই পাগল। শুধু নিজেরা যে এসেছেন তা না। নিজেদের সন্তানদেরও সাথে করে নিয়ে এসেছেন। ভর্তি করে দিয়েছেন গ্রামেরই স্কুলে। গ্রামের শিশুদের সাথে খেলছে। ডাক্তার জেসিন কী সুন্দর করে লুঙ্গি পরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

অথচ আমরা সুযোগ পেলেই গ্রাম থেকে শহরে ছুটি। শহর থেকে বিদেশ পাড়ি দেই। শিশু জন্মের পর থেকেই চিন্তা থাকে কত দ্রুত সন্তানকে আধুনিক মিডিয়াম ইংরেজি স্কুলে বাচ্চাকে পড়াবো। লুঙ্গি পরাতো আমাদের রুচির সাথে আজ বড়ই বেমানান। লুঙ্গি পরতে পারিনা বলতে পারলে- আমাদের আভিজাত্যের পারদ শুধু একটুকু না অনেকটুকুই বাড়ে।

সেই জায়গায় ডাঃ এড্রিক বেকারের মতো ডাঃ জেসন এবং মেরিণ্ডা দম্পত্তি আমাদের এক বিশাল লজ্জায় ফেলে দিলেন।

তারা বলেন, ‘প্রথমে ভাষা শিখতে শুরু করি। ভাত আর পাঙ্গাশ মাছ খাওয়া রপ্ত করেছি। বাঙালি পোশাক পরতে আমরা দুজনেই ভালোবাসি। ডাক্তার ভাই যে পদ্ধতিতে হাসপাতাল চালাতেন, আমরা সে পদ্ধতিই অনুসরণ করছি। এখানে সবাই আন্তরিক।’

এই দম্পতিরও ইচ্ছে বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সেবা করতে চান জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত, মরতে চান এই দেশের মাটিতেই….

অথচ, আমাদের দেশে প্রতিবছর হাজার হাজার ডাক্তার তৈরি হচ্ছে যারা সরকারি/বেসরকারি বড় বড় হাসপাতাল রেখে উপজেলা/ইউনিয়ন পর্যায়ের হাসপাতালেই যায় না! ট্রান্সফার হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসলেও তিন মাসের বেশি থাকেন না, তবদির করে ফিরে যান ঢাকার বড় কোন হাসপাতালে।

আর হৃদয়বান এই দম্পতি সম্পদ আর সুখের মোহ ত্যাগ করে আমেরিকা ছেড়ে স্থায়ীভাবে চলে এসেছেন টাঙ্গাইলের মধুপুরে। এখন গ্রামের মানুষের কাছে জেসিন হয়ে উঠেছেন নতুন ডাক্তার ভাই।