ঢাকা ০১:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ নয়নতারা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে দোয়েল মহিলা উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে হরিণের মাংস সহ আটক দুই সাতক্ষীরা সাস্থ্য উন্নয়ন কমিটির বর্ধিত সভায় ২৬ অক্টোবর খুলনা রোড মোড় মানব বন্ধনের সিদ্ধান্ত খুলনা প্রেসক্লাবে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি উপ-পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযান অনুষ্ঠিত  কালিগঞ্জে তরুন দলের কমিটি গঠন সভাপতি সুলতান,সম্পাদক আলতাপ পানি নিষ্কাশনে ইউএনও,র প্রাণপণ চেষ্টা অব্যহত তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন আবারও পানিবন্ধী বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ সঃ কে কটুক্তির প্রতিবাদে রূপসা বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

মন্দিরে কোরআন শরীফ রাখার অভিযোগে গ্রেপ্তার ১

  • Sound Of Community
  • পোস্ট করা হয়েছে : ০২:০৫:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২২
  • ২৮২ জন পড়েছেন ।

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় মন্দিরে কোরআন শরীফ রেখে পালিয়ে যাওয়ার সময় মো. ইদ্রিস (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে স্থানীয় লোকজন আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) পুলিশ বাদী হয়ে ধর্মীয় অবমাননা আইনের ধারায় মামলা রুজু করেছেন।

গেলো বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার বগা ইউনিয়নের উত্তরপালপাড়া গ্রামে ওই ঘটনা ঘটেছে।আটক ইদ্রিসের বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া গ্রামে। তাঁর বাবার নাম মো. লেদু মিয়া।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার উত্তরপালপাড়া গ্রামের রাধাগোবিন্দ মন্দিরের অদূরে দিলীপ পালের বাড়িতে গত তিন দিন ধরে হিন্দু সম্প্রদায়ের নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান চলছে। গত বুধবার ছিল অনুষ্ঠানের শেষ দিন। ওইদিন রাত তিনটার দিকে অনুষ্ঠান চলাকালীন ইদ্রিস নামে ওই ব্যক্তি হাতে একটি ব্যাগ নিয়ে অনুষ্ঠান স্থলে ঢুকে। ওই সময় শুকরঞ্জন বৈরাগী নামে এক পুরোহিতের বাধার মুখে ওই ব্যক্তি চলে যায়।

ওই রাতেই অনুষ্ঠান শেষে সঞ্জয় পাল (৩৪), সজল পাল (৩০) ও কার্তিক পাল (৩৫)  নামে তিন ব্যক্তি বাড়ি ফেরার পথে রাত সাড়ে তিনটার দিকে  দেখতে পান পাশের কালীমাতা মন্দির থেকে দাড়িওয়ালা ওই ব্যক্তি বের হয়ে হচ্ছেন।

সঞ্জয় পাল বলেন, গভীর রাতে মন্দির থেকে ওই ব্যক্তিকে বের হতে দেখে জানতে চাই মন্দিরে ঢুকলেন কেন? উত্তরে ওই ব্যক্তি বলেন, সেজদা দিতে মন্দিরে গিয়েছিলাম। আপনি মুসলিম হয়ে মন্দিরে গেলেন একথা বলতে-ই দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাঁদের ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে ইদ্রিসকে আটক করে ফেলে।

পরে তাঁরা দেখতে পান মন্দিরের কালীমাতা প্রতিমার সামনে ঘটের ওপর একটি ব্যাগ রাখা। ওই ব্যাগ খুলে দেখতে পান কোরআন শরীফ। একপর্যায়ে ইদ্রিস কোরআন শরীফ রাখার কথা স্বীকার করেন। পরে পুলিশে খবর দিলে ভোররাত চারটার দিকে পুলিশ গিয়ে ইদ্রিসকে আটক করে বাউফল থানায় নিয়ে যান।

উত্তরপালপাড়া রাধাগোবিন্দ মন্দিরের সভাপতি দিলীপ পাল বলেন,‘ভাগ্য ভালো যে, হাতে-নাতে ধরা পড়েছে। তা না হলে বড় ধরনের অঘটন ঘটতে পারতো। তখন এর দায় কে নিত? এমন ঘটনা ওই ব্যক্তি কেন এবং কি উদ্দেশ্যে করেছে তা প্রশাসনের অধিকতর তদন্ত করে বের করতে হবে।’

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ বাউফল উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অতুল চন্দ্র পাল বলেন,‘ আমরা উপজেলা নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়কে আতংঙ্কিত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি।’

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানা গেছে ওই ব্যক্তির বাড়ি বাকখরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া গ্রামে। সে দুমকি উপজেলার আঙ্গারিয়া এলাকার কদমতলা আবাসনে থাকেন। তাঁর এক স্বজন জানিয়েছেন ইদ্রিস মাঝে মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ করতেন। এরপরেও এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ধর্মীয় অবমাননা আইনের ধারায় মামলা রুজু করেছেন এবং তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’

পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে আতংঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নাই। এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে। মন্দির এলাকায় পুলিশি মোতায়েন করা হয়েছে।’

Tag :
রিপোর্টার সম্পর্কে

Sound Of Community

জনপ্রিয় সংবাদ

আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ

মন্দিরে কোরআন শরীফ রাখার অভিযোগে গ্রেপ্তার ১

পোস্ট করা হয়েছে : ০২:০৫:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২২

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় মন্দিরে কোরআন শরীফ রেখে পালিয়ে যাওয়ার সময় মো. ইদ্রিস (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে স্থানীয় লোকজন আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) পুলিশ বাদী হয়ে ধর্মীয় অবমাননা আইনের ধারায় মামলা রুজু করেছেন।

গেলো বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার বগা ইউনিয়নের উত্তরপালপাড়া গ্রামে ওই ঘটনা ঘটেছে।আটক ইদ্রিসের বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া গ্রামে। তাঁর বাবার নাম মো. লেদু মিয়া।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার উত্তরপালপাড়া গ্রামের রাধাগোবিন্দ মন্দিরের অদূরে দিলীপ পালের বাড়িতে গত তিন দিন ধরে হিন্দু সম্প্রদায়ের নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান চলছে। গত বুধবার ছিল অনুষ্ঠানের শেষ দিন। ওইদিন রাত তিনটার দিকে অনুষ্ঠান চলাকালীন ইদ্রিস নামে ওই ব্যক্তি হাতে একটি ব্যাগ নিয়ে অনুষ্ঠান স্থলে ঢুকে। ওই সময় শুকরঞ্জন বৈরাগী নামে এক পুরোহিতের বাধার মুখে ওই ব্যক্তি চলে যায়।

ওই রাতেই অনুষ্ঠান শেষে সঞ্জয় পাল (৩৪), সজল পাল (৩০) ও কার্তিক পাল (৩৫)  নামে তিন ব্যক্তি বাড়ি ফেরার পথে রাত সাড়ে তিনটার দিকে  দেখতে পান পাশের কালীমাতা মন্দির থেকে দাড়িওয়ালা ওই ব্যক্তি বের হয়ে হচ্ছেন।

সঞ্জয় পাল বলেন, গভীর রাতে মন্দির থেকে ওই ব্যক্তিকে বের হতে দেখে জানতে চাই মন্দিরে ঢুকলেন কেন? উত্তরে ওই ব্যক্তি বলেন, সেজদা দিতে মন্দিরে গিয়েছিলাম। আপনি মুসলিম হয়ে মন্দিরে গেলেন একথা বলতে-ই দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাঁদের ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে ইদ্রিসকে আটক করে ফেলে।

পরে তাঁরা দেখতে পান মন্দিরের কালীমাতা প্রতিমার সামনে ঘটের ওপর একটি ব্যাগ রাখা। ওই ব্যাগ খুলে দেখতে পান কোরআন শরীফ। একপর্যায়ে ইদ্রিস কোরআন শরীফ রাখার কথা স্বীকার করেন। পরে পুলিশে খবর দিলে ভোররাত চারটার দিকে পুলিশ গিয়ে ইদ্রিসকে আটক করে বাউফল থানায় নিয়ে যান।

উত্তরপালপাড়া রাধাগোবিন্দ মন্দিরের সভাপতি দিলীপ পাল বলেন,‘ভাগ্য ভালো যে, হাতে-নাতে ধরা পড়েছে। তা না হলে বড় ধরনের অঘটন ঘটতে পারতো। তখন এর দায় কে নিত? এমন ঘটনা ওই ব্যক্তি কেন এবং কি উদ্দেশ্যে করেছে তা প্রশাসনের অধিকতর তদন্ত করে বের করতে হবে।’

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ বাউফল উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অতুল চন্দ্র পাল বলেন,‘ আমরা উপজেলা নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়কে আতংঙ্কিত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি।’

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানা গেছে ওই ব্যক্তির বাড়ি বাকখরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া গ্রামে। সে দুমকি উপজেলার আঙ্গারিয়া এলাকার কদমতলা আবাসনে থাকেন। তাঁর এক স্বজন জানিয়েছেন ইদ্রিস মাঝে মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ করতেন। এরপরেও এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ধর্মীয় অবমাননা আইনের ধারায় মামলা রুজু করেছেন এবং তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’

পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে আতংঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নাই। এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে। মন্দির এলাকায় পুলিশি মোতায়েন করা হয়েছে।’