পরকীয়ার জেরে প্রেমিক সহ স্বামীকে জবাই করে হত্যা মামলার রায়ে ১২ এপ্রিল লালমনিরহাট জেলা জজ আদালতের বিচারক আজ স্ত্রী সহ প্রেমিক কে যাবজ্জীবন কারা ভোগ ও সহ উভয়ের ১০ হাজার টাকা করে জড়িমানার আদেশ দিয়েছেন। অনাদায়ে আরও এক মাসের করে ভোগের আদেশ দেন আদালত। ঘটনাটি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নের সরকারের হাট গ্রামের। ওই গ্রামে বসবাস করতেন রিক্সা চালক হামিদার রহমান(৩৫)। সে প্রয়োজনে কখনও নিজ এলাকায় আবার কখনও জেলার বাইরে রিক্সা চলিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাদের দুই ছেলে আর দুই কন্যা মিয়ে ৬ জনের সংসার চলতো কোন রকমে।
এঅবস্থায় একই গ্রামের অধিবাসী তাদের বাড়ির পার্শেই জমি কিনে বাড়ি করে জনৈক সিরাজুল(৪০)ইসলাম পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস শুরু করেন। হামিদার রহমান বেশিরভাগ সময় বাড়িতে না থাকার সুবাদে সিরাজুল ইসলাম তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগমে (৩০) এর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। ২০১৮ সালের ২৩ জানুয়ারী বিকেলে রিক্সা চালক হামিদার রহমান বাড়ি ফিরে নিজেদের শয়ন কক্ষের বিছানায় সিরাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। তারা হামিদারের উপস্থিতি টের পায়।এসম হামিদার শয়ন কক্ষ থেকে বেড় হয়ে রান্না ঘড়ে যায়। সিরাজুলও রান্নাঘড়ে গেলে উভয়ের মধ্যে দস্তাধস্তি শুরু হয়। এতে স্বামীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় স্ত্রীও।এক পর্যায়ে তারা উভয়ে রান্নাঘড়ে থাকা ব্যাবহারিত ধারালো ছুরি দিয়ে জবাই করে স্বামী হামিদার রহমানকে।পরে সিরাজুল ইসলাম দ্রুত পালিয়ে যায়।
এঘটনায় পরের দিন ২০১৮ সালের ২৪ জানুয়ারী মৃত হামিদার রহমানের ভগ্নীপতি মজিবর রহমান পাটগ্রাম থানায় সিরাজুল ইসলাম ও মনোয়ারায় বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।পুলিশ মনোয়ারা বেগম ও সিরাজুল ইসলামকে গ্রেফতার করে কোর্টে সোপর্দ করলে বিজ্ঞা আদালত তাদের জেল হাজতে প্রেরন করেন।
মামলাটি দীর্ঘ চলে লালমবিরহাট জেলা জজ আদালতে। মামলায় উপস্থাপিত বিষয়াদি প্রমানে বাদীপক্ষ সক্ষম হওয়ায় জেলা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোঃ মিজানুর রহমান স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ও তার প্রেমীক সিরাজুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাভোগ উভয়ের ১০ হাজার টাকা করে জড়িমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাভোগের দন্ডাদেশ বাড়িয়ে দেন।
মামলার রায়ে বাদীপক্ষ ও বিজ্ঞা কৌশলী আকমল হোসেন সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এ রায়ে ন্যায় বিচার নিশ্চিত হয়েছে।অপরদিক এ মামলার বাদী মজিবর রহমান জানান, এ রায়ে আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি।তিনি দ্রুত রায় কার্যকরের দাবী জানান।