ঢাকা ০৯:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ নয়নতারা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে দোয়েল মহিলা উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে হরিণের মাংস সহ আটক দুই সাতক্ষীরা সাস্থ্য উন্নয়ন কমিটির বর্ধিত সভায় ২৬ অক্টোবর খুলনা রোড মোড় মানব বন্ধনের সিদ্ধান্ত খুলনা প্রেসক্লাবে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি উপ-পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযান অনুষ্ঠিত  কালিগঞ্জে তরুন দলের কমিটি গঠন সভাপতি সুলতান,সম্পাদক আলতাপ পানি নিষ্কাশনে ইউএনও,র প্রাণপণ চেষ্টা অব্যহত তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন আবারও পানিবন্ধী বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ সঃ কে কটুক্তির প্রতিবাদে রূপসা বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

বাল্য বিবাহে নিবন্ধন দেওয়ায় অপর্কমের হোতা বাশারের নিবন্ধন বাতিলের দাবি

  • Sound Of Community
  • পোস্ট করা হয়েছে : ০৫:২২:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ৩৪২ জন পড়েছেন ।

দেবহাটা প্রতিনিধি:

বাল্যবিবাহ, ভূয়া বিয়ে, জালজালিয়াতি, অতিরিক্ত অর্থ আদায়, প্রতারণা কোন কিছুতে কমতি নেই দেবহাটা নওয়াপাড়া ইউনিয়নের মুসলিম বিবাহ রেজিস্টার কাজী আবুল বাশারের। বিভিন্ন অপকর্ম করে একাধিকবার ধরা খেলেও পরিবর্তন হয়নি তার। বারবার অপরাধ করে অর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে পার পেয়ে যান এই আবুল বাশার। এমনকি বিভিন্ন পর্যয়ের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তি, জনপ্রতিবন্ধী সহ বিভিন্ন মানুষকে ম্যানেজ করা তার খুবই সহজ ব্যাপার। আর তাই নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তার এই অপকর্ম চলে আসছে বহুদিন ধরে। এই আবুল বাশার নাংলা ঘোনাপাড়া মহিলা মাদরাসার সুপার। তিনি তথ্যগোপন করে চাকুরী করতেন যুব উন্নয়নের ন্যাশনাল সার্ভিসেও। সেখানে প্রায় ২০ জন ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মীর হয়ে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া প্রত্যয়ন দেয়ার ঘটনায় বাশার সহ ওই ২০ কর্মীকে চাকরীচ্যুত করা হয় ন্যাশনাল সার্ভিস থেকে। এরপর মাদরাসার সুপারের পাশাপাশি বাশার চাকরী করছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনে। পাশাপাশি উপজেলাব্যাপী আলোচিত চিহ্নিত জামায়াত নেতা বাশার গাজীরহাট বাজারে জালিয়াতির আরেক রমরমা ব্যবসা খুলে বসেছেন ‘কাজী অফিস’ নামে। কাজী অফিসটিতে জন্ম নিবন্ধন সহ বিভিন্ন কাগজপত্র জালিয়াতি করে বাল্যবিবাহ থেকে শুরু করে রেজিস্ট্রি বিহীন ভুয়া বিয়েও অহরহ দিয়ে থাকে সে। এই কাজী অফিস নামের ঘরের ভিতরে রয়েছে গোপন কক্ষ। সেখানে রাত্রিযাপন সহ সব ধরণের সুবিধাও রয়েছে। এমনকি বিবাহের কাগজ নিতে তাকে দিতে হয় মোটা অংকের টাকা।

অনেক নারীদেরও সেখানে বার বার এনে হয়রানি করেন তিনি। এছাড়া তিনি যে মাদ্রাসা পরিচালনায় করেন সেখানে থেকে বিভিন্ন ভবে অর্থ আত্বসাৎএর অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। বাল্য বিবাহ, নারী কেলেংকারী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিল্ডিং বরাদ্ধ, এমপি’র ডিও পাওয়ানের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা, বিভিন্ন অনুদান পাওয়ার নামে দালালীতে বেশ দক্ষ তিনি। এছাড়া একই ছাত্রী দিয়ে ৫ম, ৮ম, ১০ম এর পাবলিক পরীক্ষায় বারবার অংশগ্রহণ, বডি চেঞ্জ, ভাড়া করা শিক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করান তিনি। যার প্রেক্ষিতে ২০২৯ সালের ২২ নভেম্বর ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায় মুল পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র জালিয়াতি করে ৯ ভুয়া পরীক্ষার্থীর অংশগ্রহণের ঘটনায় ধরা পরেন তিনি। পরে মামলা হলেও অজানা কারনে তিনি পার পেয়ে যান। তাছাড়া বিবাহ ও তালাকে সরকারি ফি এর বাইরে জোরপূর্বক অতিরিক্ত টাকা আদায়, ৫ শত টাকার তালাকের ফি নেন ২ হাজার টাকা। রশীদ সরবরাহ না করে দিন দুপুরে বাল্য বিবাহ। এমনকি মোটা টাকায় বাল্য বিবাহ সম্পন্ন করে নিবন্ধন করে দেন তিনি। তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ বার বার আসতে থাকে প্রশাসনের নিকট। এরই সুত্র ধরে অবশেষে বিভিন্ন রহস্য উন্মোচিত হয় প্রতারক বাশারের। অবশেষে শনিবার বাল্যবিবাহ নিবন্ধন করার অপরাধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাশারকে তার দপ্তরে তলব করেন। এসময় বাশারের অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বাল্যবিবাহ নিবন্ধন আইনের ১১ ধারায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এবিষয়ে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী জানান, কাজী আবুল বাশারের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা বিভিন্ন সময় আমার কাছে অভিযোগ আসছিল। বিষয়টি অনুসন্ধানের মাধ্যেমে তার অনেকগুলো অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। যার মধ্যে তিনি বাল্য বিবাহের সরাসরি নিবন্ধন দিয়ে থাকেন। এই অপরাধে তাকে জরিমানা কার হয়েছে। তাছাড়া এ অপরাধের বিধানে কাজীর নিবন্ধন বাতিল হওয়ার বিধান রয়েছে।
এদিকে প্রতারক আবুল বাশারের এমন অপর্কমের পর বার বার পার পাওয়া নিয়ে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি উক্ত রেজিস্টারের নিবন্ধন বাতিল করে তার হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে চাই সাধারণ মানুষ।

Tag :
রিপোর্টার সম্পর্কে

Sound Of Community

জনপ্রিয় সংবাদ

আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ

বাল্য বিবাহে নিবন্ধন দেওয়ায় অপর্কমের হোতা বাশারের নিবন্ধন বাতিলের দাবি

পোস্ট করা হয়েছে : ০৫:২২:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২

দেবহাটা প্রতিনিধি:

বাল্যবিবাহ, ভূয়া বিয়ে, জালজালিয়াতি, অতিরিক্ত অর্থ আদায়, প্রতারণা কোন কিছুতে কমতি নেই দেবহাটা নওয়াপাড়া ইউনিয়নের মুসলিম বিবাহ রেজিস্টার কাজী আবুল বাশারের। বিভিন্ন অপকর্ম করে একাধিকবার ধরা খেলেও পরিবর্তন হয়নি তার। বারবার অপরাধ করে অর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে পার পেয়ে যান এই আবুল বাশার। এমনকি বিভিন্ন পর্যয়ের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তি, জনপ্রতিবন্ধী সহ বিভিন্ন মানুষকে ম্যানেজ করা তার খুবই সহজ ব্যাপার। আর তাই নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তার এই অপকর্ম চলে আসছে বহুদিন ধরে। এই আবুল বাশার নাংলা ঘোনাপাড়া মহিলা মাদরাসার সুপার। তিনি তথ্যগোপন করে চাকুরী করতেন যুব উন্নয়নের ন্যাশনাল সার্ভিসেও। সেখানে প্রায় ২০ জন ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মীর হয়ে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া প্রত্যয়ন দেয়ার ঘটনায় বাশার সহ ওই ২০ কর্মীকে চাকরীচ্যুত করা হয় ন্যাশনাল সার্ভিস থেকে। এরপর মাদরাসার সুপারের পাশাপাশি বাশার চাকরী করছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনে। পাশাপাশি উপজেলাব্যাপী আলোচিত চিহ্নিত জামায়াত নেতা বাশার গাজীরহাট বাজারে জালিয়াতির আরেক রমরমা ব্যবসা খুলে বসেছেন ‘কাজী অফিস’ নামে। কাজী অফিসটিতে জন্ম নিবন্ধন সহ বিভিন্ন কাগজপত্র জালিয়াতি করে বাল্যবিবাহ থেকে শুরু করে রেজিস্ট্রি বিহীন ভুয়া বিয়েও অহরহ দিয়ে থাকে সে। এই কাজী অফিস নামের ঘরের ভিতরে রয়েছে গোপন কক্ষ। সেখানে রাত্রিযাপন সহ সব ধরণের সুবিধাও রয়েছে। এমনকি বিবাহের কাগজ নিতে তাকে দিতে হয় মোটা অংকের টাকা।

অনেক নারীদেরও সেখানে বার বার এনে হয়রানি করেন তিনি। এছাড়া তিনি যে মাদ্রাসা পরিচালনায় করেন সেখানে থেকে বিভিন্ন ভবে অর্থ আত্বসাৎএর অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। বাল্য বিবাহ, নারী কেলেংকারী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিল্ডিং বরাদ্ধ, এমপি’র ডিও পাওয়ানের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা, বিভিন্ন অনুদান পাওয়ার নামে দালালীতে বেশ দক্ষ তিনি। এছাড়া একই ছাত্রী দিয়ে ৫ম, ৮ম, ১০ম এর পাবলিক পরীক্ষায় বারবার অংশগ্রহণ, বডি চেঞ্জ, ভাড়া করা শিক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করান তিনি। যার প্রেক্ষিতে ২০২৯ সালের ২২ নভেম্বর ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায় মুল পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র জালিয়াতি করে ৯ ভুয়া পরীক্ষার্থীর অংশগ্রহণের ঘটনায় ধরা পরেন তিনি। পরে মামলা হলেও অজানা কারনে তিনি পার পেয়ে যান। তাছাড়া বিবাহ ও তালাকে সরকারি ফি এর বাইরে জোরপূর্বক অতিরিক্ত টাকা আদায়, ৫ শত টাকার তালাকের ফি নেন ২ হাজার টাকা। রশীদ সরবরাহ না করে দিন দুপুরে বাল্য বিবাহ। এমনকি মোটা টাকায় বাল্য বিবাহ সম্পন্ন করে নিবন্ধন করে দেন তিনি। তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ বার বার আসতে থাকে প্রশাসনের নিকট। এরই সুত্র ধরে অবশেষে বিভিন্ন রহস্য উন্মোচিত হয় প্রতারক বাশারের। অবশেষে শনিবার বাল্যবিবাহ নিবন্ধন করার অপরাধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাশারকে তার দপ্তরে তলব করেন। এসময় বাশারের অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বাল্যবিবাহ নিবন্ধন আইনের ১১ ধারায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এবিষয়ে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী জানান, কাজী আবুল বাশারের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা বিভিন্ন সময় আমার কাছে অভিযোগ আসছিল। বিষয়টি অনুসন্ধানের মাধ্যেমে তার অনেকগুলো অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। যার মধ্যে তিনি বাল্য বিবাহের সরাসরি নিবন্ধন দিয়ে থাকেন। এই অপরাধে তাকে জরিমানা কার হয়েছে। তাছাড়া এ অপরাধের বিধানে কাজীর নিবন্ধন বাতিল হওয়ার বিধান রয়েছে।
এদিকে প্রতারক আবুল বাশারের এমন অপর্কমের পর বার বার পার পাওয়া নিয়ে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি উক্ত রেজিস্টারের নিবন্ধন বাতিল করে তার হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে চাই সাধারণ মানুষ।