ঢাকা ০২:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ নয়নতারা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে দোয়েল মহিলা উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে হরিণের মাংস সহ আটক দুই সাতক্ষীরা সাস্থ্য উন্নয়ন কমিটির বর্ধিত সভায় ২৬ অক্টোবর খুলনা রোড মোড় মানব বন্ধনের সিদ্ধান্ত খুলনা প্রেসক্লাবে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি উপ-পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযান অনুষ্ঠিত  কালিগঞ্জে তরুন দলের কমিটি গঠন সভাপতি সুলতান,সম্পাদক আলতাপ পানি নিষ্কাশনে ইউএনও,র প্রাণপণ চেষ্টা অব্যহত তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন আবারও পানিবন্ধী বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ সঃ কে কটুক্তির প্রতিবাদে রূপসা বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

নবিন লেখক : আকিবুজ্জামিন এর প্রবন্ধ “ মুখস্থ বিদ্যায় পাওয়া মূল্যহীন ডিগ্রি”

  • Sound Of Community
  • পোস্ট করা হয়েছে : ০৯:৪৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১৯৪ জন পড়েছেন ।

জার্মানি আগামী দুই বছরে চার লক্ষ দক্ষ লোক নিবে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে ৪০০ জনও যেতে পারবে না কিনা সন্দেহ। ইতালি, যুক্তরাজ্যে জন্মহার নেগেটিভ। মানে মানুষ জন্মে কম, মরে বেশি। তারা আমোদ ফুর্তি করতে করতে সন্তান নেওয়ার সময় শেষ হয়ে যায়।  ঠিক সাধনায় সিদ্ধি লাভের জন্য সাধন ভঙ্গ যা মূল্যহীন,মরমি সাধক লালন বলে, সময় গেলে সাধন হবে না। তাদেরও সাধন আর হয় না।তাদের প্রচুর দক্ষ লোক দরকার। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে যেতে পারবে কয়জন? খুবই কম। জাপান এর মানুষ সহজে মরে না, বয়স বাড়তে বাড়তে বার্ধক্যে ন্যূয়ে পড়ে । কিন্তু তাদের দেখার মত কোন লোক নেই সেখানে তরুণ জনগোষ্ঠিও কম। জাপানে আগামী বছর গুলোতে নার্সিং ও হাউজ কিপার পদে প্রচুর  লোক দরকার।

আর মধ্যপ্রাচ্যের কথা না হয় বাদই দিলাম। তাদের তো বাথরুম করার পর খরচের পানিটাও অন্যের ঢেলে দিতে হয় তেলের কাঁচা টাকা বলে কথা। বাংলাদেশ থেকে যদি পাঁচ কোটি লোক দক্ষ হয়, তবে তারা ইচ্ছে করলে সবাই বিদেশে যেতে পারবে।কিন্তু সমস্যা অন্যখানে। আপনি এখন যদি দশ জন দক্ষ লোক চান, তবে এদেশেই আপনি সেটা খোঁজে পাবেন না,বিদেশ তো অনেক পরের কথা। আপনি একটা রড মিস্ত্রি চান, পাবেন না। আপনি একজন ভাল প্লাস্টার মিস্ত্রি চান, পাবেন না। ভাল মাইক্রোসফট ওয়ার্ড জানে, এক্সলে জানে,পাওয়ার পয়েন্ট জানে এমন কম্পিউটার অপারেটর চান, পাবেন না। একটা প্লাম্বার হারিকেন দিয়ে খোঁজেও পাবেন না। অথচ একজন প্লাম্বার লন্ডনে এক ঘন্টায় আয় করে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। এমনি কি ভাল রুটি বানাতে পারে এমন একজন লোকও পাইতে অনেক কষ্ট হবে। একজন ভাল কৃষিকাজ জানে এমন লোকও ধীরে ধীরে বিরল হয়ে যাচ্ছে।

একজন ভাল ইলেকট্রিশিয়ান খোঁজেন, জুতা ক্ষয় হয়ে যাবে, পাবেন না। ভাল মানের একজন ওয়েল্ডার খোঁজেন, মনে হবে বাঘের চোখ খোঁজতেছেন, পাবেন না। এমন আরো শত শত কাজ আছে যেগুলির জন্য বিদেশে হাহাকার অবস্থা। কিন্তু এদেশের খুব কমই যেতে পারে। কিন্তু আপনি একজন এমবিএ চান, ৫০০ জন আবেদন করবে, একজন স্কুলের মাষ্টার চান, আবেদন পড়বে হাজার হাজার, একজন ইঞ্জিনিয়ার চান, আবেদন পড়বে কয়েক’শ। ১৫/২০ হাজার টাকা দিয়েই এসব লোক পাবেন, কিন্তু একজন ভাল প্লাম্বার,ওয়েল্ডারকে ৩০ হাজার টাকা দিয়েও রাখতে পারবেন না। আমরা সবাই বড় বড় শিক্ষিত হতে চাই, কিন্তু দক্ষতা অর্জনের কাজগুলি শিখতে চাই না। কারণ বড় বড় ডিগ্রি নিতে শুধু মুখস্থ করলেই চলে, আর দক্ষতা অর্জন করতে কারিগরি জ্ঞান নিয়ে হাতে কলমে শিখতে হয়।

বিদেশে যেহেতু মুখস্থ বিদ্যার কোন দাম নেই, দাম হলো কাজের, তাই যে কোন একটা বিষয়ে আপনি দক্ষ হতে পারলে বিদেশ আপনাকে তেল মেরে নিয়ে যাবে। আর শত শত মাস্টার ডিগ্রি নিয়ে বস্তা বস্তা মুখস্থ করলে আপনাকে বিদেশ নিবে না, কারণ সেখানে ঠাট-বাট চলে না, চলে কাজ। তবে, অবশ্যই যে দেশে যেতে চান, সে দেশের ভাষাটা রপ্ত করতে হবে। আগামি বিশ্ব হবে, দক্ষতা যার, রাজত্ব তার। বাংলাদেশকেও সঠিক পথে হাঁটতে হবে,অন্যথায় পা পিছলে আলুর দম হতে হবে। ঠাট-বাট আর ফুটানির দিন হবে শেষ। ২০৩০ সালে এদেশের মোট জনসংখ্যার ৩০% যুব শক্তির দেশ হবে এটা একটা মহাশক্তি আমরা কর্মমুখী শিক্ষায় দক্ষতা অর্জন করে বৈদেশিক অর্থ উপার্জন করে দেশকে উন্নত করতে পারি। পামাপাশি নিজের পরিবারের তথা এলাকার উন্নয়ন ঘটাতে ভূমিকা রাখতে পারাটাই স্বার্থক হবে জন্ম। দেশ মাতৃকার ঋণ কিছুটা হলেও পরিশেধ করার সুযোগ আসছে।

নবিন লেখক : আকিবুজ্জামিন, প্রবান্ধিক ও সাংবাদিক

Tag :
রিপোর্টার সম্পর্কে

Sound Of Community

জনপ্রিয় সংবাদ

আসুন সবাই মিলে আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করি নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ

নবিন লেখক : আকিবুজ্জামিন এর প্রবন্ধ “ মুখস্থ বিদ্যায় পাওয়া মূল্যহীন ডিগ্রি”

পোস্ট করা হয়েছে : ০৯:৪৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২

জার্মানি আগামী দুই বছরে চার লক্ষ দক্ষ লোক নিবে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে ৪০০ জনও যেতে পারবে না কিনা সন্দেহ। ইতালি, যুক্তরাজ্যে জন্মহার নেগেটিভ। মানে মানুষ জন্মে কম, মরে বেশি। তারা আমোদ ফুর্তি করতে করতে সন্তান নেওয়ার সময় শেষ হয়ে যায়।  ঠিক সাধনায় সিদ্ধি লাভের জন্য সাধন ভঙ্গ যা মূল্যহীন,মরমি সাধক লালন বলে, সময় গেলে সাধন হবে না। তাদেরও সাধন আর হয় না।তাদের প্রচুর দক্ষ লোক দরকার। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে যেতে পারবে কয়জন? খুবই কম। জাপান এর মানুষ সহজে মরে না, বয়স বাড়তে বাড়তে বার্ধক্যে ন্যূয়ে পড়ে । কিন্তু তাদের দেখার মত কোন লোক নেই সেখানে তরুণ জনগোষ্ঠিও কম। জাপানে আগামী বছর গুলোতে নার্সিং ও হাউজ কিপার পদে প্রচুর  লোক দরকার।

আর মধ্যপ্রাচ্যের কথা না হয় বাদই দিলাম। তাদের তো বাথরুম করার পর খরচের পানিটাও অন্যের ঢেলে দিতে হয় তেলের কাঁচা টাকা বলে কথা। বাংলাদেশ থেকে যদি পাঁচ কোটি লোক দক্ষ হয়, তবে তারা ইচ্ছে করলে সবাই বিদেশে যেতে পারবে।কিন্তু সমস্যা অন্যখানে। আপনি এখন যদি দশ জন দক্ষ লোক চান, তবে এদেশেই আপনি সেটা খোঁজে পাবেন না,বিদেশ তো অনেক পরের কথা। আপনি একটা রড মিস্ত্রি চান, পাবেন না। আপনি একজন ভাল প্লাস্টার মিস্ত্রি চান, পাবেন না। ভাল মাইক্রোসফট ওয়ার্ড জানে, এক্সলে জানে,পাওয়ার পয়েন্ট জানে এমন কম্পিউটার অপারেটর চান, পাবেন না। একটা প্লাম্বার হারিকেন দিয়ে খোঁজেও পাবেন না। অথচ একজন প্লাম্বার লন্ডনে এক ঘন্টায় আয় করে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। এমনি কি ভাল রুটি বানাতে পারে এমন একজন লোকও পাইতে অনেক কষ্ট হবে। একজন ভাল কৃষিকাজ জানে এমন লোকও ধীরে ধীরে বিরল হয়ে যাচ্ছে।

একজন ভাল ইলেকট্রিশিয়ান খোঁজেন, জুতা ক্ষয় হয়ে যাবে, পাবেন না। ভাল মানের একজন ওয়েল্ডার খোঁজেন, মনে হবে বাঘের চোখ খোঁজতেছেন, পাবেন না। এমন আরো শত শত কাজ আছে যেগুলির জন্য বিদেশে হাহাকার অবস্থা। কিন্তু এদেশের খুব কমই যেতে পারে। কিন্তু আপনি একজন এমবিএ চান, ৫০০ জন আবেদন করবে, একজন স্কুলের মাষ্টার চান, আবেদন পড়বে হাজার হাজার, একজন ইঞ্জিনিয়ার চান, আবেদন পড়বে কয়েক’শ। ১৫/২০ হাজার টাকা দিয়েই এসব লোক পাবেন, কিন্তু একজন ভাল প্লাম্বার,ওয়েল্ডারকে ৩০ হাজার টাকা দিয়েও রাখতে পারবেন না। আমরা সবাই বড় বড় শিক্ষিত হতে চাই, কিন্তু দক্ষতা অর্জনের কাজগুলি শিখতে চাই না। কারণ বড় বড় ডিগ্রি নিতে শুধু মুখস্থ করলেই চলে, আর দক্ষতা অর্জন করতে কারিগরি জ্ঞান নিয়ে হাতে কলমে শিখতে হয়।

বিদেশে যেহেতু মুখস্থ বিদ্যার কোন দাম নেই, দাম হলো কাজের, তাই যে কোন একটা বিষয়ে আপনি দক্ষ হতে পারলে বিদেশ আপনাকে তেল মেরে নিয়ে যাবে। আর শত শত মাস্টার ডিগ্রি নিয়ে বস্তা বস্তা মুখস্থ করলে আপনাকে বিদেশ নিবে না, কারণ সেখানে ঠাট-বাট চলে না, চলে কাজ। তবে, অবশ্যই যে দেশে যেতে চান, সে দেশের ভাষাটা রপ্ত করতে হবে। আগামি বিশ্ব হবে, দক্ষতা যার, রাজত্ব তার। বাংলাদেশকেও সঠিক পথে হাঁটতে হবে,অন্যথায় পা পিছলে আলুর দম হতে হবে। ঠাট-বাট আর ফুটানির দিন হবে শেষ। ২০৩০ সালে এদেশের মোট জনসংখ্যার ৩০% যুব শক্তির দেশ হবে এটা একটা মহাশক্তি আমরা কর্মমুখী শিক্ষায় দক্ষতা অর্জন করে বৈদেশিক অর্থ উপার্জন করে দেশকে উন্নত করতে পারি। পামাপাশি নিজের পরিবারের তথা এলাকার উন্নয়ন ঘটাতে ভূমিকা রাখতে পারাটাই স্বার্থক হবে জন্ম। দেশ মাতৃকার ঋণ কিছুটা হলেও পরিশেধ করার সুযোগ আসছে।

নবিন লেখক : আকিবুজ্জামিন, প্রবান্ধিক ও সাংবাদিক