শহিদুল্লাহ আল আজাদ. স্টাফ রিপোর্টার
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে বৈষম্যমুক্ত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ বেতারের সর্বস্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী, নিজস্ব শিল্পী এবং কলাকুশলীদের চাকুরীতে পদোন্নতি বঞ্চনাসহ নানা বৈষম্য নিরসনের দাবিতে ১৯ শে আগষ্ট সোমবার সকাল ১১টায় বাংলাদেশ বেতার, খুলনা কেন্দ্রের মূল ফটকের সামনে সকলের অংশগ্রহণে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন কর্মসূচিতে বেতারের সর্বস্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী, নিজস্ব শিল্পী এবং কলাকুশলীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধনে তারা বিভিন্ন ব্যানার এবং প্লাকার্ডের মাধ্যমে বৈষম্য নিরসনে তাদের দাবিসমূহ তুলে ধরেন।
বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ স্বপ্নযাত্রায় গর্বিত অংশীদার হতে বেতারের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের দাবিসমূহ হলো
১। বাংলাদেশ বেতারের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি বঞ্চনার অবসান করা
২। ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতিসহ উপসচিব পদে ন্যায্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি নিশ্চিত করা
৩। একীভূত বিসিএস (তথ্য) ক্যাডার বাস্তবায়ন করা
৪। বাংলাদেশ বেতার হতে নিজস্ব মহাপরিচালক নিয়োগ করা
৫। নন-ক্যাডার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য প্রস্তাবিত নিয়োগবিধি বাতিলপূর্বক পুনঃসংশোধন করা
৬। বাংলাদেশ বেতারের নিজস্ব শিল্পীদের পদ স্থায়ীকরণ ও পদোন্নতির বাবস্থা গ্রহণ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বেতারের ৯ম, ১৩ তম এবং ১৫ তম বিসিএস কর্মকর্তারা এখনো ৪র্থ গ্রেডে আছেন। এছাড়াও, ২৪ তম থেকে ২৭ তম বিসিএস এর কর্মকর্তারা ৬ষ্ঠ গ্রেডে যারা রয়েছেন তাদের অধিকাংশ ১৪ বছরের অধিক এবং ২৮ তম থেকে ৩৫ তম বিসিএস- এর নবম গ্রেডের অধিকাংশ কর্মকর্তা প্রায় ৮ থেকে ১৪ বছর ধরে পদোন্নতি বঞ্চিত রয়েছেন।
বিসিএস তথ্য ক্যাডারের চারটি সাব-ক্যাডার রয়েছে। উপসচিব পদে আবেদন প্রেরণের ক্ষেত্রে এ চারটি সাব-ক্যাডারের মধ্যে একটি সাব-ক্যাডার গণযোগাযোগ/পিআইডি থেকে ১৩৬টি ভিত্তি পদের বিপরীতে প্রতি বছর ১০টি আবেদন গ্রহণ করা হয় অথচ নিদারুণ বৈষম্যের নজির স্থাপন করে বাংলাদেশ বেতারের বিসিএস তথ্য ক্যাডারের ৩টি সাব-ক্যাডার থেকে ৩২৩টি ভিত্তি পদের বিপরীতে অযৌক্তিকভাবে মাত্র ১০টি আবেদন গ্রহণ করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুথানের মাধ্যমে রাষ্ট্র মেরামতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য জাতীয় গণমাধ্যম হিসেবে বাংলাদেশ বেতারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বিদ্যমান বাস্তবতায় বাংলাদেশ বেতারের চলমান বৈষম্য নিরসন করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি করা হলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মূল যে লক্ষ্য, তা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ বেতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশ বেতারের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দের ন্যায্য দাবিসমূহ যথাশীঘ্রই পূরণ করবে বলে মানববন্ধনে উপস্থিত সকলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।